• শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪২৯

শোবিজ

তেঁতুলিয়ার ইত্যাদি শুক্রবার

  • বিনোদন প্রতিবেদক
  • প্রকাশিত ২৬ জানুয়ারি ২০২০

আমাদের ইতিহাস, ঐতিহ্য, সভ্যতা, সংস্কৃতি, প্রত্নতাত্ত্বিক নিদর্শন, আকর্ষণীয় পর্যটন কেন্দ্র এবং মুক্তিযুদ্ধের গৌরবময় স্থানসমূহে গিয়ে ইত্যাদির ধারণের ধারাবাহিকতায় এবারের পর্ব ধারণ করা হয়েছে হিমালয়ের পাদদেশে অবস্থিত আঁকাবাঁকা সীমান্ত পরিবেষ্টিত বাংলাদেশের সর্ব উত্তরের জেলা পঞ্চগড়ের তেঁতুলিয়ায়। গত ১৭ জানুয়ারি মুক্তিযুদ্ধের গৌরবদীপ্ত উপজেলা তেঁতুলিয়ার, তেঁতুলিয়া সরকারি পাইলট মডেল উচ্চবিদ্যালয়ের ঐতিহাসিক মাঠে ধারণ করা হয় এবারের ইত্যাদি। মুক্তিযুদ্ধের সময় মুক্তিযোদ্ধাদের বাছাই, প্রশিক্ষণ, গোলাবারুদ সংরক্ষণ ও বিতরণ করা হয়েছিল এই মাঠ থেকেই। নদী ও ভূমি থেকে পাথর উত্তোলন, সমতল ভূমিতে চা বাগান, মুক্তিযুদ্ধের গৌরবগাথা এবং পঞ্চগড়ের প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের সঙ্গে সাদৃশ্য রেখে নির্মাণ করা আলোকিত মঞ্চের সামনে লক্ষাধিক দর্শকের উপস্থিতিতে ধারণ করা হয়েছে এবারের ইত্যাদি। ধারণ উপলক্ষে মুক্তিযুদ্ধকালীন দেশের অন্যতম প্রধান মুক্তাঞ্চল তেঁতুলিয়ায় ছিল উৎসবের আমেজ। অনুষ্ঠানস্থলে তিল ধারণের ঠাঁই ছিল না। বিকালের মধ্যেই বিদ্যালয়ের মাঠ কানায় কানায় পূর্ণ হয়ে যাওয়ায় হাজারো মানুষ আশপাশের গাছ, স্কুলের ছাদ ও রাস্তার পাশে দাঁড়িয়ে মন্ত্রমুগ্ধের মতো উপভোগ করেছেন ইত্যাদির নান্দনিক সব পর্ব। ইত্যাদির এই ধারণ অনুষ্ঠান চলে বিকাল ৫টা থেকে রাত ১০টা পর্যন্ত।

পঞ্চগড়ের ইতিহাস, ঐতিহ্যের পাশাপাশি এবার রয়েছে পর্যটকদের জন্য আকর্ষণীয় এবং মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতিবিজড়িত স্থানগুলোর ওপর তথ্যভিত্তিক প্রতিবেদন। দেশের একমাত্র পাথরের জাদুঘর-রকস্ মিউজিয়াম এবং পঞ্চগড়ের সমতলে চা চাষের ওপর রয়েছে দুটি অনুসন্ধানী প্রতিবেদন। স্নায়ুবিক বিকাশগত সমস্যায় আক্রান্তদের ওপর রয়েছে একটি মানবিক ও উদ্বুদ্ধকরণ প্রতিবেদন। রয়েছে ঠাকুরগাঁওয়ের নবম শ্রেণির মেধাবী ছাত্রী শিক্ষানুরাগী সুখী আক্তারের জীবন সংগ্রামের ওপর একটি হূদয়স্পর্শী প্রতিবেদন। বিদেশি প্রতিবেদন পর্বে রয়েছে বার্সেলোনায় পর্যটকদের জন্য আকর্ষণীয় স্থান মিউজিয়াম অব ইলুউশনের ওপর একটি সচিত্র প্রতিবেদন।

পঞ্চগড় জেলা ও তেঁতুলিয়ার উল্লেখযোগ্য কিছু বিষয় নিয়ে মোহাম্মদ রফিকউজ্জামানের কথায়, হানিফ সংকেতের সুর ও মেহেদীর সংগীতায়োজনে একটি গানের সঙ্গে নৃত্য পরিবেশন করেছেন পঞ্চগড় ও তেঁতুলিয়ার দেড় শতাধিক নৃত্যশিল্পী। নাচের গানে কণ্ঠ দিয়েছেন কমল, তানজিনা রুমা, শুক্লা, কৃষ্ণা ও রিয়াদ, নৃত্য পরিচালনা করেছেন গাথী গাঙ্গুলী ও তিলোত্তমা দাস।

দর্শক পর্বের নিয়ম অনুযায়ী ধারণস্থান পঞ্চগড়কে ঘিরে করা প্রশ্নোত্তরের মাধ্যমে উপস্থিত দর্শকের মাঝখান থেকে ৪ জন দর্শক নির্বাচন করা হয়। দ্বিতীয় পর্বে নির্বাচিত দর্শকরা ‘শীতে মানবিকতার নামে প্রচার কাঙাল মানুষ’দের নিয়ে রচিত একটি নাট্যাংশে অভিনয় করেন। যা ছিল বেশ উপভোগ্য।

রয়েছে জাদুকর ম্যাজিক রাজিকের ব্যতিক্রমধর্মী মনস্তাত্ত্বিক জাদু। রাজিক শীতবিষয়ক বিভিন্ন বিষয় নিয়ে জাদুটি পরিবেশন করেন। পেশায় প্রকৌশলী ও আইটি বিষয়ে গ্র্যাজুয়েট রাজিক দীর্ঘদিন বিদেশি টেলিভিশনে জাদু প্রদর্শন করলেও দেশের কোনো টেলিভিশন পর্দায় এই প্রথম জাদু দেখান রাজিক।

নিয়মিত পর্বসহ এবারো রয়েছে বিভিন্ন সমসাময়িক ঘটনা নিয়ে বেশ কিছু সরস অথচ তীক্ষ নাট্যাংশ। শেকড়ের সন্ধানে, প্রলোভন প্রশমন ও সুশিক্ষা, অতিরঞ্জিত উৎসাহ ও এর কুফল, রাশিফলের রহস্য, সাংঘাতিক সাংবাদিক, বিয়ে বৃত্তান্তসহ বিভিন্ন বিষয়ের ওপর রয়েছে বেশ কয়েকটি নাট্যাংশ। বরাবরের মতো এবারো ইত্যাদির শিল্পনির্দেশনা ও মঞ্চ পরিকল্পনায় ছিলেন ইত্যাদির নিয়মিত শিল্পনির্দেশক মুকিমুল আনোয়ার মুকিম।

এবারের ইত্যাদিতে উল্লেখযোগ্য শিল্পীরা হলেন মাসুদ আলী খান, এস এম মহসীন, সোলায়মান খোকা, জিয়াউল হাসান কিসলু, কে এস ফিরোজ, আবদুল কাদের, শবনম পারভীন, আফজাল শরীফ, সুভাশিষ ভৌমিক, জিল্লুর রহমান, কাজী আসাদ, বিলু বড়ুয়া, আমিন আজাদ, নজরুল ইসলাম, নিপু, তারিক স্বপন, জামিল হোসেন, নিসা, রেহান আবিদ, আনোয়ার শাহী, জাহিদ চৌধুরী, সজল, সাজ্জাদ সাজু, সঞ্জয় রাজ, ইমতিয়াজ ফাহিম, হাশিম মাসুদ, মতিউর রহমান, রিমু, ইমিলা, মনজুর আলম, তন্নি গ্লোরিয়া, রিনা, শারমিন বৃষ্টি, ইরা, কাইফসহ আরো অনেকে। পরিচালকের সহকারী হিসেবে ছিলেন যথারীতি রানা ও মামুন।

ইত্যাদির এই পঞ্চগড়ের পর্বটি একযোগে বিটিভি ও বিটিভি ওয়ার্ল্ডে প্রচারিত হবে আগামী শুক্রবার রাত ৮টার বাংলা সংবাদের পর। ইত্যাদির রচনা, পরিচালনা ও উপস্থাপনা করেছেন হানিফ সংকেত।

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads