দেশের প্রতিথযশা নজরুল সংগীতশিল্পী ফেরদৌস আরা ছোটবেলায় যখন নজরুলসংগীতে বিশেষভাবে পুরস্কৃত হয়ে বই পেতেন, সেই বইতে তার বাবা এ এইচ এম আব্দুল হাই ‘সুরসপ্তক’ শব্দটি লিখে রাখতেন। তাই বাবা মারা যাওয়ার পর আজ থেকে ২০ বছর আগে যখন সংগীতবিষয়ক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান গড়ে তোলেন, তখন বাবার লেখা সুরসপ্তক শব্দটি নিয়ে এই নামেই প্রতিষ্ঠানের যাত্রা শুরু করেন।
আগামী ১৪ মার্চ, ফেরদৌস আরার সংগীতবিষয়ক প্রতিষ্ঠান সুরসপ্তক ২০ বছর পূর্ণ করতে যাচ্ছে। ২০ বছর পূর্তিতে প্রতিষ্ঠানটির প্রতিষ্ঠাতা, পরিচালক ও অধ্যক্ষ ফেরদৌস আরা বিশেষ উদ্যোগ গ্রহণ করেছেন। যার মধ্যে রয়েছে সংগীতাঙ্গনের দুজন জীবন্ত কিংবদন্তি সংগীতশিল্পীকে শ্রদ্ধাঞ্জলি সম্মাননা প্রদান, প্রয়াত বরেণ্য সংগীতশিল্পী সুধীন দাস, সোহরাব হোসেন, খালিদ হোসেন, ফিরোজা বেগম, নীলুফার ইয়াসমিন ও ফেরদৌস আরার চাচা সুরসপ্তকের উপদেষ্টা এ বি এম আব্দুর শাকুরের পরিবারের সদস্যদের সম্মাননা স্মারক প্রদান, সংগীতশিল্পী শাহীন সামাদ, খায়রুল আনাম শাকিল, নাশিদ কামালকে সম্মাননা স্মারক প্রদান, এই প্রজন্মের শিল্পী দিলশাদ নাহার কনা, ইউসুফ আহমেদ খানকে সম্মাননা প্রদান করা হবে।
সম্মাননা জানানো হবে সুরসপ্তকের শিক্ষকমণ্ডলীদের। ফেরদৌস আরা আরো জানান, দেশ-বিদেশের বরেণ্য সংগীতশিল্পীরা গান গাইবেন অনুষ্ঠানে। ১৪ মার্চ ঠিক বিকাল পাঁচটায় জাতীয় জাদুঘর মিলনায়তনে শুরু হবে সুরসপ্তকের ২০ বছর পূর্তি অনুষ্ঠান। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে কে থাকবেন, তা এখনো চূড়ান্ত হয়নি। চ্যানেল আইয়ের অনুষ্ঠান বিভাগের জেনারেল ম্যানেজার আমীরুল ইসলাম ও সাংবাদিক অভি মঈনুদ্দীন ফেরদৌস আরাকে সার্বিকভাবে সহযোগিতা করছেন অনুষ্ঠানটি সফলভাবে সম্পন্ন করার জন্য। ফেরদৌস আরা বলেন, ‘দেশের বাইরে থেকে সেসব শিল্পীদেরই আমন্ত্রণ জানানো হচ্ছে, যারা সচেতনভাবে আমাদের জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের শুদ্ধ বাণী প্রমিত সুরে গেয়ে থাকেন।’
ফেরদৌস আরা আরো বলেন, ‘দেখতে দেখতে সুরসপ্তক আজ ২০ বছর পূর্ণ করতে যাচ্ছে। আজ বাবা বেঁচে থাকলে হয়তো সবচেয়ে বেশি খুশি হতেন। সুরসপ্তকের পথচলার প্রতিটি পদক্ষেপে, সংগ্রামে বাবাকে অনুপ্রেরণা হিসেবে নিয়েই এগিয়ে চলেছি। আর পেয়েছি কিছু মানুষের সহযোগিতা। যে কারণে সুরসপ্তক আজ এই পর্যায়ে আসতে পেরেছে। ১৪ মার্চ ইনশা আল্লাহ ভালোভাবে সবকিছু সম্পন্ন করতে পারব। এবারের অনুষ্ঠান সফল করতে, যারা আমার পাশে আছেন, তাদের প্রতি আন্তরিক ধন্যবাদ-কৃতজ্ঞতা।’
ফেরদৌস আরা জানান, তার বাবা পেশায় ইঞ্জিনিয়ার হলেও মনেপ্রাণে ছিলেন উচ্চাঙ্গসংগীতবিশারদ। এদিকে আগামীকাল ২৯ ফেব্রুয়ারি রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের হিসাববিজ্ঞান বিভাগ আয়োজিত বিশেষ অনুষ্ঠানে সংগীত পরিবেশন করবেন ফেরদৌস আরা। এরপর ২ মার্চ রাজধানীর অফিসার্স ক্লাবে দুপুরে একটি অনুষ্ঠানে অংশ নেবেন তিনি।