• বৃহস্পতিবার, ১৮ এপ্রিল ২০২৪, ৫ বৈশাখ ১৪২৯

শোবিজ

চয়নিকা চৌধুরীর ‘অনেকদিন পর’

  • বিনোদন প্রতিবেদক
  • প্রকাশিত ২৮ সেপ্টেম্বর ২০২০

নাট্য নির্মাতা হিসেবে ক্যারিয়ারে ২০তম বছরে পা দিয়েছেন নির্মাতা চয়নিকা চৌধুরী। দীর্ঘ এ ক্যারিয়ারে মূলত টেলিভিশনে প্রেমের নাটক বানিয়ে পরিচালক হিসেবে দারুণ জনপ্রিয়তা পান তিনি। চয়নিকা চৌধুরী জানান, ২০ বছরের ক্যারিয়ারে তার নির্মিত ৪০৪টি নাটক প্রচার হয়েছে।

এবার নির্মাণ করলেন ক্যারিয়ারের ৪০৫তম নাটক। নাটকটির নাম ‘অনেকদিন পর’। করোনা পরিস্থিতি মাথায় নিয়েই নাটকটির শুটিং করলেন তিনি।

ইফফাত আরেফিন মাহমুদের রচনায় নাটকটিণে প্রধান চরিত্রে অভিনয় করেছেন আবুল হায়াত, তারিন জাহান ও আহসান হাবিব নাসিম। আরো অভিনয় করেছেন মিলি বাশার। গত ২৪ ও ২৫ সেপ্টম্বর মিরপুরের ডিওএসএসে শুটিং হয় নাটকটির।

চয়নিকা চৌধুরী বলেন, ‘করোনাভাইরাস মাথায় নিয়েই নাটকটির শুটিং করলাম। তবে আমরা পুরোপুরি স্বাস্থ্যবিধি মেনেই শুটিং করেছি। বরাবরের মতো আমার ৪০৫তম নাটকেও দর্শকরা গল্পের ভিন্নতা পাবেন।’

নাকটি প্রযোজনা করেছেন আনসারুল আলম লিংকন। চয়নিকা চৌধুরী জানান, শিগগিরই নাটকটি কোনো বেসরকারি টিভিতে প্রচার হবে।

এদিকে চয়নিকা চৌধুরী পরিচালিত প্রথম ছবি ‘বিশ্বসুন্দরী’ মুক্তির অপেক্ষায় আছে। প্রেক্ষাগৃহ খোলার পর পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলেই ছবিটি মুক্তি দেয়া হবে বলে জানান তিনি। এ ছবিটি প্রধান দুটি চরিত্রে অভিনয় করেছেন পরীমনি ও সিয়াম আহমেদ।

নিজের কাজ ও আজকের অবস্থান নিয়ে মূল্যায়ন করণে গিয়ে নির্মাতা চয়নিকা চৌধুরী বলেন, ‘নির্মাতার কখনো লিঙ্গ হয় না। আমি অনেক খুশি, কারণ মেয়ে হয়ে এই পৃথিবীতে আমি জন্মগ্রহণ করেছি। নারী নির্মাতা হয়ে এই পর্যায়ে পৌঁছাতে অনেক চড়াই-উতরাই পাড়ি দিতে হয়েছে আমাকে। সহজভাবে এই পথে হাঁটা কঠিন। আমি অনেক ভাগ্যবান, কারণ চলার পথে অনেক ভালো মানুষ পেয়েছি।’ নিজের কাজ ও আজকের অবস্থান নিয়ে মূল্যায়ন করতে গিয়ে এভাবেই মনের ভাব প্রকাশ করেন এ সময়ের জনপ্রিয় নির্মাতা চয়নিকা চৌধুরী।

১৯৯৮ সালে মাহফুজ আহমেদের বাণীচিত্র থেকে ‘বোধ’ নাটকটি নির্মাণ করেন ফারিয়া হোসেন। মাহফুজ আহমেদের অনুপ্রেরণায় নাটকটি লেখেন চয়নিকা চৌধুরী। নাটকটিতে অভিনয় করেছিলেন মাহফুজ আহমেদ ও শমী কায়সার।

নাটক পরিচালনা করবেন-এটা কখনো ভাবেননি চয়নিকা চৌধুরী। নাটক পরিচালনার জন্য প্রথম তাকে প্রস্তাব দেন লাইট অ্যান্ড শ্যাডোর কর্ণধার মুজিবর রহমান।

চয়নিকা চৌধুরী বলেন, ‘আমি খুব আবেগপ্রবণ মানুষ। আমার আবেগ আমাকে অনেক কাজ করিয়েছে। কখনো ভুল কাজ করেছি আবার কখনো শুদ্ধ কাজ করেছি। মুজিব যখন নাটকের প্রস্তাব দিলেন, তখন অনেক বিস্মিত হয়েছি। তারপর তার অনুপ্রেরণায় ২০০১ সালের সেপ্টেম্বর মাসে ‘শেষ বেলায়’ নাটকটি পরিচালনা করি। নাটকটিতে বাবা ও মেয়ের গল্প ছিল। অভিনয় করেছিলেন আবুল হায়াত, ঈশিতা ও জয়া আহসান। কিন্তু একজন ছেলে অভিনেতা পাওয়া আমার জন্য কঠিন হয়ে গেল। কেন জানি কেউ আমাকে শিডিউল দেয়নি। পরে নাটকটিতে সতীর্থ রহমান ও সিজার অভিনয় করেছিলেন।’

প্রথম নাটক নির্মাণের অভিজ্ঞতা কেমন ছিল জিজ্ঞাসা করতে চয়নিকা চৌধুরী বললেন, ‘আমার স্বামী অরুণ চৌধুরী তখন অনেক তুখোড় পরিচালক। একটু ভয়ে ছিলাম যে নাটক বানানোর পর অরুণ ও অন্য কেউ পছন্দ করবে কি না। আমার নাটকের প্রথম ক্যামেরাম্যান ছিলেন হারুন আহমেদ খান। আমরা তাকে হারুন আংকেল ডাকতাম। আমি প্রতিষ্ঠিত কোনো সহকারী পরিচালকও নেইনি। একটা মেয়ে কাজ করেছিল। মেয়েটির নাম ইভা। ইভা একসময় অভিনয় করত। ইউনিটের সবাই অনেক সাহায্য করেছিল। সবার সহযোগিতায় ভালোভাবে কাজটি শেষ করেছিলাম।

কিন্তু এই নাটক নির্ধারিত সময়ে বিটিভিতে প্রচার হয়নি। আমার একটু মন খারাপ হলো। পরে আমার বোন তমালিকা বাসায় এসে বলল, একটা নাটক বানাবি সেটা পরের মাসে বিটিভিতে প্রচার হবে। পরে আমার বাসার বুয়ার গল্প নিয়ে ‘এক জীবনে’ নাটকটি নির্মাণ করি। অ্যাড মিডিয়ার জায়েদান রাব্বী নাটকটি নির্মাণের সুযোগ দিয়েছিলেন। নাটকটিতে অভিনয় করেন শাহেদ, তমালিকা, তাজিন এবং অরুণাভ অঞ্জনসহ আরো অনেকে। ২০০১ সালে ২৮ অক্টোবর নাটকটি বিটিভিতে প্রচার হয়। প্রচারের পর আমি অনেক সাড়া পেয়েছি। রাত ২টা পর্যন্ত সবার ফোন এসেছিল। বিপাশার ফোন পেয়ে অনেক খুশি হয়েছিলাম। ও অনেক খুঁতখুঁতে। যখন ও বলল, ‘নাটকের স্টোরি, প্রোডাকশন, মেকিং দারুণ হয়েছে’, তখন মনে একটু আত্মবিশ্বাস ফিরে পেয়েছি।’

এখন কোনো কিছু ভাইরাল হওয়া মানে হিট। যদিও চয়নিকা চৌধুরী এ বিষয়ে একমত নন। বলেন, ‘আমি যখন থেকে নাটক বানাই তখন ভাইরাল জিনিসটা ছিল না। এখন তো সবকিছুতে ভিউ আর ভাইরাল খোঁজা হয়। আমি ভাইরাল হয়ে চয়নিকা চৌধুরী হইনি। নিজের যোগ্যতায় কাজ করে এসেছি। পাশে কিছু মানুষের উৎসাহ, অনুপ্রেরণা আর ভালোবাসা পেয়েছি। আমি মেধাবী নির্মাতা নই। তবে আমি অনেক পরিশ্রমী। এটা আমি সব সময় বলি। ভালোবেসে কাজ করেছি এবং পরিশ্রম আজকে আমাকে এ অবস্থানে নিয়ে এসেছে, জনপ্রিয়তা এনে দিয়েছে।’

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads