• শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪২৮

শোবিজ

তারা দুইজন

  • বিনোদন প্রতিবেদক
  • প্রকাশিত ১২ অক্টোবর ২০২০

সরকারি অনুদানপ্রাপ্ত ও কবরী পরিচালিত ‘এই তুমি সেই তুমি’ চলচ্চিত্রে অভিনয় করছেন অভিনেতা ও নাট্যনির্দেশক মোহাম্মদ বারী। চলচ্চিত্রে কবরীর স্বামীর চরিত্রে দেখা যাবে বারীকে। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকীতে চলচ্চিত্রের দৃশ্যধারণ শুরুর পর ছয় মাসের বিরতি ছিল। সেপ্টেম্বরের শেষের দিকে শুরু হওয়ায় শুটিংয়ে অংশ নেন কবরী, মোহাম্মদ বারী।

বারী বলেন, ‘থিয়েটার, টেলিভিশন নাটক, সিনেমা-তিনটা তিন রকমের মাধ্যম। মঞ্চে এবং নাটকে অনেক কাজ করা হলেও সিনেমায় খুব বেশি কাজ করা হয়নি। নানা কারণেই হয়ে ওঠেনি। বাংলা চলচ্চিত্রের জনপ্রিয় অভিনেত্রী কবরীর সঙ্গে অভিনয় করাটা দারুণ উপভোগ করছি।’

সিনেমার গল্পে দুটি সময়কে তুলে ধরা হচ্ছে। মুক্তিযুদ্ধের সময়কার সঙ্গে বর্তমান সময়কে প্রেমের আদলে তুলে ধরা হচ্ছে।

এই ছবির মাধ্যমে ঢাকাই চলচ্চিত্রে নতুন দুই মুখ উপহার দিচ্ছেন কবরী। তারা হচ্ছেন রিয়াদ রায়হান ও নিশাত নাওয়ার সালওয়া। ছোট পর্দার উঠতি নায়ক রিয়াদ রায়হান। অন্যদিকে, মিস ওয়ার্ল্ড বাংলাদেশ ২০১৮-এর চূড়ান্ত প্রতিযোগিতায় প্রথম রানারআপ হয়েছিলেন নিশাত নাওয়ার সালওয়া। এই সিনেমার মাধ্যমে প্রথমবার সংগীত পরিচালনা করছেন সংগীতশিল্পী সাবিনা ইয়াসমিন।

মোহাম্মদ বারী এর আগে আবু সাইয়িদ পরিচালিত ‘নিরন্তর’, বেলাল আহমেদের ‘ভালোবাসাবোই তো’, রুবাইয়াৎ হোসেনের ‘মেড ইন বাংলাদেশ’, ফাখরুল আরেফীন খান পরিচালিত ‘গণ্ডি’ চলচ্চিত্রে অভিনয় করছেন।

মঞ্চে একাধারে নাট্যকার, অভিনেতা ও নাট্যনির্দেশক হিসেবেও কাজ করছেন তিনি। সাংগঠনিকভাবে বাংলাদেশ পথ নাটক পরিষদের সহসভাপতির দায়িত্ব পালনের পাশাপাশি অনুস্বর নাট্যদলের প্রধান হিসেবে দায়িত্বে রয়েছেন। মঞ্চের পাশাপাশি টেলিভিশনের পর্দায়ও নিয়মিত দেখা যায় তাকে।

১৯৬৪ সালে সুভাষ দত্তের ‘সুতরাং’ ছবির মাধ্যমে অভিনয়জীবন শুরু কবরীর। ‘সুতরাং’ মুক্তির পর ছবি ও ছবির নায়িকা দেশ-বিদেশে বেশ প্রশংসিত হন। এর পর জনপ্রিয় নায়িকা হিসেবে চলচ্চিত্র দুনিয়ায় কবরীর শুধুই দুর্বার গতিতে এগিয়ে চলা। একে একে কাজ করেন ‘সুতরাং’ (১৯৬৪), ‘জলছবি’ (১৯৬৫), ‘বাহানা’ (১৯৬৮), ‘আবির্ভাব’ (১৯৬৮), ‘যে আগুনে পুড়ি’ (১৯৬৮), ‘দ্বীপ নেভে নাই’ (১৯৭০), ‘দর্পচূর্ণ’ (১৯৭০), ‘ক খ গ ঘ ঙ’ (১৯৭০), ‘বিনিময়’ (১৯৭০), ‘তিতাস একটি নদীর নাম’ (১৯৭৩), ‘রংবাজ’ (১৯৭৩), ‘মাসুদ রানা’ (১৯৭৪), ‘সুজন সখী’ (১৯৭৫), ‘সাধারণ মেয়ে’ (১৯৭৫), ‘গুন্ডা’ (১৯৭৬), ‘নীল আকাশের নীচে’ (১৯৭৬), ‘ময়নামতি’ (১৯৭৬), ‘আগন্তুক’ (১৯৭৬), ‘আঁকাবাঁকা’ (১৯৭৬), ‘কত যে মিনতি’ (১৯৭৬), ‘অধিকার’ (১৯৭৬), ‘স্মৃতিটুকু থাক’ (১৯৭৬), ‘সারেং বৌ’ (১৯৭৮), ‘বধূ বিদায়’ (১৯৭৮), ‘আরাধনা’ (১৯৭৯), ‘বেঈমান’ (১৯৭৯), ‘অবাক পৃথিবী’ (১৯৭৯), ‘কাঁচ কাটা হীরা’ (১৯৭৯), ‘উপহার’ (১৯৭৯), ‘মতিমহল’ (১৯৭৯), ‘অরুণ বরুণ কিরণমালা’ (১৯৭৯), ‘সাত ভাই চম্পা’ (১৯৭৯), ‘হীরামন’ (১৯৭৯), ‘দেবদাস’ (১৯৭৯), ‘দুই জীবন’ (১৯৮৭) প্রভৃতি।

একদিকে দক্ষ অভিনয়, অন্যদিকে মনকাড়া হাসি দিয়ে সহজেই তিনি দর্শক-হূদয় হরণ করেন। তাই দর্শক তাকে ‘মিষ্টি মেয়ে’ আখ্যা দিতে ভোলেননি। ১৯৭৮ সালে শহীদুল্লাহ কায়সারের উপন্যাস অবলম্বনে আবদুল্লাহ আল মামুন নির্মিত ‘সারেং বৌ’ ছবির জন্য জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারে শ্রেষ্ঠ অভিনেত্রীর পুরস্কার লাভ করেন তিনি।

বর্ণাঢ্য ও সংগ্রামী জীবন কবরী চলচ্চিত্র ও রাজনৈতিক জীবনে পেয়েছেন সাফল্য। ২০০৮ সালে আওয়ামী লীগ থেকে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন তিনি। ব্যক্তি ও পারিবারিক জীবনেও রয়েছে বিপুল ঘটনা-অভিজ্ঞতা। এসব নিয়ে ২০১৭ সালের অমর একুশে বইমেলায় কবরী প্রকাশ করেন তার বই ‘স্মৃতিটুকু থাক’। ১৯৭৬ সালে মুক্তিপ্রাপ্ত কবরী অভিনীত ‘স্মৃতিটুকু থাক’ ছবিটি মুক্তি পায়। এখান থেকেই বইটির নাম নিয়েছেন কবরী। জাতীয় চলচ্চিত্র পুুরস্কারপ্রাপ্ত এ অভিনেত্রীর ইচ্ছা, ভবিষ্যতে বইটির দ্বিতীয় খণ্ড বের করবেন।

সফল অভিনেত্রী, চলচ্চিত্র নির্মাতা, লেখিকা ও রাজনীতিবিদ কবরী একসময় গীতিকবি হিসেবেও আত্মপ্রকাশ করেন। তার সরকারি অনুদানে নির্মিতব্য ‘এই তুমি সেই তুমি’ ছবিতে গান লিখেছেন তিনি। ‘তুমি সত্যি করে বলো তো’ শিরোনামের এই গানে কণ্ঠ দেবেন বরেণ্য সংগীতশিল্পী সাবিনা ইয়াসমিন।

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads