• বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪২৯

শোবিজ

ফিরে দেখা ২০২০ সাল

দেশীয় গানে খরা ও রুচির পরিবর্তন

  • সালেহীন বাবু
  • প্রকাশিত ২৮ ডিসেম্বর ২০২০

করোনাকালে দেশীয় গানের জগতে তৈরি হয়েছে গানের খরা। বিগত বছরগুলোর তুলনায় এবার নতুন গান প্রকাশ পেয়েছে খুবই কম। বিভিন্ন দিবস ও উৎসবে প্রকাশিত নতুন গানের সংখ্যা ছিল হাতেগোনা। এরপরও ঘরে বসেই নতুন গানের আয়োজন নিয়ে ব্যস্ত থাকার চেষ্টা করেছেন অনেকে। লকডাউনের পর প্রকাশকরা চেষ্টা করে গেছেন সংগীতাঙ্গনকে মুখরিত করে তোলার। যার মধ্য থেকে বেশ কিছু গান শ্রোতাদের মধ্যে সাড়া ফেলেছে। তবে গানের ক্ষেত্রে শ্রোতাদের ব্যতিক্রমী পছন্দ এবার লক্ষণীয়। তা না হলে এক হিরো আলমের গান কেনইবা বছরের সেরা ভাইরাল গানের মধ্যে একটি হবে। ডিজে মারুফ ও মীর মাসুমের র্যাপ গান ‘বাবু খাইছো’। ঈগল মিউজিক থেকে প্রকাশিত এই গানের ভিডিও করোনা মহামারীর এই সময়েও শ্রোতাদের কিছুটা হলেও আনন্দের খোরাক জুগিয়েছে। সেইসাথে হিরো আলম রাতারাতি নায়ক থেকে গায়ক হয়ে যান। গানের তাল-লয়-কথা বুঝতে যে কারো হিমশিম খেতে হয়। তারপরও শ্রোতারা হুমড়ি খেয়ে হিরো আলমের গান শুনেছে। তবে হিরো আলম দেশের এখন নামি সংগীতশিল্পী।

চঞ্চল চৌধুরী ও মেহের আফরোজ শাওনের গাওয়া প্রচলিত গান ‘সর্বতো মঙ্গল রাধে’ গানটি সুপারহিট হয়। ছিল অনেকের মুখে মুখে। যদিও এই গান প্রকাশের পর কপিরাইট নিয়ে নানা বিতর্ক সৃষ্টি হয়। এই গানটি বিতর্কিত হওয়ার পর গানের জনপ্রিয়তায় ভাটা পড়ে। নানা বিতর্কের অবসান ঘটিয়ে সারেগামাপা তারকা নোবেল প্রকাশ করেছেন ‘অভিনয়’ শিরোনামের একটি গান। সাউন্ডটেক থেকে প্রকাশিত এই গানটি নোবেলকে নতুন করে জনপ্রিয়দের কাতারে নিয়ে এসেছে। অন্যদিকে কবীর সুমনের কথা, সুর ও কম্পোজিশনে বেশ কিছু গানে কণ্ঠ দিয়ে আলোচনায় ছিলেন শিল্পী আসিফ আকবর। বছরের আলোচিত গানের তালিকায় আরো আছে সিএমভি থেকে প্রকাশিত ইমন ও সিঁথির দ্বৈত গান ‘জানি পাবো না’, ইমরান ও পূজার দ্বৈত ‘তুমি শুধু আমার’, ঐশীর ‘দম দাও’, তাহসানের ‘আমি ভালো আছি’, রঙ্গন মিউজিক থেকে প্রকাশিত ইমরানের একক গান ‘এতো ভালোবাসি’, গানচিল থেকে প্রকাশিত মিনার রহমানের 'আমি তোমার কাছে যাব', প্রীতম হাসানের ‘ভেঙ্গে পড়ো না এভাবে’, প্রতীক ও প্রীতমের ‘কাবারে হাড্ডি’, অনুপম থেকে প্রকাশিত তাহসানের ‘কে তুমি’, হাসান ও দৃষ্টির ‘ভ্যালেন্টাইন মাসুপ’, অর্ক মিউজিক স্টেশন থেকে প্রকাশিত ঐশীর ‘মায়া নদী’, সানডে মিউজিক থেকে প্রকাশিত সালমা ও এইচপি সোহাগের ‘রঙ্গিলা বাড়ই’ নিজস্ব চ্যানেলে প্রকাশিত মিনারের ‘কেউ কথা রাখেনি’, হাবিব ওয়াহিদের ‘হারালে কোথায়’, বাপ্পা মজুমদারের ‘লকডাউন ঢাকা’, তাবিব মাহমুদ ও গাল্লিবয় রানার ‘চাপ নাই’, ডিজে রাহাতের সংগীতায়োজনে পারভেজের ‘ফোক মাসুপ’, জি-সিরিজ থেকে প্রকাশিত ঐশীর ‘মেঘের বাড়ি’, তানযীব সারোয়ারের ‘মেঘরবণ’, ধ্রুব মিউজিক থেকে প্রকাশিত তানযীব সারোয়ারের ‘ডুবে ডুবে’, ইমরান ও সুমনার দ্বৈত ‘রাখিস আমার হাতটা ধরে’, কাজী শুভর ‘কলঙ্ক’, জিসান খান শুভর ‘ঘুণপোকা’, কোনালের ‘মেঘ’, সাউন্ডটেক থেকে প্রকাশিত লায়লার ‘একখান পান চাইলাম’, মাহতিম শাকিবের ‘ভেবে বলনা তুই’, মিনার রহমানের ‘তোমার ধকলে’, ইমরান ও বৃষ্টির দ্বৈত গান ‘কোমায় শুধু চাই’, সিডি চয়েস থেকে প্রকাশিত মিলন ও নাউমির দ্বৈত ‘একটু একটু করে’, রূপকথা মিউজিক থেকে প্রকাশিত আসিফ-কোনালের দ্বৈত ‘কিছু কিছু কথা’, বাংলাঢোল থেকে প্রকাশিত আসিফের ‘এখনও আমি সেই আসিফ’সহ একই শিল্পীর আর্ব থেকে প্রকাশিত ‘আমার একার নয়’, ‘সিরিয়ার ছেলে’ এবং ধূলি মিউজিক থেকে প্রকাশিত ‘লুকানো মানিক’সহ আরো বেশ কিছু গান।

এর বাইরেও বছরের বিভিন্ন সময়ে নানা ধরনের গান প্রকাশ পেয়েছে; যা নিয়ে শ্রোতারা তাদের ভালো লাগার কথাও জানিয়েছেন। তবে পুরো বছরে গানের যে খরা ছিল, এটা স্বীকার করতেও দ্বিধা করেননি। সর্বশেষ বিরতি ভেঙে আলোচিত গায়িকা মিলা ফিরেন ‘আইশালা’ নিয়ে।

সংগীত সংযুক্ত সবার কণ্ঠেই ছিল হতাশার সুর। তারপরও হাজারো ব্যর্থতায় মানুষ স্বপ্ন দেখে নতুন কিছু করার। অপেক্ষা করছেন কবে এই মহামারী করোনাকাল কাটবে। আধার ভেঙে আলোর দেখা পাবে সবাই। আপাতত যে যার বাসা থেকেই গানের পেছনে সময় ব্যয় করছেন।

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads