• বুধবার, ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪২৯

রেজওয়ানুল হক

ছবি: বাংলাদেশের খবর

টেলিযোগাযোগ

দেশে উৎপাদন করলেও খুব একটা কমবে না মোবাইলের দাম

  • এম রেজাউল করিম
  • প্রকাশিত ১১ মে ২০১৮

দেশের মধ্যে একটি মোবাইল ব্র্যান্ড তৈরির লক্ষ্যে নিরলস পরিশ্রম করে দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলের মানুষের মুখে নাম ছড়িয়ে দেওয়ার স্বপ্ন দেখেছিলেন রেজওয়ানুল হক। আর নিজের লক্ষ্যে অটল থেকে সেই উদ্দেশ্য বাস্তবায়নও করেছেন। প্রতিষ্ঠিত সেই ব্র্যান্ড ছেড়ে নিজেই এবার জয়েন্ট ভেঞ্চারে যুক্ত হলেন চীনের মোবাইল কোম্পানির প্রতিষ্ঠান ট্রানশান হোল্ডিংস লিমিটেডের সঙ্গে। রেজওয়ানুল হকের হাত ধরে প্রতিষ্ঠানটি এক বছরে দেশের মোবাইল বাজারের একটি উল্লেখযোগ্য অংশ দখল করতে সক্ষম হয়েছে। ব্র্যান্ড তৈরি করার পেছনের কর্মপদ্ধতি ও ট্রানশান হোল্ডিংস বাংলাদেশ ভাবনা নিয়ে বাংলাদেশের খবরের মুখোমুখি হয়েছিলেন রেজওয়ানুল হক। সাক্ষাৎকার নিয়েছেন এম রেজাউল করিম।

বাংলাদেশের খবর : সম্প্রতি ইন্টারন্যাশনাল ডাটা করপোরেশনের (আইডিসি) গবেষণায় দেখা গেছে বাংলাদেশের বাজারের ১৩ শতাংশ দখল করে দ্বিতীয় অবস্থান নিয়েছে ট্রানশান হোল্ডিংস। এই যে স্বল্প সময়ে এত ভালো একটা অবস্থানে আসলেন, সেটা কীভাবে?

রেজওয়ানুল হক : মোবাইল ফোন এমন একটা জিনিস, যা সময়ের সঙ্গে আপডেট থাকতে হবে, গ্রাহক চাহিদা বুঝতে হবে। তাদের কাছে পৌঁছে দিতে সবচেয়ে বড় যে অংশটা কাজ করে তা হলো চ্যানেল। সেই চ্যানেলেরও চাহিদা বুঝতে হবে। বর্তমানে গ্রাহকরা অনেক স্মার্ট। তাই মোবাইল ফোনের ক্ষেত্রে প্রযুক্তির ভ্যারিয়েন্টসহ সময় উপযোগী এবং উন্নতমানের পণ্য নিয়ে গ্রাহককে দিতে না পারলে বাজারে টিকে থাকাটা কষ্টসাধ্য হয়ে যাবে। কারণ, গ্রাহকরা ফোন কেনার আগে ইউজার এক্সপেরিয়েন্স পণ্যের মান দেখে কিনেন। তাই এগুলোর ওপর নির্ভর করেই গ্রাহকের কাছে একটা ব্র্যান্ড তৈরি হচ্ছে। আমরা সেই কাজগুলোই করেছি। যার মধ্যে আমাদের বড় একটা চ্যালেঞ্জ ছিল ১০০ দিনের রিপ্লেসমেন্ট গ্যারান্টি, যা বাংলাদেশে আমরাই প্রথম দিচ্ছি। যেহেতু আমরা নিশ্চিত আমাদের পণ্যের মান নিয়ে, তাই কোনো ধরনের দুশ্চিন্তা ছাড়াই আমরা এই চ্যালেঞ্জ নিয়ে নিয়েছি। আমি বলব এটাই আমাদের ঘুরে দাঁড়ানোর পেছনে বড় শক্তি হিসেবে কাজ করেছে।

বাংলাদেশের খবর : আমাদের দেশে বিক্রয় পরবর্তী সেবা নিয়ে গ্রাহকদের কাছে অভিযোগ পাওয়া যায় এবং অনেকের ক্ষোভও আছে এই সেবা নিয়ে। সেখানে আপনারা কী করছেন?

রেজওয়ানুল হক : একটি ব্র্যান্ড তৈরিতে গ্রাহককে দেওয়া বিক্রয় পরবর্তী সেবা অনেক বড় একটা গুরুত্ব বহন করে। ক্রেতা এবং বিক্রেতা একটি প্রোডাক্ট বিক্রি করার পর দুই পক্ষই চান প্রোডাক্টটি ভালো হোক এবং প্রোডাক্ট খারাপ হওয়ার যে ঝামেলা সেখান থেকে মুক্ত থাকুক। আমাদের দেশের বাজারে একটা মহল আছে, যারা গ্রাহক সেবা কেন্দ্রের সংখ্যা অনেক বেশি দেখিয়ে নিজেদের মার্কেটিং করে। কিন্তু তাদের কাছে উন্নতমানের সেবা অনেক কম পাওয়া যায়। তারা আসলে গ্রাহককে যেভাবে সেবা দিতে হবে, তা দিতে পারে না। তাই আমার মনে হয় কোনো প্রতিষ্ঠানের বিক্রয় পরবর্তী সেবা কেমন এ বিষয়ে গ্রাহকদেরকেই ফোন কেনার আগে কারা কেমন সেবা দিচ্ছে, সেবার গুণগত মান কেমন, এ বিষয়ে আরেকটু সচেতন হওয়া উচিত।

বাংলাদেশের খবর : বিক্রয় পরবর্তী সেবা নিয়ে আপনারা কী করছেন? আপনাদের কতগুলো সার্ভিস সেন্টার আছে?

বাংলাদেশের খবর : আমরা খুব বড় করে বলতে চাই না আমাদের অনেক বেশি কাস্টমার কেয়ার সেন্টার আছে। কারণ, সারা দেশে আমাদের মাত্র ৪৫টি সার্ভিস সেন্টার রয়েছে, যার মধ্যে ঢাকাতেই আছে ৩টা। সার্ভিস সেন্টার কম থাকার পেছনে হয়তো আরেকটা প্রশ্ন জাগতে পারে। সেখানে উত্তরটা হচ্ছে, আমরা আসলে সার্ভিস সেন্টারের চেয়ে মূলমন্ত্র হচ্ছে সার্ভিস সেন্টারে না আসা। আমরা চাই একজন গ্রাহককে ফোন ক্রয়ের পর যেন সার্ভিস নিতে আসার প্রয়োজন না হয়। সেখানেই আমরা ফোকাস করছি। আমাদের কোনো প্রোডাক্ট ক্রয় করার ১০০ দিনের মধ্যে কোনো সমস্যা হলে প্রোডাক্টটি রিপ্লেসমেন্ট দিচ্ছি। এর মাধ্যমে গ্রাহকদের বড় একটি অংশের আত্মতৃপ্তির ব্যাপার এসেছে।

বাংলাদেশের খবর : চলতি বছরের ফেব্রুয়ারিতে আপনারা দেশে ফ্যাক্টরি করার ঘোষণা দিয়েছিলেন। সেটার কী অবস্থা?

রেজওয়ানুল হক : ঢাকার অদূরে গাজীপুরেই আমাদের ফ্যাক্টরির কাজ চলছে, যা ইতোমধ্যে ৯০ ভাগ কাজ সম্পন্ন হয়েছে। এই ফ্যাক্টরিতে আমরা স্মার্টফোন এবং ফিচার ফোন দুটিই উৎপাদন করার পরিকল্পনা করেছি। এখানে প্রতি মাসে ৫ লাখ হ্যান্ডসেট তৈরি করা সম্ভব হবে বলে আমি আশাবাদী।

বাংলাদেশের খবর : দেশে মোবাইল উৎপাদন করলে কি দাম কমার সম্ভাবনা আছে?

রেজওয়ানুল হক : দেশে উৎপাদন করলে যে খুব একটা দাম কমে যাবে তা কিন্তু নয়। কারণ একটা হ্যান্ডসেট আমদানি করলে দিতে হয় ৩১ শতাংশ ট্যাক্স, আর যদি খুচরা যন্ত্রাংশ আমদানি করা হয় তাহলে দিতে হয় ১০ শতাংশ ট্যাক্স। এখানে হয়তো ২০ শতাংশ লাভ হচ্ছে, কিন্তু ফ্যাক্টরির খরচের জন্য আবার ১০ শতাংশ চলে যাচ্ছে। তো সেই হিসাব করলে বর্তমান বাজার মূল্যের চেয়ে ১০ শতাংশ দাম কমতে পারে।

 

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads