• শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪২৯
স্মার্টফোন অ্যাপে কর্মীবান্ধব পোশাক শিল্প প্রতিষ্ঠান

সংগৃহীত ছবি

টেলিযোগাযোগ

স্মার্টফোন অ্যাপে কর্মীবান্ধব পোশাক শিল্প প্রতিষ্ঠান

  • শাহাদাত হোসেন
  • প্রকাশিত ২৬ মে ২০১৮

দেশের মোট রফতানি আয়ের একটি বড় অংশই আসে তৈরি পোশাক রফতানি থেকে। তবে পোশাক শিল্পের সঙ্গে যুক্ত শ্রমিকরা বিভিন্ন সময় নানা বৈষম্য এবং হয়রানির শিকার হয়ে থাকে। বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই মালিক শ্রমিকের মধ্যে দেখা যায় দূরত্ব।

প্রযুক্তির ব্যবহার করে এসব সমস্যা দূর করার পাশাপাশি এ খাতের উৎপাদনশীলতা বাড়াতে সহযোগিতায় এগিয়ে এসেছে কুটুম্বিতা। প্রতিষ্ঠানটি তৈরি করেছে একটি স্মার্টফোন অ্যাপ, যা নানাভাবে এ খাতের জন্য সহায়ক এবং উৎপাদনশীল পরিবেশ নিশ্চিত করতে কাজ করছে।

একটি অ্যাপের মাধ্যমে কাজ করলেও কুটুম্বিতা মূলত একটি ইন্টারঅ্যাক্টিভ প্ল্যাটফর্ম, যা পোশাক শিল্প প্রতিষ্ঠানের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সঙ্গে কর্মীদের যোগাযোগের মাধ্যম হিসেবেই কাজ করবে না, নিশ্চিত করবে আরো অনেক কিছুই। বিভিন্ন সময়ে কর্মীদের বিভিন্ন প্রশিক্ষণ দেওয়ার ব্যবস্থাও রয়েছে এ অ্যাপে। এ ছাড়া প্রয়োজনীয় নানা তথ্য তাৎক্ষণিকভাবে কর্মীদের কাছে পৌঁছে দেওয়ার ক্ষেত্রেও গুরুত্বপূর্ণ মাধ্যম কুটুম্বিতা।

প্রতিষ্ঠান কর্তৃপক্ষ একজন কর্মীর অধিকার, আইনি পরামর্শ কিংবা অন্য যেকোনো পরামর্শ অ্যাপটির মাধ্যমেই কর্মীদের জানানোর সুযোগ পাচ্ছেন। এ ছাড়া একজন কর্মী তার কোনো প্রশ্ন কিংবা জিজ্ঞাসা থাকলে তাও জেনে নিতে পারছেন অ্যাপটির মাধ্যমে।

এর বাইরে কর্ম তালিকা তৈরি, অফিসের সময়সূচি, অফিস খোলা কিংবা বন্ধের নোটিশসহ কর্মস্থলের তথ্য জানার এবং জানানোর ব্যবস্থা আছে অ্যাপে।

অ্যাপটি যেভাবে কাজ করে

কুটুম্বিতা অ্যাপে রয়েছে সহজে ব্যবহারযোগ্য ইউজার ইন্টারফেস, যা একজন সাধারণ কর্মীর জন্যও অ্যাপটির ব্যবহার সহজ করে দিয়েছে। অ্যাপে ঢুকলেই পাওয়া যাবে একটি ড্যাশবোর্ড, যার মাধ্যমে প্রতিষ্ঠানের ব্যবস্থাপক বা অন্য কর্মকর্তারা অ্যাপটি পরিচালনা করতে পারবেন।

প্রতিষ্ঠানের কর্মীরা যেন তাদের বিভিন্ন দাবি কিংবা অভিযোগ যথাযথ কর্তৃপক্ষের কাছে তুলে ধরতে পারেন কোনো সঙ্কোচ কিংবা ভয় ছাড়া, সে বিষয়টি নিশ্চিত করতে এর সমস্ত তথ্যই এনক্রিপ্টেড অবস্থায় আদান-প্রদান করা হয়। সকল তথ্যই সংরক্ষণ করা হয় ক্লাউড স্টোরেজে, যেখানে আবার নিশ্চিত করা হয় যথাযথ নিরাপত্তা ব্যবস্থার।

অ্যাপটির ডাটা সেন্টার এবং নেটওয়ার্ক অবকাঠামো এমনভাবে ডিজাইন করা হয়েছে যেন কোনো কর্মকর্তা কোনো কর্মীকে হেনস্থা করার জন্য চাইলেও এ সিস্টেমে অনুপ্রবেশ করতে পারবেন না।

বাংলাদেশে কুটুম্বিতার কার্যক্রম

বাংলাদেশের বিভিন্ন পোশাক শিল্প প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে কাজ করলেও কুটুম্বিতা মূলত সিঙ্গাপুরভিত্তিক একটি প্রতিষ্ঠান। বাংলাদেশে প্রতিষ্ঠানটি কান্ট্রি ম্যানেজার হিসেবে কাজ করছেন শাহরিয়ার রহমান।

অ্যাপটি সম্পর্কে তিনি বলেন, ‘পোশাক শিল্প প্রতিষ্ঠানের কর্মচারী ও কর্মকর্তাদের মাঝে একটি হূদ্যতাপূর্ণ সম্পর্ক তৈরি করাই এর মূল উদ্দেশ্য। এর মাধ্যমে একদিকে যেমন প্রতিষ্ঠানের উৎপাদন বৃদ্ধি পাবে অন্যদিকে বিভিন্ন খরচও কমে আসবে।’

এরই মধ্যে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান অ্যাপটি ব্যবহার শুরু করেছে বলে জানান শাহরিয়ার। কিন্তু কেন প্রতিষ্ঠানগুলো এ অ্যাপ ব্যবহারে আগ্রহ দেখাচ্ছে, এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘অ্যাপটি তৈরিতে মাথায় রাখা হয়েছে সাসটেইনেবল অ্যাপারেল কোয়ালিশনের হিগস ইনডেক্স মানদণ্ডকে। এর ফলে কোনো প্রতিষ্ঠান অ্যাপটি ব্যবহার করলে তাদের কমপ্লায়েন্স স্কোরও অনেকাংশে বেড়ে যায়।’

তিনি আরো জানান, অ্যাপটি আকারে ছোট হলেও এর কাজের ব্যাপ্তি বিশাল। একটি কারখানাকে সম্পূর্ণভাবে অটোমেশনের আওতায় নিয়ে আসতে পারে এটি। এর মাধ্যমে ৪ থেকে ১০ শতাংশ পর্যন্ত পরিচালন ব্যয় কমেছে বলেও জানান শাহরিয়ার।

শ্রমিকরা যেন সহজেই অ্যাপটি ব্যবহার করতে পারে সেজন্য এর সঙ্গে স্মার্টফোন সুবিধাও চালু করেছে কুটুম্বিতা। সাশ্রয়ী মূল্যে বাজেট স্মার্টফোন কিস্তিতে কেনার সুযোগ পাচ্ছেন শ্রমিকরা। এ ছাড়া স্মার্টফোন ও ট্যাবের পাশাপাশি কর্মস্থলে স্থাপিত কিওস্ক থেকেও অ্যাপটি ব্যবহারের সুযোগ রয়েছে বলে জানান শাহরিয়ার রহমান।

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads