• শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪২৯
দেশে ফাইভজি পরীক্ষা আগামীকাল

ছবি : ইন্টারনেট

টেলিযোগাযোগ

দেশে ফাইভজি পরীক্ষা আগামীকাল

  • নিজস্ব প্রতিবেদক
  • প্রকাশিত ২৪ জুলাই ২০১৮

মোবাইল নেটওয়ার্ক ব্যবস্থাপনায় পরিবর্তন প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে মানুষের জীবন বদলে দিচ্ছে। যার বাস্তব প্রমাণ মিলেছে প্রথম প্রজন্ম থেকে চতুর্থ প্রজন্মের (ফোরজি) নেটওয়ার্ক ব্যবহারে। তবে বিশ্ব এখানেই থেমে নেই। কারণ, ইতোমধ্যে বিশ্বের চোখ চলে গেছে পঞ্চম প্রজন্মের (ফাইভজি) নেটওয়ার্কের দিকে। বিশ্বের বিভিন্ন দেশে ইতোমধ্যে নানারকম পরীক্ষা-নিরীক্ষা এবং গবেষণা চলছে নতুন এই প্রযুক্তি নিয়ে।

উন্নত বিশ্বের সঙ্গে তাল মিলিয়ে বাংলাদেশেও হতে যাচ্ছে ফাইভজি নেটওয়ার্কের পরীক্ষা। আগামীকাল ঢাকায় করা হবে নতুন প্রযুক্তির পরীক্ষা, যেখানে সরাসরি দেখানো হবে ফাইভজি প্রযুক্তির সঙ্গে পুরনো প্রযুক্তির পার্থক্য। এ ছাড়া একই জায়গায় ‘বাংলাদেশ ফাইভজি সামিট’র আয়োজন করা হয়েছে।

প্রধানমন্ত্রীর তথ্যপ্রযুক্তি–বিষয়ক উপদেষ্টা সজীব ওয়াজেদ জয় সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে এ তথ্য জানিয়েছেন।

তিনি আজ মঙ্গলবার জানান, এই মুহূর্তে আমি ট্রাফিকে আটকে আছি কিন্তু ঢাকাতে বসেই ঠিক আমেরিকার মতোই ৪জি ইন্টারনেট সেবা পাচ্ছি। আমরা কয়েকমাস আগে ৪জি সেবা চালু করলেও ইতোমধ্যেই কাভারেজ বেশ ভালো বলে মনে হচ্ছে। এর জন্য টেলিকম কোম্পানিগুলোকে আমি ধন্যবাদ জানাই। আওয়ামী লীগ সরকারের ডিজিটাল বাংলাদেশ বাস্তবায়নে আরেকটি মাইলফলক অর্জন।

“আগামীকাল সকালে আমরা ৫জি প্রযুক্তির পরীক্ষামূলক প্রদর্শনী করবো।”

পরীক্ষার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তিমন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার। গতকাল সোমবার বাংলাদেশের খবরের সঙ্গে আলাপকালে ফাইভজি নেটওয়ার্কের পরীক্ষা ও বাংলাদেশ ফাইভজি সামিটের বিষয়টি জানান তিনি।

মোস্তাফা জব্বার বলেন, আগামীকাল সকালে রাজধানীর প্যান প্যাসিফিক সোনারগাঁও হোটেলে এই পরীক্ষা চালানো হবে। একই সঙ্গে ফাইভজির নানা বিষয় নিয়ে আলোচনা করা হবে। এতে প্রধান অতিথি হিসেবে প্রধানমন্ত্রীর তথ্য ও প্রযুক্তি বিষয়ক উপদেষ্টা সজীব ওয়াজেদ জয়ের উপস্থিত থাকার কথা রয়েছে বলেও নিশ্চিত করেন তিনি।

সামিটের উদ্দেশ্য নিয়ে মোস্তাফা জব্বার বলেন, আমাদের প্রচলিত, টুজি, থ্রিজি এবং ফোরজির গতি ক্যাবল মাধ্যমে সরবরাহকৃত ইন্টারনেটের গতির চেয়ে কম। আমরা ফোরজিতে যখন গিয়েছি তখন চিন্তা করেছি গড়ে এর গতি হবে ৪ থেকে ২০ এমবিপিএস। আর ফাইভজির গতি হবে ৪ জিবিপিএস থেকে ২০ জিবিপিএস। পরিবর্তনটা এতটাই ব্যাপক যে কারো পক্ষে ধারণা করাও কঠিন। তাই বলা যায়, এই সামিটের উদ্দেশ্যই হচ্ছে ফাইভজি প্রযুক্তি কী সেটা স্বচক্ষে দেখা, পরীক্ষা করা এবং ফাইভজির যে সুবিধা পাওয়া যাবে সে সম্পর্কে ধারণা নেওয়া।

মন্ত্রী আরো বলেন, এই আনুষ্ঠানিকতার মানে কিন্তু এই নয় যে ফাইভজি চালু হচ্ছে। আমরা কিন্তু ফাইভজি চালু করছি না, এই প্রযুক্তি পরীক্ষা করছি। এই প্রযুক্তি নিয়ে আমাদের প্রস্তুতি রাখতে হবে। কারণ সারা দুনিয়া যখন ফাইভজি প্রযুক্তি ব্যবহার করবে, তখন আমরা জ্ঞান অর্জন করতে থাকব। সেটা এখন আর চলবে না। আমরা স্বাভাবিক যেই নিয়মে চলছিলাম, সেভাবেই চলব।

জানা যায়, পঞ্চম প্রজন্মের মোবাইল প্রযুক্তিতে কেমন হবে বিশ্ব, তা দেখাতেই ঢাকায় এই ফাইভজি পরীক্ষা আয়োজিত হতে যাচ্ছে। এদিকে ফাইভজি প্রযুক্তির পরীক্ষা নিয়ে ইতোমধ্যে জোরেশোরে প্রস্তুতি চালাচ্ছে চীনের প্রযুক্তি পণ্য নির্মাতা ও সেবাদাতা প্রতিষ্ঠান হুয়াওয়ে। আর ফাইভজি পরীক্ষা চালাতে হুয়াওয়েকে এক সপ্তাহের জন্য স্পেকট্রাম বরাদ্দ দিয়েছে বাংলাদেশ টেলিকমিউনিকেশন রেগুলেটরি কমিশন (বিটিআরসি)। হুয়াওয়ের এই পরীক্ষায় বাংলাদেশের প্রতিনিধি হিসেবে সহায়তা করবে রাষ্ট্রায়ত্ত টেলিকম অপারেটর টেলিটক ও বেসরকারি অপারেটর রবি।

আয়োজক সূত্র জানায়, আগামীকাল সকালেই সামিটের সঙ্গে সঙ্গে এই পরীক্ষা শুরু হবে। এ পরীক্ষার জন্য ইতোমধ্যে চীন থেকে ফাইভজি প্রযুক্তি সংশ্লিষ্ট যন্ত্রপাতি বাংলাদেশে নিয়ে এসেছে হুয়াওয়ে এবং প্রাথমিক পরীক্ষা-নিরীক্ষার কাজও শুরু করে দিয়েছে। একই সঙ্গে এ পরীক্ষার জন্য বিটিআরসি থেকে দেওয়া স্পেকট্রামের ব্যবহারও শুরু হয়ে গেছে বলে জানা যায়। 

সূত্র আরো জানায়, এই পরীক্ষায় থ্রিজি, ফোরজির সঙ্গে ফাইভজির উচ্চগতির ইন্টারনেট প্রযুক্তি, ভিডিও স্ট্রিমিংসহ যাবতীয় পার্থক্যগুলো সরাসরি পরীক্ষা করে দেখানো হবে। এ ছাড়া এই পরীক্ষার মাধ্যমে ভার্চুয়াল রিয়েলিটি, স্মার্ট সিটি ও ইন্টারনেট অব থিংসের (আইওটি) নানা ধরনের কাজে ফাইভজি প্রযুক্তির ভূমিকা প্রদর্শন করা হবে।

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads