• বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪২৯
ডুবতে বসা টেলিটক বাঁচাতে এবার ভারতীয় ঋণ

দুর্গম এলাকায় নেটওয়ার্কে ব্যবহার হবে সৌরশক্তি, ৪০৬ কোটি টাকা ব্যয়ের প্রকল্প উঠছে একনেকে

ছবি : সংগৃহীত

টেলিযোগাযোগ

ডুবতে বসা টেলিটক বাঁচাতে এবার ভারতীয় ঋণ

  • জাহিদুল ইসলাম
  • প্রকাশিত ১৯ অক্টোবর ২০১৮

সরকারি তহবিলের ২ হাজার কোটি টাকা মূলধন নিয়ে ২০০৪ সালে গঠন করা হয় রাষ্ট্রায়ত্ত মোবাইল অপারেটর কোম্পানি টেলিটক বাংলাদেশ লিমিটেড। ২০০৫ সালের ৩১ মার্চ বাণিজ্যিক কার্যক্রম শুরু করার সময় প্রতিষ্ঠানটির একেকটি সিম ছিল সোনার হরিণ। সময়ের ব্যবধানে বাজারে কোম্পানিটির অংশ নেমে এসেছে ৩ শতাংশে। টেলিটকের সক্ষমতা বাড়াতে সরকারের অর্থায়নে বাস্তবায়ন করা হয়েছে বেশ কিছু বড় প্রকল্প। ৬৭৫ কোটি ৮১ লাখ টাকা ব্যয়ের একটি প্রকল্পের কাজ চলছে। লোকসানের ভারে জর্জরিত প্রতিষ্ঠানটির উন্নয়নে এবার ব্যবহার হচ্ছে ভারতীয় ঋণের অর্থ। ৪০৬ কোটি টাকা ব্যয় ধরে এ বিষয়ে একটি প্রকল্প জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) পরবর্তী সভায় উপস্থাপন করা হচ্ছে। পরিকল্পনা কমিশন সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে।

সূত্র জানায়, আগামী মঙ্গলবার রাজধানীর এনইসি সম্মেলন কক্ষে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে একনেক সভা অনুষ্ঠিত হবে। সভায় অনুমোদনের জন্য ১৯টি প্রকল্প উপস্থাপনের কথা রয়েছে। এসব প্রকল্পের মধ্যে টেলিটকের প্রকল্পটিও অন্তর্ভুক্ত রয়েছে। প্রকল্পটি বাস্তবায়নে সরকারের নিজস্ব তহবিল থেকে ১২৫ কোটি ২৪ লাখ টাকা ব্যয় করা হবে। ভারতের প্রতিশ্রুত তৃতীয় দফায় ঋণ (এলওসি-৩) থেকে নেওয়া হবে ২৫৫ কোটি টাকা। প্রকল্পের বাস্তবায়নকারী সংস্থা টেলিটক বাংলাদেশ লিমিটেডের নিজস্ব তহবিল থেকে ব্যয় করা হবে ২৫ কোটি ৯২ লাখ টাকা।

একনেকের অনুমোদন পেলে প্রকল্পটি ২০২০ সালের মধ্যে বাস্তবায়ন করবে টেলিটক। এর কাজ শেষ হলে দুর্গম এলাকার ২৫ লাখ মানুষ মোবাইল নেটওয়ার্কের আওতায় আসবে বলে ধারণা করছে ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রণালয়। নেটওয়ার্ক সম্প্রসারণ করতে নির্মিতব্য বেজ স্টেশনে জ্বালানির উৎস হিসেবে ব্যবহার করা হবে সৌরশক্তি। মূলত বিদ্যুতের জাতীয় গ্রিডের আওতার বাইরে থাকা এলাকায় প্রকল্পটি বাস্তবায়ন হবে বলে পরিকল্পনা কমিশনের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন।

প্রকল্পের প্রস্তাবনায় বলা হয়েছে, দেশের অনেক দুর্গম এলাকায় এখনো আধুনিক উচ্চ গতিসম্পন্ন থ্রিজি প্রযুক্তির টেলিযোগাযোগ সেবা পৌঁছেনি। এসব অঞ্চলে টাওয়ার বেজ স্টেশনে বিদ্যুৎ সংযোগ দেওয়া সম্ভব নয়। ডিজেল জেনারেটরের মাধ্যমে বেজ স্টেশন স্থাপন করাও অনেক এলাকায় সম্ভব নয়। তবে সৌরচালিত স্টেশনের মাধ্যমে বেজ স্টেশন স্থাপন করা হলে নেটওয়ার্ক পরিচালনা ব্যয় কম হবে। ফলে দেশের দুর্গম এলাকায় নেটওয়ার্ক স্থাপনকে অধিক সহজতর করবে। এসব বিবেচনায় বেসরকারি খাতের মোবাইল অপারেটরদের সেবা নেই এমন এলাকায় বাস্তবায়নের জন্য প্রকল্পটি প্রস্তাব করা হয়েছে।

প্রকল্পটির বিষয়ে পরিকল্পনা কমিশনের মতামত দিতে গিয়ে কমিশনের সদস্য সবীর কিশোর চৌধুরী বলেন, সৌরচালিত স্টেশনের মাধ্যমে পাওয়ার বেজ স্টেশন স্থাপন করা গেলে বাংলাদেশের দুর্গম এলাকা অর্থাৎ হাওর, বন, দ্বীপ, চট্টগ্রামের পাহাড়ি এলাকায় থ্রিজি প্রযুক্তির টেলিযোগাযোগ সেবা পৌঁছানো সম্ভব হবে। এর সুফল পাবেন জামালপুর, শেরপুর, নেত্রকোনা ও ময়মনসিংহের পাহাড়ি এলাকার প্রায় ২৫ লাখ মানুষ। এসব বিষয় বিবেচনায় নিয়ে প্রকল্পটি একনেকের অনুমোদনের সুপারিশ করা হয়েছে।

প্রকল্পের প্রস্তাবনা পর্যালোচনা করে জানা যায়, ২০০৪ সালে ২ হাজার কোটি টাকা মূলধন নিয়ে গঠন করা হয় টেলিটক বাংলাদেশ লিমিটেড। ২০০৫ সালের ৩১ মার্চ প্রতিষ্ঠানটির বাণিজ্যিক কার্যক্রম শুরু হয়। বর্তমানে টেলিটকের মার্কেট শেয়ার মাত্র ৩ শতাংশ। সপ্তম পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনা অনুযায়ী ২০২০ সাল পর্যন্ত মার্কেট শেয়ার ২০ শতাংশে উন্নীত করার পরিকল্পনা রয়েছে। এ লক্ষ্য পূরণে কোম্পানিটির নেটওয়ার্ক সম্প্রসারণে নিজস্ব, সরকারি এবং বৈদেশিক সহায়তায় বিভিন্ন প্রকল্প বাস্তবায়নের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads