• বৃহস্পতিবার, ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪২৮
বাজারে ৪০ শতাংশের বেশি নিয়ন্ত্রণ পাবে না অপারেটর

সংগৃহীত ছবি

টেলিযোগাযোগ

এসএমপি প্রবিধানমালা ২০১৮

বাজারে ৪০ শতাংশের বেশি নিয়ন্ত্রণ পাবে না অপারেটর

  • এম রেজাউল করিম
  • প্রকাশিত ২০ নভেম্বর ২০১৮

টেলিযোগাযোগ খাতের ব্যবসায় একক আধিপত্য বিস্তার ঠেকাতে তাৎপর্যপূর্ণ বাজার ক্ষমতা (সিগনিফিক্যান্ট মার্কেট পাওয়ার-এসএমপি) সংক্রান্ত প্রবিধানমালার প্রজ্ঞাপন জারি করেছে বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন (বিটিআরসি)। গত বুধবার জারিকৃত এই প্রবিধানমালায় বলা হয়েছে, টেলিযোগাযোগ খাতে খুচরা মোবাইল সেবা প্রদানকারী কোনো প্রতিষ্ঠান বাজারের ৪০ শতাংশের বেশি দখলে রাখতে পারবে না।

প্রবিধানমালায় আরো বলা হয়েছে, গ্রাহক সংখ্যা, অর্জিত বার্ষিক রাজস্ব এবং কমিশন কর্তৃক বরাদ্দকৃত তরঙ্গসহ অন্যান্য সম্পদের হিসাব করেই খুচরা মোবাইল সেবা প্রদানকারী প্রতিষ্ঠানগুলোকে বিবেচনা করা হবে।

বিটিআরসির হিসাবমতে গ্রাহক সংখ্যার দিক থেকে মোবাইল অপারেটরগুলোর মধ্যে বর্তমানে গ্রামীণফোন ৪৫.৮ শতাংশ, রবি ৩০ শতাংশ, বাংলালিংক ২২ শতাংশ এবং টেলিটকের ২.৫ শতাংশ বাজার দখল করে রেখেছে। আর মোট আয়ের দিক থেকে গ্রামীণফোনের শেয়ার ৫১.৩৩ শতাংশ, রবির ২৫.৪৭ শতাংশ, বাংলালিংকের ২০.২২ শতাংশ ও টেলিটকের ২.৯৮ শতাংশ।

বাজার বিশ্লেষকরা বলছেন, এই প্রবিধানমালা অনুযায়ী বাণিজ্যিকভাবে ক্ষতির সম্মুখীন হবে দেশের সবচেয়ে বড় অপারেটর গ্রামীণফোন। কারণ, এসএমপি অনুযায়ী প্রতিষ্ঠানটি বাজারে আর নতুন গ্রাহক সংগ্রহ করতে পারবে না।

এই বিষয়ে ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার বলেন, টেলিযোগাযোগ খাতের ব্যবসায় একক আধিপত্য বিস্তার ঠেকাতে এবং অপারেটরদের মধ্যে প্রতিযোগিতা বাড়াতে প্রবিধানমালা তৈরি করা হয়েছে। এতে বাজারে একক কর্তৃত্বের সুবিধা কমে আসবে। আর প্রতিযোগিতার মাধ্যমে মানসম্পন্ন সেবাপ্রাপ্তির সুযোগ বাড়বে।

তিনি আরো বলেন, এসএমপি যদি আরো ৫ বছর আগে করা যেত তাহলে দেশে কোনো মনস্টার তৈরি হতো না। এটা হয়েছে কারণ আমাদের এসএমপি প্রবিধানমালা ছিল না। আমাদের যে কম্পিটিটিভ অ্যাক্ট আছে সেটিও এক্ষেত্রে প্রযোজ্য হয়নি।

প্রবিধানমালায় বলা হয়েছে, কাঠামোগত দিক, আচরণগত দিক, বাজারে সকল অংশীদারের মোট বিক্রীত এককের শতকরা হার এবং সম্ভাবনাময় মোট বিক্রীত এককের শতকরা হার, অন্তর্বর্তী বাজারের কাঠামো, অর্থনীতির পরিসর ও মাপকাঠি, পণ্য বা সেবা পার্থক্যকরণ ও বিক্রয় প্রবর্ধনের মাত্রা নির্ণয়, সরবরাহের আচরণ, মূল্য নির্ধারণ সংক্রান্ত আচরণ, অন্যান্য সংশ্লিষ্ট বাজারের জন্য নির্ণায়ক নির্ধারণ ও বাজারের নিয়ন্ত্রণের শতকরা হার ইত্যাদি বিষয় বিবেচনা করে কমিশন তাৎপর্যপূর্ণ বাজার ক্ষমতা নির্ধারণ করতে পারবে। একই সঙ্গে দেশের টেলিযোগাযোগ বাজারে তাৎপর্যপূর্ণ বাজার ক্ষমতাসম্পন্ন অপারেটর চিহ্নিত করে করণীয় ও বর্জনীয়-সংক্রান্ত নির্দেশ জারি করতে পারবে কমিশন।

এ ছাড়া বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ আইন ২০০১ এর ধারা ৯৯, ধারা ২৯ এর দফা ঘ’র ক্ষমতাবলে প্রণীত এই প্রবিধানমালায় বলা হয়, কমিশনের নিজস্ব উদ্যোগে কিংবা কারো অভিযোগের ভিত্তিতে কোনো প্রতিষ্ঠান যদি এই প্রবিধানমালা না মানে, সেক্ষত্রে অভিযোগ প্রমাণ সাপেক্ষে কমিশন ওই প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে জরিমানাসহ আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করতে পারবে।

উন্নত বিশ্বের বিভিন্ন দেশের মূলত উন্নত বিশ্বে বাজার নিয়ন্ত্রণের জন্য এসএমপি চালু রয়েছে। প্রতিবেশি দেশগুলোর মধ্যে শ্রীলঙ্কায় ৫৫ শতাংশ, নেপালে ৩৫ ও পাকিস্তানে ৫৫ শতাংশ মার্কেট শেয়ার এসএমপির আওতাভুক্ত হিসেবে ঘোষণা করা হয়েছে। এ ছাড়া ইউরোপ-আমেরিকার বাজারেও এসএমপি চালু রয়েছে।

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads