• মঙ্গলবার, ১৬ এপ্রিল ২০২৪, ৩ বৈশাখ ১৪২৯

বাণিজ্য

আগামী বছর শুরু হবে পাটের চায়ের বিপণন

  • নিজস্ব প্রতিবেদক
  • প্রকাশিত ০৭ মার্চ ২০১৮

পাটের পাতা থেকে ২০১৬ সালে চা তৈরি হয়েছে। এরই মধ্যে রফতানি হচ্ছে পাটের চা। আর আগামী বছর দেশের বাজারে এ চায়ের বাণিজ্যিক বিপণন শুরুর পরিকল্পনা রয়েছে। জামালপুরের সরিষাবাড়ীতে এখন চলছে চা কারখানার নির্মাণকাজ। কারখানা নির্মাণের কাজ এগিয়ে গেছে অনেকটাই।

মঙ্গলবার পাটপণ্য মেলায় এসব কথা জানালেন ওয়ার্ছি অ্যাকুয়া অ্যাগ্রো টেকের চেয়ারম্যান এইচ এম ইসমাইল খান। তিনিই এই অর্গানিক চায়ের উদ্ভাবক।

এইচ এম ইসমাইল খান বাংলাদেশের খবরকে বলেন, গত বছর তার প্রতিষ্ঠান প্রাথমিক পর্যায়ে ১৬ কেজি চা জার্মানিতে রফতানি করে। এরপর এখন সেদেশ থেকে নতুন করে ২ টন চায়ের অর্ডার এসেছে। এই চায়ের সম্ভাবনা প্রচুর। ফলে দেশের বাজারে এই পণ্য সরবরাহ নিশ্চিত করতে তিনি চলতি বছরের মধ্যেই কারখানা নির্মাণের কাজ সম্পন্ন করবেন।

এই গবেষক আরো বলেন, দেশের বাজারে সরবরাহের জন্য ১০০ ও ৫০ গ্রামের দুটি প্যাকেট করার পরিকল্পনা রয়েছে। দুই প্যাকেটের প্রাথমিক মূল্য নির্ধারণ করা হয়েছে যথাক্রমে ১৫০ ও ৯৯ টাকা। সে হিসাবে প্রতি কাপ চায়ের জন্য খরচ হবে মাত্র এক টাকা।

গতকাল ‘জাতীয় পাট দিবস’ উপলক্ষে তিন দিনব্যাপী পাটপণ্যের মেলা শুরু হয়েছে বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে। মেলায় চলতি বছর ২৩৫ রকমের বহুমুখী পাটপণ্য প্রদর্শন ও বিক্রি করা হচ্ছে। মেলায় ৭৫ স্টলে নিজেদের পণ্যের পসরা সাজিয়ে বসেছেন ১১৩ উদ্যোক্তা।

মেলায় পাটের চায়ের মতো আরো অনেক মনকাড়া পণ্যের সমাহার রয়েছে, যা দর্শনার্থীদের মুগ্ধ করছে। মেলায় এসেছেন গৃহিণী সিরাজুম এহসান। তিনি বলেন, ‘আমি এখানে এসে অবাক হয়েছি। কী না সম্ভব পাট দিয়ে। আর সবকিছুতেই যেন নিজস্ব ঐতিহ্যের ছোঁয়া।’

মেলায় দেখা মেলে পলিথিনের বিকল্প পাটের ব্যাগ। এসব ব্যাগ তৈরি করেছেন মাহবুবুল হক। ২০০৫ সালে পাটপণ্য বহুমুখীকরণে শ্রেষ্ঠ উদ্যোক্তার পুরস্কার অর্জন করেছেন তিনি। ‘মাহবুব জুটেক্স’-এর স্টলে পাওয়া যাচ্ছে পাটের ব্যাগ। তিনি এসব ব্যাগ দেখিয়ে বলেন, বাণিজ্যিকভাবে এসব ব্যাগ তৈরিতে খরচ পড়ে ৮-৯ টাকা। তবে এ দামে বাজারের ব্যাগ কেউ কিনবে না। ফলে শুধু রফতানির বাজার রয়েছে এ ধরনের পাটের ব্যাগের।

দেশের জন্য এসব পরিবেশবান্ধব ব্যাগ তৈরিতে উৎসাহ দিতে সরকারের প্রণোদনা দেওয়া উচিত বলে মনে করেন এই উদ্যোক্তা। তিনি বলেন, এসব ব্যাগে যেটুকু জুট কটন ব্যবহার হয় তা কমদামে সরবরাহ করলে আরো খরচ কমানো সম্ভব। এ ছাড়া পরিবেশের কথা চিন্তা করে এসব ব্যাগ বিক্রিতে নগদ প্রণোদনা দেওয়া যেতে পারে।

মেলায় কার্পেটের মতো পাটের ম্যাট নিয়ে পসরা সাজিয়েছে ক্লাসিক হ্যান্ডমেইড প্রোডাক্টস। প্রতিষ্ঠানটির পথচলা শুরু ২০০৮ সালে, যা পুরোপুরি রফতানিমুখী। প্রতিষ্ঠানের স্বত্বাধিকারী তৌহিদ বিন আবদুস সালাম বলেন, ‘আমাদের এসব ম্যাট শুধু ইউরোপের বাজারেই রফতানি করছি। কারণ সেখান থেকে প্রতিবছর কমপক্ষে ৭-৮ লাখ ডলারের অর্ডার মেলে। ছোট পরিসরে শুরু করে এখন আমার কারখানায় ২ হাজার মানুষের কর্মসংস্থান হয়েছে।’

মেলায় গ্রামীণ নারীদের হাতে তৈরি শতাধিক রকমের পাটপণ্য নিয়ে এসেছে ‘নারী’ নামের এক সংগঠন। এ সংগঠনের সঙ্গে জড়িত ৫ শতাধিক উদ্যোক্তা। তারা নিজেরাই বাসায় পণ্য তৈরি করে সংগঠনটির মাধ্যমে এ ধরনের প্রদর্শনীতে বিক্রি করে থাকেন। এতে প্রতি উদ্যোক্তা মাসে ৩-৭ হাজার টাকা আয় করছেন বলে জানান এর নির্বাহী পরিচালক ফরিদা ইয়াসমীন।

মেলায় বেসরকারি খাতের উদ্যোক্তাদের পণ্যের সঙ্গে রয়েছে বাংলাদেশ জুট মিলস করপোরেশনের (বিজেএমসি) ও জুট অ্যান্ড টেক্সটাইল প্রোডাক্ট ডেভেলপমেন্ট সেন্টারের (জেটিপিডিসি) পণ্যসামগ্রী।

 

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads