• শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪২৮

ছবি : সংগৃহীত

বাণিজ্য

বিদ্যুৎ উৎপাদনে নতুন রেকর্ড

  • নিজস্ব প্রতিবেদক
  • প্রকাশিত ২৬ এপ্রিল ২০১৮

দেশে রেকর্ড পরিমাণ বিদ্যুৎ উৎপাদিত হয়েছে গত মঙ্গলবার রাতে। ওই সময় অতীতের সব রেকর্ড ভেঙে ১০ হাজার ১৩৭ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপন্ন হয়েছে।

গতকাল বুধবার বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজসম্পদ মন্ত্রণালয়ের সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, মঙ্গলবার রাত ১১টায় বিদ্যুৎ উৎপাদনের পরিমাণ ছিল ১০ হাজার ১৩৭ মেগাওয়াট, যা এখন পর্যন্ত সর্বোচ্চ। এর আগে গত ১৯ মার্চ উৎপাদন ছিল ১০ হাজার ৮৪ মেগাওয়াট।

এবারের গ্রীষ্মে দেশে দৈনিক বিদ্যুতের চাহিদা নিরূপণ করা হয়েছে ১২ হাজার মেগাওয়াট। বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের হিসাব অনুযায়ী বুধবার দেশে বিদ্যুতের চাহিদা ছিল ১০ হাজার ৫০০ মেগাওয়াট।

কিন্তু সরকারের বিদ্যুৎ উপাদনের লক্ষ্য আরো উপরে জানিয়ে বিদ্যুৎ বিভাগের সচিব আহমেদ কায়কাউস বলেন, গত অক্টোবরে বিদ্যুৎ উৎপাদন হয় সর্বোচ্চ ৯ হাজার ৫০৭ মেগাওয়াট, অর্থাৎ আমরা ইতোমধ্যে আরো ৫০০ মেগাওয়াট অতিরিক্ত বিদ্যুৎ উৎপাদন করেছি। আমাদের সক্ষমতার যে নির্ণায়ক বা পরিচায়ক সেটা এখনো ঘটেনি। আমরা ন্যূনতম ১১ হাজার মেগাওয়াট বা এর বেশি বিদ্যুৎ উৎপাদন করতে পারব।

বিদ্যুৎ উৎপাদনের সক্ষমতা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে সরকার পর্যায়ক্রমে সরবরাহ ক্ষমতা বৃদ্ধি করছে জানিয়ে বিদ্যুৎ সচিব বলেন, এখন অনেকে বলেন গ্রামে সেভাবে সরবরাহ আসছে না। কেন আসছে না, এরও একটা ব্যাখ্যা আমি দিই। সেটি হচ্ছে আপনাকে যদি নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সরবরাহ করতে হয়, তাহলে আমাদের স্ট্যান্ডার্ড লাইন তৈরি করতে হবে। আমরা লাইনগুলোকে স্ট্যান্ডার্ড করে যাচ্ছি, একই সঙ্গে ঘরে ঘরে বিদ্যুৎ দিয়ে যাচ্ছি।

তিনি বলেন, অপশন কিন্তু দুটি- একটি হচ্ছে আপনার বাসায় কুপি বাতি জ্বলবে আমি লাইনটি স্ট্যান্ডার্ড করব, তারপর আপনাদের দেব। আর আরেকটি হচ্ছে, এখন আপনি কুপি বাতির সঙ্গে ৫-১০ ঘণ্টা বিদ্যুৎও চালাতে পারবেন। সঙ্গে লাইনগুলোকে স্ট্যান্ডার্ড করা হবে। আমি মনে করি দ্বিতীয় অপশনটাই ভালো। পর্যায়ক্রমে সেই কাজগুলো করে যাচ্ছি আমরা।

আগামী মাসে আরো বাড়তি বিদ্যুৎ যোগ হচ্ছে জানিয়ে সচিব বলেন, জুনে ভারত থেকে আরো ৫০০ মেগাওয়াট আমদানি করা হবে। সব মিলিয়ে জুনে বিদ্যুৎ উৎপাদনের সক্ষমতা আরো দুই হাজার মেগাওয়াট বেড়ে যাবে।

তিনি বলেন, আরো একটি সুখবর হলো এলএনজি জাহাজ উপকূলে পৌঁছেছে। এখন গ্যাসের অভাবে যে বিদ্যুৎকেন্দ্রগুলো বন্ধ ছিল সেগুলো সচল হবে। অর্থাৎ প্রয়োজনীয় চাহিদা মেটানোর জন্য উৎপাদন সক্ষমতা তৈরি করতে পারব।

লোডশেডিং নিয়ে তিনি বলেন, গত ১৫-২০ দিন কোনো লোডশেডিং দেইনি। ফোর্স লোডশেডিং হয়নি, যেটা হয়েছে সেটা ইন্টারাপশন। আর আসছে রমজানেও নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সরবরাহ থাকবে।

পাওয়ার সেলের তথ্য অনুযায়ী, বিদ্যুৎ উৎপাদন ক্ষমতা ১৬ হাজার ৪৬ মেগাওয়াট। গ্রাহক সংখ্যা দুই কোটি ৮৭ লাখ। বিদ্যুৎ সুবিধা পাওয়া জনগোষ্ঠী ৯০ শতাংশ। দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনার আওতায় সরকার ২০২১ সালের মধ্যে ২৪ হাজার মেগাওয়াট ও ২০৩০ সালের মধ্যে ৪০ হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উপাদন করবে।

পাওয়ার গ্রিড কোম্পানি অব বাংলাদেশ লিমিটেডের তথ্য অনুযায়ী, ২৪ এপ্রিল রাতে ঢাকা অঞ্চলে ৩ হাজার ৭০৪ মেগাওয়াট, চট্টগ্রামে এক হাজার ৩৫, কুমিল্লায় ৮৬৮, ময়মনসিংহে ৪৯৩, সিলেটে ৩৮৫, রংপুরে ৬১৮, রাজশাহীতে এক হাজার ৭০, খুলনায় এক হাজার ১৯৭ এবং বরিশালে ২৫৬ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপন্ন হয়।

এদিকে সরকারের তথ্য অনুযায়ী, বর্তমান সরকারের দুই মেয়াদে বিদ্যুতের উৎপাদন ক্ষমতা তিনগুণেরও বেশি বেড়েছে। সম্প্রতি বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ সংসদে জানান, বর্তমান সরকারের ক্ষমতা গ্রহণের পর থেকে এ পর্যন্ত ৮ হাজার ৮১৯ মেগাওয়াট ক্ষমতাসম্পন্ন ৮৮টি বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণ করা হয়েছে। সরকারের যুগোপযোগী বাস্তবসম্মত টেকসই পরিকল্পনা ও উদ্যোগ গ্রহণের ফলে বিদ্যুৎ খাতে এ উন্নয়ন হয়েছে।

তিনি বলেন, ২০০৯ সালের জানুয়ারি থেকে গত বছরের ডিসেম্বর পর্যন্ত ২১ হাজার ৬৫৯ মেগাওয়াট ক্ষমতাসম্পন্ন ১১৪টি বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণের চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছে। আর বর্তমানে মোট ১৩ হাজার ৭৭১ মেগাওয়াট ক্ষমতাসম্পন্ন ৪৭টি বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণাধীন। এ বিদ্যুৎকেন্দ্রগুলো ২০১৮ থেকে ২০২৪ সালের মধ্যে পর্যায়ক্রমে চালু হবে।

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads