• বৃহস্পতিবার, ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪২৮
ক্রেতায় মুখর বাবুরহাট

ক্রেতার ভিড়ে মুখর এখন দেশি কাপড়ের বৃহৎ বাজার নরসিংদীর শেখেরচর-বাবুরহাট

ছবি : বাংলাদেশের খবর

বাণিজ্য

ক্রেতায় মুখর বাবুরহাট

  • সুমন বর্মণ, নরসিংদী
  • প্রকাশিত ০৮ জুন ২০১৮

ক্রেতার ভিড়ে মুখর এখন দেশি কাপড়ের বৃহৎ বাজার নরসিংদীর শেখেরচর-বাবুরহাট। রোজার আগে থেকেই জমজমাট হয়ে ওঠে বেচাকেনা। ঈদের আগে নতুন কাপড়ের সমারোহও সাজিয়েছেন দোকানিরা। চলছে শেষ মুহূর্তের বেচাকেনা। ব্যবসায়ীরা জানিয়েছেন, ইতোমধ্যে বাজারের সাপ্তাহিক লেনদেন হাজার কোটি টাকা ছাড়িয়েছে।

তথ্যমতে, ১৯৩৪ সালে জমিদার হলধর সাহা প্রায় ১১ একর জমির ওপর হাটটি প্রতিষ্ঠা করেন। অল্প সময়ে বাবুরহাট কাপড়ের পাইকারি বাজার হিসেবে দেশজুড়ে খ্যাতি পায়। বর্তমানে এ হাটে ৫ হাজারেরও বেশি দোকান আছে। এক সময় হাট বসত শুধু রোববারে। এখন সপ্তাহে দুই দিন শুক্র ও শনিবার এ হাট বসে। তবে ঈদ সামনে রেখে সপ্তাহের প্রতিদিন চলছে কেনাবেচা।

শাড়ি, লুঙ্গি, থ্রিপিস, শার্ট পিস, প্যান্ট পিস, পাঞ্জাবির কাপড়, থান কাপড়, পপলিন কাপড়, ভয়েল কাপড়, সুতি কাপড়, শাটিং কাপড়, বিছানার চাদর, পর্দার কাপড় থেকে শুরু করে গামছা উৎপন্ন হয় স্থানীয় তাঁত ও সহায়ক শিল্প প্রতিষ্ঠান থেকে। একই সঙ্গে দেশের প্রসিদ্ধ টাঙ্গাইলের শাড়ি, জামদানি, কাতানসহ বিভিন্ন প্রকারের কাপড়ের সম্ভারে বাবুরহাটের সংগ্রহকে করেছে সমৃদ্ধ। এই হাট ঘিরে নরসিংদী জেলাসহ নারায়ণগঞ্জ ও গাজীপুরে গড়ে উঠেছে কয়েক লাখ তাঁত। একই সঙ্গে কয়েকশ’ সহায়ক শিল্প প্রতিষ্ঠান।

দরজায় কড়া নাড়া ঈদের কাপড় কিনতে দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে পাইকারি ব্যবসায়ীরা ভিড় জমিয়েছে বাবুরহাটে। হাটের প্রতিটি অলি-গলি ক্রেতা-বিক্রেতার পদচারণায় মুখর।

বাগেরহাট থেকে কাপড় কিনতে আসা ব্যবসায়ী অশোক সাহা বলেন, বাবুরহাটে ব্যবসার পরিবেশ নিরাপদ, একই স্থানে সকল প্রকার কাপড় পাওয়া যায়। মানে ভালো দামেও সাশ্রয়। তাই বছরের অন্যান্য সময়ের মতো ঈদের কাপড় কিনতে বাবুরহাটে এসেছি।

মিতু প্রিন্ট শাড়ির মালিক নোমান বলেন, আমরা এবার শাড়ির পাশাপাশি থ্রিপিসের দিকেও নজর দিয়েছি। এবারের ঈদে আমাদের শাড়ির পাশাপাশি ড্রিম, পিকে লোন, বাটার, শাটন, সিল্ক লোন, সুপার লোন থ্রিপিস অনেকটাই ক্রেতাদের নজরে এসেছে। আর তার দাম ক্রেতাদের সাধ্যের মধ্যে হওয়ায় এর বাজারও ভালো যাচ্ছে।

প্রিয়াঙ্কা প্রিন্ট শাড়ির মালিক সমীর সাহা বলেন, বাবুরহাটের কাপড়ের মান আর ডিজাইন ভালো হওয়ার কারণে এখানে কাপড় সবচেয়ে বেশি বিক্রি হয়। সব ধরনের কাপড়ের সমাহার এক জায়গায় হওয়ায় আর বাজারে পাইকারদের ক্ষেত্রে কোনো খাজনা না থাকায় পাইকারাও কেনাকাটায় স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করেন।

বৃষ্টি থ্রিপিসের মালিক আবু সাঈদ মুন্সি বলেন, ঈদ সামনে রেখে আমরা ওরগ্যান্ডি, বুটিকস, রাউন্ড, জয়পুরি, লোন ও সুতি ওড়নার থ্রিপিসের ওপর বিশেষ গুরুত্ব দিয়েছি। আর এগুলোর চাহিদাও বাজারে বেশ ভালো সাড়া পাচ্ছি।

পাকিজা ফেব্রিক্সের এজিএম শংকর সাহা বলেন, প্রতিটি উৎসবেই আমরা পোশাকে নতুনত্ব আনার চেষ্টা করি। এবারো তার ব্যতিক্রম হয়নি। এবার ঈদ সামনে রেখে আমরা নতুন ধরনের বাঙালি আনা শাড়ি, মৌ বিপি, ঢাকাইয়া বিপি, জারা ম্যাজিক, জামদানি, জারাজারা বিপি, বেনারসী বিপি শাড়ি সাড়ে আটশ’ থেকে বারশ’ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

আমানত শাহ গ্রুপের চেয়ারম্যান হেলাল মিয়া জানান, ঈদ সামনে রেখে আমরা নানা ধরনের লুঙ্গি বাজারজাত করেছি। আর সব শ্রেণির ভোক্তারা যেন তা ক্রয় করতে পারে সেদিকে খেয়াল রেখে এবারের ঈদে আমরা এমন লুঙ্গি বাজারজাত করেছি।

বাবুরহাট বণিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক মোশাররফ হোসেন বলেন, রাজনৈতিক অস্থিরতা আর প্রাকৃতিক দুর্যোগ না থাকায় বাবুরহাটের বিক্রি গত বছরের তুলনায় অনেকটাই বেড়েছে। ইতোমধ্যে বাজারের সাপ্তাহিক লেনদেন হাজার কোটি টাকা ছাড়িয়েছে।

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads