• বৃহস্পতিবার, ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪২৮
বেনাপোলে রাজস্ব আয়ে ঘাটতি ১৭৯ কোটি টাকা

২০১৭-১৮ অর্থবছরে বেনাপোল স্থলবন্দরে লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ১৭৯ কোটি ৬৪ লাখ টাকা রাজস্ব আদায় কম হয়েছে

ছবি সংগৃহীত

বাণিজ্য

অর্থবছর ২০১৭-১৮

বেনাপোলে রাজস্ব আয়ে ঘাটতি ১৭৯ কোটি টাকা

  • বেনাপোল প্রতিনিধি
  • প্রকাশিত ০৬ জুলাই ২০১৮

বেনাপোল কাস্টম হাউজে সদ্য সমাপ্ত অর্থবছরে (২০১৭-১৮) লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ১৭৯ কোটি ৬৪ লাখ টাকা রাজস্ব আদায় কম হয়েছে। জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) লক্ষ্যমাত্রা দিয়েছিল ৪ হাজার ১৯৫ কোটি ৮৮ লাখ টাকা। বিপরীতে আদায় হয়েছে ৪ হাজার ১৬ কোটি ২৪ লাখ টাকা। এ সময় ভারত থেকে আমদানি হয়েছে ১৮ লাখ ২ হাজার ২৮৪ টন বিভিন্ন ধরনের পণ্য।

এর আগে ২০১৬-১৭ অর্থবছরে রাজস্ব বোর্ডের লক্ষ্যমাত্রা ৩ হাজার ৭৬০ কোটি ৩০ লাখ টাকার বিপরীতে বছর শেষে আদায় হয়েছিল ৩ হাজার ৮০৫ কোটি ৭০ লাখ টাকা, যা লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে বেশি ছিল ৪৫ কোটি ৪০ লাখ।

২০১৫-১৬ অর্থবছরে লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৩ হাজার ১৪৩ কোটি টাকা। বছরের শেষ মুহূর্তে আবার তা কমিয়ে ২ হাজার ৮৫০ কোটি টাকা নির্ধারণ করা হয়। পরে ২ হাজার ৯৪০ কোটি টাকা আদায় করে উদ্বৃত্ত দেখানো হয়েছিল। এভাবে ২০১৩-১৪ অর্থবছরে লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ঘাটতি ছিল ১৩৪ কোটি ৭৩ লাখ টাকা। ২০১২-১৩ অর্থবছরে ঘাটতি ছিল ৪৫২ কোটি ৮৯ লাখ টাকা ও ২০১১-১২ অর্থবছরে ঘাটতি ছিল ১৯৪ কোটি টাকা।

বন্দর সংশ্লিষ্টরা বলেন, বন্দরে অবকাঠামোগত উন্নয়ন সমস্যা, পণ্যের নিরাপত্তা শঙ্কা ও কাস্টমস কর্তৃপক্ষের অযৌক্তিক হারে আমদানি পণ্যের ওপর শুল্ককর বাড়ানোর কারণে দিন দিন সঙ্কট বাড়ছে।

আমদানিকারক ব্যবসায়ী এজিএম এন্টারপ্রাইজের তমিজ উদ্দিন জানান, কাস্টমসের অযথা হয়রানি, পণ্যের দাম বাড়িয়ে দেওয়া, হঠাৎ এইচএসকোড পরিবর্তন করে বেশি ডিউটি আদায় করা, টেবিলে ঘুষ আর বন্দরে নিরাপত্তা সমস্যার কারণে আমদানি কমায় রাজস্ব আদায়ে বাধা সৃষ্টি হচ্ছে। হয়রানি বন্ধ ও ঘুষ কমলে এ পথে আরো আমদানি বাড়বে। কমবে দেশি বাজারে আমদানি পণ্যের দাম। ইতোমধ্যে অনেক আমদানিকারক পথে বসে গেছেন।

বেনাপোল সিঅ্যান্ডএফ এজেন্টস অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি মফিজুর রহমান সজন জানান, বর্তমান সরকারের আমলে বন্দরে অবকাঠামো উন্নয়ন হয়েছে। তবে উন্নয়ন প্রয়োজনের তুলনায় অনেক কম, যা আমদানি-রফতানি বাণিজ্যে মারাত্মকভাবে বাধা সৃষ্টি করছে। অবকাঠামো উন্নয়ন হলে বর্তমানে যে রাজস্ব আসছে তখন তার দ্বিগুণ আসবে বলে মতপ্রকাশ করেন তিনি।

বেনাপোল আমদানি-রফতানি সমিতির সিনিয়র সহসভাপতি আমিনুল হক জানান, দিন দিন আমদানি পণ্যের ওপর অযৌক্তিক হারে শুল্ককর বাড়ছে। এতে বৈধভাবে আমদানি কমে বাড়ছে শুল্ককর ফাঁকি দিয়ে পণ্য পাচার। শুল্কহার স্বাভাবিক পর্যায়ে রাখা হলে বৈধ পথে আমদানি বাড়বে। এতে বাড়বে রাজস্ব আয়।

বেনাপোল সিঅ্যান্ডএফ অ্যাসোসিয়েশনের বন্দরবিষয়ক সম্পাদক শাহাবুদ্দিন আহমেদ বলেন, গত দুই দশকে বেনাপোল বন্দরে আটটি অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় ব্যবসায়ীদের শত শত কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে। এসব ঘটনায় ক্ষতিপূরণ না পেয়ে অনেকের ব্যবসা বন্ধ হয়েছে। কেউ আবার এ পথে ব্যবসা বন্ধ করে অন্য বন্দরে গেছেন। আমদানি পণ্যের নিরাপত্তা নিশ্চিত হলে আবার ব্যবসা বাড়বে।

বেনাপোল কাস্টম হাউজের পরিসংখ্যান শাখার সহকারী রাজস্ব কর্মকর্তা মাহাবুব হোসেন রাজস্ব ঘাটতির বিষয়টি নিশ্চিত করেন।

বেনাপোল বন্দর পরিচালক (ট্রাফিক) আমিনুল ইসলাম জানান, বন্দরের অবকাঠামো উন্নয়নে নতুন জায়গা অধিগ্রহণ ও আমদানি পণ্যের নিরাপত্তায় সিসি ক্যামেরা স্থাপনের বিষয়টি প্রক্রিয়াধীন। বন্দরে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা এড়াতে বিভিন্ন ধরনের সতর্কতামূলক পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। এসব কার্যক্রম চালু হলে এ বন্দর দিয়ে আমদানির সঙ্গে রাজস্বও বাড়বে বলে জানান তিনি।

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads