• শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪২৮
ডিম-কাঁচা মরিচ সরবরাহে বৃষ্টির বাগড়া!

ডিম আর কাঁচা মরিচের দাম বেড়েছে

সংরক্ষিত ছবি

বাণিজ্য

ডিম-কাঁচা মরিচ সরবরাহে বৃষ্টির বাগড়া!

বাড়তি দামে বিক্রি হচ্ছে পেঁয়াজ ও মাছ

  • নিজস্ব প্রতিবেদক
  • প্রকাশিত ০৭ জুলাই ২০১৮

ঈদের পর থেকেই বাজারে অস্বাভাবিক বেড়েছে বেশ কিছু পণ্যের দাম। এগুলোর মধ্যে ডিম আর কাঁচা মরিচ অন্যতম। কারণ  দুই সপ্তাহের ব্যবধানে প্রতি হালি ডিমের দাম বেড়েছে ১০ টাকা পর্যন্ত। আর আগে ৬০ টাকায় বিক্রি হওয়া কাঁচা মরিচের কেজি এখন ১৬০ টাকা।

কারণ হিসেবে দুই পণ্যের পাইকারি ব্যবসায়ীরাই বৃষ্টিকে দায়ী করছেন। তারা বলছেন, বৃষ্টির কারণে রাজধানীতে পণ্যগুলোর সরবরাহ চাহিদার তুলনায় অনেক কম। এতে বেড়ে গেছে দাম। যদিও ব্যবসায়ীদের এ কারণকে অযৌক্তিক বলে মনে করছে বাজারের অধিকাংশ ক্রেতা। গতকাল কারওয়ান বাজারের পাইকারি আড়তে কথা হয় নিকটাত্মীয়ের বিয়ের বাজার করতে আসা এরশাদুল ইসলামের সঙ্গে। তিনি জানান, বিয়ের পাইকারি বাজার করতে ভোর থেকেই তিনি ঢুঁ মারছেন বিভিন্ন আড়তে। বাজারে কাঁচা মরিচের কোনো সরবরাহ সঙ্কট নেই। কিন্তু এরপরও প্রতি ঘণ্টায় পাইকারি বাজারে ৫-১০ টাকা করে দাম বাড়াচ্ছে এখানকার আড়তদাররা।

এমন অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে সে সময় কয়েকজন আড়তদারের সঙ্গে কাঁচা মরিচের দাম নিয়ে কথা বললে তারা জানান, দেশের বিভিন্ন এলাকায় বৃষ্টি হচ্ছে। এ বৃষ্টিতে পানি জমে মরিচক্ষেত নষ্ট হয়ে গেছে। এ কারণেই দেশের বিভিন্ন মোকামেই দাম বেশি।

তবে ঘণ্টায় ঘণ্টায় দাম বাড়ার বিষয় স্বীকার করে ওই বাজারের পাইকারি ব্যবসায়ী বাছেদ মোল্লা বলেন, প্রতিদিন এ বাজারে ৮-১০ ট্রাক মরিচ আসে। কিন্তু মাঝরাত পর্যন্ত যদি ট্রাকের সংখ্যা কম হয় তবে এর পর থেকেই দাম বাড়তে থাকে। সকাল পর্যন্ত সরবরাহ পর্যাপ্ত না হলেই শুরু হয় দাম বাড়ার খেলা। তখন অন্য বাজার থেকে মরিচ এনে যে যার মতো দামে বিক্রি করে।

একই ধরনের বৃষ্টির অজুহাতে ব্যবসায়ীরা বাড়িয়ে দিয়েছে ডিমের দাম। তবে এ ঘটনা এ বছর নতুন নয়। প্রতিবছরই বর্ষা এলে ডিমের দাম বাড়ে। তবে এবার বাড়ার হারটা বেশি। গত ১৫ দিনেই রাজধানীর বাজারে এখন প্রায় সব ধরনের ডিমের দাম বেড়েছে হালিতে ৮ থেকে ১০ টাকা। এতে খুচরা বাজারগুলোতে এখন এক হালি ফার্মের ডিম বিক্রি হচ্ছে ৩২ থেকে ৩৬ টাকা দরে। অথচ ঈদ বা তার আগেই এই ডিমের দাম ছিল ২৪ থেকে ২৬ টাকা।

ডিমের এ মূল্যবৃদ্ধির বিষয়টি উঠে এসেছে রাষ্ট্রায়ত্ত বিপণন সংস্থা ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশের (টিসিবি) বাজার বিশ্লেষণেও। তাদের তথ্যমতে, গত এক মাসের ব্যবধানে রাজধানীর বাজারগুলোতে প্রতি হালি ডিমের দাম বেড়েছে ১৩ দশমিক ২১ শতাংশ।

রাজধানীর বিভিন্ন বাজারের বিক্রেতারা বলেছেন, গত দুই সপ্তাহে কয়েক দফায় বেড়েছে ডিমের দাম। সর্বশেষ এখন প্রতি ডজন ফার্মের মুরগির ডিম কিনতে ভোক্তাদের খরচ করতে হচ্ছে ৯৫-১০০ টাকা, যা রোজায় ৭০-৭৫ টাকায় নেমে এসেছিল।

ডিমের আড়ত হিসেবে পরিচিত তেঁজগাও এলাকার পাইকারি ব্যবসায়ীদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, প্রতি ১০০ ডিম তারা বিক্রি করছেন ৭৫০ টাকায়। অর্থাৎ প্রতিটি ডিমের দাম পড়ছে সাড়ে সাত টাকা।

তারা জানান, ঈদের ছুটি শেষে যখন রাজধানীতে সবাই ফিরেছে এবং হোটেলগুলো খুলতে শুরু করেছে তখনই একটু একটু করে বাড়তে শুরু করে ডিমের চাহিদা। এ ছাড়া দেশের বিভিন্ন এলাকায় বৃষ্টি ও বন্যার কারণে সেসব এলাকার অভ্যন্তরীণ চাহিদা বেড়েছে। ফলে রাজধানীতে সরবরাহের টান পড়েছে। আগামী কয়েক সপ্তাহ এমন চলবে বলে জানান এ ব্যবসায়ীরা।

অন্যদিকে ঈদের পরে কিছুদিনের ব্যবধানে বাজারে ক্রেতার আনাগোনার সঙ্গে বেড়েছে আরো কিছু পণ্যের দাম। যার মধ্যে ঈদের আগের তুলনায় বাজারে এখন চাল, পেঁয়াজ, বিভিন্ন পদের সবজির ও মাছের দাম কেজিতে বড় মাছ ৫০ থেকে ১০০ টাকা আর ছোট মাছ ২০০ টাকা পর্যন্ত বাড়তি দামে বিক্রি হতে দেখা গেছে।

ঈদের আগে বাজারে ৩০ টাকা দরে পেঁয়াজ মিললেও গতকাল ক্রেতাকে প্রতি কেজি দেশি পেঁয়াজ ৫০ টাকা ও ভারতীয় পেঁয়াজ ৪০ টাকা কেজিতে কিনতে হয়েছে।

রাজধানীর শ্যামবাজারের পাইকাররা বলছেন, পাইকারি বাজারে পেঁয়াজের দামও বেড়েছে। ভারত থেকে পেঁয়াজের সরবরাহ কমায় বিদেশি পেঁয়াজের দাম যেমন বেড়েছে, তেমনি এর প্রভাব দেশি পেঁয়াজেও পড়েছে।

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads