• বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪২৯
মজুত প্রবণতায় বাড়ছে পেঁয়াজের দাম?

পেঁয়াজ

সংক্ষিত ছবি

বাণিজ্য

মজুত প্রবণতায় বাড়ছে পেঁয়াজের দাম?

  • নিজস্ব প্রতিবেদক
  • প্রকাশিত ১৪ জুলাই ২০১৮

দেশের বাজারে প্রতি সপ্তাহেই একটু একটু করে বাড়ছে পেঁয়াজের দাম। এক সপ্তাহ আগেও এর কারণ হিসেবে ভারতের ট্রাক মালিকদের ধর্মঘটকে দায়ী করেছিলেন ব্যবসায়ীরা। কিন্তু এ ধর্মঘট শেষে এখনো বাজারে কমেনি পণ্যটির দাম। এর আসল কারণ হচ্ছে ধর্মঘটের অজুহাতে আসন্ন ঈদুল আজহাকে কেন্দ্র করে মজুত প্রবণতায় পেঁয়াজের দাম বাড়ছে, এমনটা জানিয়েছে সংশ্লিষ্টরা।

ঈদের এখনো এক মাসের কিছু বেশি দিন বাকি। কিন্তু প্রতি বছর ঈদের দুই-তিন সপ্তাহ আগে থেকে বাড়তে থাকে পেঁয়াজের দাম। ফলে পেঁয়াজ মজুতের এখনই সঠিক সময়। সে সুযোগ কাজে লাগিয়ে অসাধু ব্যবসায়ীদের একটি গ্রুপ এখন বাজারে পেঁয়াজ না ছেড়ে তাদের মজুত গড়ে তুলছে। এতে বাজারে স্বাভাবিক সরবরাহ ব্যাহত হচ্ছে। আর এ মজুতের কারণে স্বাভাবিকভাবেই বেড়ে যাচ্ছে দাম।

কারওয়ার বাজারে পাইকারি পেঁয়াজ বিক্রেতারা জানিয়েছেন, তারা প্রতিদিন শ্যামবাজার থেকে পেঁয়াজ কেনেন। সেখানেই দেশের বড় পেঁয়াজের কারবার। এখন ওই এলাকার আড়তগুলোতে ভারতের পেঁয়াজের সরবরাহ ঠিক থাকলেও দেশি পেঁয়াজের ঘাটতি রয়েছে।

এতে মজুতের কোনো প্রমাণ মেলে কি না জানতে চাইলে আজাহার নামের এক বিক্রেতা বলেন, দেশি পেঁয়াজ অধিক সময় সংরক্ষণ সম্ভব। ফলে এখন মজুতকারীদের প্রথম পছন্দ দেশি পেঁয়াজ। এ কারণে দেশি পেঁয়াজের সরবরাহ কমে গেছে। আর প্রতিদিন আড়তে দেশি পেঁয়াজের দাম বাড়ছে।

আরেক ব্যবসায়ী বলেন, শুধু বড় ব্যবসায়ী নয়, ছোট ব্যবসায়ীরাও এখন পেঁয়াজ মজুত করে রাখছেন। কারণ দেশি পেঁয়াজ মজুতের এখন উপযুক্ত সময়। এখন পেঁয়াজ মজুত করলে নষ্ট হওয়ার সম্ভাবনা নেই। তবে ভারতের কাঁচা পেঁয়াজ এখন মজুত সম্ভব নয়, কিছু শুকনা পদের পেঁয়াজ মজুত হচ্ছে বলে জানান এ ব্যবসায়ী।

এ বিষয়ে শ্যামবাজার কৃষিপণ্য আড়ত বণিক সমিতির সভাপতি হাজী মো. সাঈদ বলেন, খুচরা ও ফড়িয়া ব্যবসায়ীরা অযথা আড়তদারদের দোষারোপ করেন। বাজারে তারাই একে অপরের যোগসাজশে কম দামে আড়ত থেকে পণ্য কিনে বেশি দামে বিক্রি করছেন।

মো. সাঈদ দাবি করেন, শ্যামবাজারে কোনো অতিরিক্ত পেঁয়াজের মজুত নেই। যদি মজুত থাকে তবে তা কৃষকের ঘরে রয়েছে।

এদিকে রাজধানীর খুচরা বাজারে গত সপ্তাহে ৪০-৪৫ টাকা কেজি দরে দেশি পেঁয়াজ মিললেও গতকাল এ পেঁয়াজ কিনতে গুনতে হয়েছে ৫০ টাকা। আর আমদানি করা ভারতীয় পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ৪০ টাকা কেজি, যা গত সপ্তাহে ছিল ৩০-৩৫ টাকা।

সরকারের বাজারদর তদারকি সংস্থা ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশ টিসিবির তথ্য বলছে, গত এক মাসের ব্যবধানে দেশে পেঁয়াজের দাম বেড়েছে ৩১ শতাংশ। আর বছর ব্যবধানে তা ৫৭ দশমিক ৪১ শতাংশ। গত বছর একই সময়ে দেশে পেঁয়াজের দাম ছিল ২২ থেকে ৩২ টাকা।

তবে কয়েকজন আমদানিকারকের সঙ্গে কথা বলে আরো জানা গেছে, ঈদ উপলক্ষে তারা প্রচুর পেঁয়াজ আমদানির জন্য এলসি খুলেছেন। ভারত থেকে সড়কপথে আমদানি করা এসব পেঁয়াজ বাজারজাত করতে সময় লাগে ১৫-২০ দিন। সে অনুযায়ী ঈদের আগে বাজারে এসব পেঁয়াজের সরবরাহ বাড়বে। ফলে অস্বাভাবিক দাম বাড়ার সম্ভাবনা কম।

দেশে বছরে পেঁয়াজের চাহিদা ২২ থেকে ২৪ লাখ টন। এর মধ্যে ১৮ থেকে ১৯ লাখ টন পেঁয়াজ দেশে উৎপাদন হচ্ছে। চাহিদার বাকি চার থেকে পাঁচ লাখ টন আমদানি করা হয়।

 

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads