যুক্তরাজ্যের ফার্মাসিউটিক্যালস কোম্পানি গ্লাসক্সোস্মিথক্লাইন (জিএসকে) বাংলাদেশে তাদের ওষুধের ব্যবসা গুটিয়ে নিলেও দেশের বাজারে এর কোনো প্রভাব পড়বে না বলে মনে করেন বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (বিডা) নির্বাহী চেয়ারম্যান কাজী আমিনুল ইসলাম।
তিনি বলেন, দেশি কোম্পানি গুলোর ভালো অবস্থানের কারণে জিএসকে বাংলাদেশের বাজারে ব্যবসায় খুব একটা সুবিধা করতে পারছিল না। লোকসান গুণছিল। তাই তারা ব্যবসা গুটিয়ে নিচ্ছে।
মঙ্গলবার রাজধানীর একটি পাঁচতারকা হোটেলে আমেরিকান চেম্বার অব কমার্স (অ্যামচেম) আয়োজিত ‘ফার্মাসিকিউটিক্যালস:দ্যা নেক্সট মাল্টি বিলিয়ন ডলার অপরচুনিটি ফর বাংলাদেশ’ শীর্ষক আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন।
অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন অ্যামচেমের প্রেসিডেন্ট মো. নূরুল ইসলাম। এতে বাংলাদেশের ওষুধ শিল্পের বর্তমান অবস্থা,সমস্যা ও সম্ভাবনা নিয়ে মুল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন ইনসেপ্টা ফার্মাসিকিউটিক্যালস চেয়ারম্যান ও ব্যবস্থাপনা পরিচালক আব্দুল মুক্তাদির।এছাড়া প্যানেল আলোচনায় অংশ নেন ইউনি হেলথ লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোসাদ্দেক হোসেন।
অনুষ্ঠানে কাজী আমিনুল বলেন,বাংলাদেশে জিএসকে ফার্মাসিকিউটিক্যালস এর ব্যবসা ভালো চলছিল না। তারা লোকসান করছিল। ফার্মাসিউটিক্যালস এর বাজারে তাদের দখল ছিল ১ শতাংশের মত। প্রতিষ্ঠানটি এখান থেকে কোনো ওষুধ রফতানিও করতো না। সুতরাং তারা গেলে কোনো সমস্যা নেই। তারা এখানে সুবিধা না করতে পেরেই ব্যবসা গুটাচ্ছে।
তিনি বলেন, প্রতিষ্ঠানটি তাদের লাভ বাড়াতে এবং বিভিন্ন দেশের মানুষকে শার্পার, টলার বানাতে হরলিক্সসহ অন্য পণ্যের ব্যবসাকেই গুরুত্ব দিচ্ছে। আর তারা যেসব ওষুধ বিক্রি করতো সেগুলোর অনেক বিকল্প ওষুধ এখন দেশের কোম্পানিগুলোই তৈরি করছে।
বিডার চেয়ারম্যান দেশের ওষুধ শিল্পের সম্ভাবনা ও সমস্যা নিয়ে বলেন,‘এদেশে সহজে শ্রমিক পাওয়া এই খাতের জন্য একটি বড় সুবিধা। এর সঙ্গে জ্ঞান ও প্রযুক্তির সংমিশ্রণ করতে হবে। কারণ এটা একটা বিকাশমান খাত। এখানে অনেক ষ্ট্যান্ডার্ড কোম্পানি গড়ে উঠেছে। সরকার রপ্তানিতে ২৫ শতাংশ প্রণোদনা দিচ্ছে। সরকারের মূল ফোকাসে রেখেছে ওষুধ খাত।
অনুষ্ঠানে মো. নূরুল ইসলাম বলেন,বিশ্ব বাজারে বাংলাদেশের ওষুধ শিল্পের সম্ভাবনা রয়েছে মাল্টি বিলিয়নয়ের। সরকারের সহযোগিতা, সেক্টরের উদ্দ্যোক্তাদের গ্রোথ ঠিক থাকলে ২০২৫ সালের মধ্যে এটা অর্জন সম্ভব।
মূল প্রবন্ধে আব্দুল মুক্তাদির বলেন,বাংলাদেশে ফার্মা সেক্টরের জন্য এখন অতিরিক্ত মানব সম্পদ রয়েছে। অনেক বড় বড় ফ্যাক্টরি তৈরি হচ্ছে যারা ভবিষ্যতে ভালো গ্রোথ তৈরি করবে। অনেক কোম্পানিই এখন ডব্লিউএইচও পিকিউ অনুসরণ করছে,যা আমাদের বৈশ্বিক বাজারে গুরুত্বপূর্ণ হিসেবে গড়ে তুলেছে।
মূল প্রবন্ধে আরো বলা হয়,এখনই অন্তত ৫-৭টি কোম্পানি রয়েছে যারা বিশ্বের সর্বোচ্চ কর্তৃপক্ষ থেকে অনুমোদন পেয়েছে। এই সংখ্যাটা খুব দ্রুত ২০ এ চলে যাবে। মুন্সিগঞ্জে এপিআই পার্কটা হয়ে যাবার পর এ খাতে আরো গতি আসবে। কারণ এখনই বাংলাদেশের কোম্পানিগুলো এমন কোনো ওষুধ নেই যে তৈরি করছে না।