• শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪২৯
নীতিমালার আওতায় আসছে জাতীয় উৎপাদনশীলতা পুরস্কার

সংগৃহীত ছবি

বাণিজ্য

নীতিমালার আওতায় আসছে জাতীয় উৎপাদনশীলতা পুরস্কার

  • কাওসার আলম
  • প্রকাশিত ২০ আগস্ট ২০১৮

নীতিমালার আওতায় আসছে জাতীয় উৎপাদনশীলতা পুরস্কার। পণ্যের গুণগত মান ও উৎপাদনশীলতায় অবদানের স্বীকৃতি দেওয়ার লক্ষ্যে ‘ন্যাশনাল প্রোডাক্টিভিটি অ্যান্ড কোয়ালিটি এক্সিলেন্স অ্যাওয়ার্ড’ চালু করে শিল্প মন্ত্রণালয়ের আওতাধীন ন্যাশনাল প্রোডাক্টিভিটি অর্গানাইজেশন (এনপিও)। ২০১১ সালে পুরস্কার প্রবর্তনের ঘোষণার ভিত্তিতে ২০১২ সাল থেকে জাতীয় এ পুরস্কারটি দেওয়া হচ্ছে। কিন্তু নীতিমালা না থাকার কারণে নানা ধরনের জটিলতা দেখা দেয়। সেসব জটিলতা কাটাতে নীতিমালা প্রণয়নের উদ্যোগ নেওয়া হয়।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, নীতিমালা না থাকার কারণে পুরস্কারপ্রাপ্ত প্রতিষ্ঠান প্রধান বা আবেদনকারীর বিমানবন্দরে ভিআইপি লাউঞ্জ ব্যবহার ও সচিবালয়ে প্রবেশের পরিচয়পত্র দেওয়ার বিষয়টি অগ্রাহ্য করে আসছে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ।

জানতে চাইলে যুগ্ম সচিব ও এনপিওর পরিচালক এসএম আশরাফুজ্জামান বাংলাদেশের খবরকে বলেন, পুরস্কারের জন্য একটি নীতিমালা প্রণয়নের কাজ চলছে। তবে এখনো এটি খসড়া পর্যায়ে রয়েছে। আগামী বছর নীতিমালাটি চূড়ান্ত হবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন তিনি।

নীতিমালা ছাড়া পুরস্কার দেওয়ার বিষয়ে জানতে চাইলে এসএম আশরাফুজ্জামান বলেন, নীতিমালা তৈরি করে তা চূড়ান্ত করা একটি সময়সাপেক্ষ বিষয়; সেজন্য তখন এটি করা হয়নি। নীতিমালা না থাকার বিভিন্ন সময়ে শিল্প মন্ত্রণালয়ের অনুমোদনক্রমে সার্কুলার জারি করে পুরস্কার দেওয়ার কাজটি সম্পন্ন করছে এনপিও। নীতিমালা তৈরি হলে পুরস্কার দেওয়ার বিষয়টি একটি ভিত্তির ওপর দাঁড়াবে বলেও মন্তব্য করেন তিনি।

এনপিও সূত্রে জানা গেছে, ২০১২ থেকে ২০১৭ সাল পর্যন্ত মোট পাঁচবার এ পুরস্কার দেওয়া হয়। রাজনৈতিক অস্থিরতার কারণে ২০১৪ সালে পুরস্কার দেওয়া হয়নি। ২০১৮ সালের জন্য পুরস্কার প্রদানে ইতোমধ্যে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান থেকে আবেদন সংগ্রহ করে সেগুলো যাচাই-বাছাইয়ের কাজ চলছে। আগামী নভেম্বর মাসের প্রথম সপ্তাহে বিজয়ীদের হাতে পুরস্কার তুলে দেওয়ার লক্ষ্যে কাজ করছে এনপিও। যেহেতু আগে থেকেই প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে, সেজন্য আগের নিয়মেই ২০১৮ সালে পুরস্কার দেওয়া হবে। নীতিমালা চূড়ান্ত করে আগামী বছর অর্থাৎ ২০১৯ সাল থেকে নীতিমালা অনুযায়ী পুরস্কার দেওয়া হবে।

‘ন্যাশনাল প্রোডাক্টিভিটি অ্যান্ড কোয়ালিটি এক্সিলেন্স অ্যাওয়ার্ড নীতিমালা-২০১৮’ নামে নীতিমালা প্রণনয় করা হচ্ছে। ইতোমধ্যে নীতিমালার একটি খসড়াও প্রস্তুত করা হয়েছে।

খসড়ায় বলা হয়েছে, সরকার ২০১১ সালের ২ অক্টোবর পণ্য ও সেবার গুণগত মান ও উৎপাদনশীলতা উন্নয়নের লক্ষ্যে শ্রেষ্ঠ শিল্প ও সেবা প্রতিষ্ঠানকে ‘ন্যাশনাল প্রোডাক্টিভিটি অ্যান্ড কোয়ালিটি এক্সিলেন্স অ্যাওয়ার্ড’ প্রবর্তনের ঘোষণা দেয়। ওই অ্যাওয়ার্ড দেওয়ার বিষয়টি স্বচ্ছ ও জবাবদিহিতার আওতায় আনার লক্ষ্যে এ নীতিমালা প্রণয়ন করা হলো।

নীতিমালায় পুরস্কার দেওয়ার ক্ষেত্র নির্ধারণের বিষয়ে বলা হয়েছে- শিল্প, সেবা ও কৃষিক্ষেত্রে পণ্যের গুণগত মান ও উৎপাদনশীলতার অবদানের জন্য বৃহৎ, মাঝারি, ক্ষুদ্র, মাইক্রো, কুটির, রাষ্ট্রায়ত্ত শিল্প ও বিভিন্ন ট্রেডবডি/অ্যাসোসিয়েশনকে ন্যাশনাল প্রোডাক্টিভিটি অ্যান্ড কোয়ালিটি এক্সিলেন্স অ্যাওয়ার্ড দেওয়া হবে। উল্লিখিত ৭টি ক্যাটাগরির প্রতিটিতে ৩টি করে মোট ২১টি পুরস্কার দেওয়া হবে। তবে এনপিও মন্ত্রণালয়ের অনুমোদনক্রমে ক্ষেত্র হ্রাস বা বৃদ্ধি করতে পারবে বলে খসড়ায় বলা হয়েছে। প্রতিবছর মার্চের মধ্যে অ্যাওয়ার্ডের জন্য আবেদন গ্রহণ করা হবে এবং একটি নির্ধারিত ফরমে ও নির্ধারিত মূল্য পরিশোধ করে প্রতিষ্ঠানকে আবেদন করতে হবে।

খসড়ায় আরো বলা হয়েছে, বাংলাদেশে ব্যবসায় নিয়োজিত যেকোনো ধরনের প্রতিষ্ঠান আবেদন করতে পারবে। আবেদনকারী প্রতিষ্ঠানকে কমপক্ষে তিন বছরের জন্য উৎপাদন বা সেবা কার্যক্রমের সঙ্গে সম্পৃক্ত থাকতে হবে। কোনো ধরনের কর খেলাপি, ঋণখেলাপি, নৈতিক স্খলনের জন্য কোনো আদালত বা ট্রাইব্যুনাল কর্তৃক সাজাপ্রাপ্ত হলে আবেদন করতে পারবে না। এছাড়া পুরস্কারপ্রাপ্ত প্রতিষ্ঠান পরবর্তী দুই বছরের জন্য আবেদন করতে পারবে না।

আবেদনপত্র মূল্যায়নের জন্য শিল্প মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিবের নেতৃত্বে ১৩ সদস্যবিশিষ্ট একটি কমিটি কাজ করবে। আর শিল্প মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব বা সচিবের নেতৃত্বে ৭ সদস্যবিশিষ্ট একটি জুরি বোর্ড থাকবে। প্রাপ্ত নম্বরের ভিত্তিতে জুরি বোর্ড পুরস্কার বিজয়ীদের তালিকা চূড়ান্ত করবে এবং সরকারি গেজেট প্রজ্ঞাপনের মাধ্যমে তালিকা প্রকাশ করা হবে।

খসড়া নীতিমালায় বিজয়ী প্রতিষ্ঠানের জন্য পুরস্কার হিসেবে যেসব সুপারিশ করা হয়েছে সেগুলো হলো- ন্যাশনাল প্রোডাক্টিভিটি অ্যান্ড কোয়ালিটি এক্সিলেন্স অ্যাওয়ার্ড ট্রফি, সনদপত্র, তিন বছর পাবলিসিটির জন্য অ্যাওয়ার্ডের লোগোর ব্যবহার, অ্যাওয়ার্ডপ্রাপ্ত প্রতিষ্ঠান প্রধান বা আবেদনকারীকে সরকারের অনুমোদনক্রমে বিমানবন্দরে ভিআইপি লাউঞ্জ ব্যবহারের সুযোগ ও সচিবালয়ে প্রবেশের পরিচয়পত্র প্রদান।

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads