• শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪২৮
দশ বছরে ভারতের সঙ্গে বাণিজ্য ঘাটতি ৪৫ বিলিয়ন ডলার

চট্টগ্রাম সমুদ্র বন্দর

সংগৃহীত ছবি

বাণিজ্য

দশ বছরে ভারতের সঙ্গে বাণিজ্য ঘাটতি ৪৫ বিলিয়ন ডলার

  • সাইদ আরমান
  • প্রকাশিত ২৫ সেপ্টেম্বর ২০১৮

গত দশ অর্থবছরে প্রতিবেশী দেশ ভারতের সঙ্গে বাংলাদেশের বাণিজ্য ঘাটতি দাঁড়িয়েছে ৪৫ বিলিয়ন ডলার। ২০০৮-০৯ অর্থবছর থেকে সর্বশেষ ২০১৭-১৮ অর্থবছরে এই বিপুল পরিমাণ বাণিজ্য ঘাটতি দেখা দিয়েছে। এ সময় ভারত বাংলাদেশে রফতানি করেছে ৫২ দশমিক ১৭ বিলিয়ন ডলারের পণ্য। প্রতি ডলার ৮৩ টাকা ধরে বাংলাদেশি মুদ্রায় তা দাঁড়ায় ৪ লাখ ৩৩ হাজার কোটি টাকা, যা বাংলাদেশের সর্বশেষ বাজেটের কাছাকাছি। বিপরীতে ভারতে আমাদের রফতানি দাঁড়িয়েছে দশ বছরে ৫ দশমিক ১৭ বিলিয়ন ডলার, যা বাংলাদেশি মুদ্রায় ৪২ হাজার ৪৯৬ কোটি টাকা।

trade deficit

বাংলাদেশ ব্যাংক ও রফতানি উন্নয়ন ব্যুরোর তথ্য পর্যালোচনা করে দেখা গেছে, ভারতের বাজারে বাংলাদেশ যে পরিমাণ পণ্য রফতানি করে তার দশগুণ বেশি আমদানি করা হচ্ছে। এমন ভারসাম্যহীন ও বড় বাণিজ্য ঘাটতির মধ্যে চার দিনের সফরে ঢাকায় এসেছেন ভারতের শিল্প ও বাণিজ্যমন্ত্রী সুরেশ প্রভু। গতকাল রাতে তিনি পাঁচ সদস্যের একটি দল নিয়ে বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদের আমন্ত্রণে ঢাকায় আসেন।

বাংলাদেশ ব্যাংকের পরিসংখ্যান বলছে, প্রতিবছর ধারাবাহিকভাবে দেশটির সঙ্গে বাংলাদেশের বাণিজ্য ঘাটতি বাড়ছে। সর্বশেষ ২০১৭-১৮ অর্থবছরে ভারত ও বাংলাদেশের দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য দাঁড়িয়েছে সাড়ে ৯০০ কোটি ডলার। এর মধ্যে ভারত থেকে আমদানিতে গেছে ৮৬১ কোটি ডলার। বিপরীতে দেশটিতে রফতানির পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ৮৭ কোটি ডলার।

বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা গতকাল সোমবার জানিয়েছেন, ভারতের শিল্প ও বাণিজ্যমন্ত্রীর ঢাকা সফরকালে বাংলাদেশ সরকারের সঙ্গে তাদের আলোচনার ইস্যুগুলো চূড়ান্ত করা হয়েছে। চার দিনের সফরে গতকাল রাতে স্ত্রীকে নিয়ে সুরেশ প্রভু ঢাকায় এসেছেন।

তারা বলছেন, ভারসাম্যহীন বাণিজ্য ঘাটতির মধ্যে ২০১৭ সালের জানুয়ারিতে দেশটি বাংলাদেশের পাটজাত পণ্য রফতানিতে অ্যান্টিডাম্পিং আরোপ করেছে। অথচ ভারতে যেসব পণ্য রফতানি করা হয় তার মধ্যে প্রথম হচ্ছে পাটজাত পণ্য। কিন্তু দেশটি বাংলাদেশের কাঁচা পাট আমদানি করতে চায়। তবে বাংলাদেশ তাতে রাজি নয়। ফলে সুরেশ প্রভুর এই সফরে ঢাকার পক্ষ থেকে পাটজাত পণ্যে অ্যান্টিডাম্পিং শুল্ক প্রত্যাহারের আহ্বান জানানো হবে।

এছাড়া দুই দেশের যৌথ ব্যবস্থাপনায় সীমান্ত হাটগুলো নিয়ে আলোচনা করতে চায় বাংলাদেশ। বর্তমানে চারটি সীমান্ত হাট চলছে। আরো ছয়টি চালুর প্রক্রিয়ায় রয়েছে। নতুন করে আরো ছয়টি খোলার ব্যাপারে এরই মধ্যে নীতিগত সিদ্ধান্ত হয়েছে। নতুন এসব সীমান্ত হাট কোথায় খোলা হবে সেসব নিয়ে আলোচনা হবে।

বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা বলছেন, ভারত বাংলাদেশের বিএসটিআইয়ের দেওয়া সনদ অনেক সময় গ্রহণ করতে চায় না। এ বিষয়টিও ভারতের শিল্প ও বাণিজমন্ত্রীকে জানিয়ে সুরাহার তাগিদ দেওয়া হবে সফরকালে।

জানতে চাইলে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব শফিকুল ইসলাম বাংলাদেশের খবরকে বলেন, ভারতের সঙ্গে আমাদের দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য ও অর্থনৈতিক সম্পর্ক চমৎকার। দেশটি থেকে আমরা বিপুল পরিমাণ পণ্য আমদানি করি। চীনের পর দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ভারত থেকে আমাদের আমদানি। কিছু সীমাবদ্ধতার কারণে আমাদের রফতানি বাড়ছে না। সেগুলো সুরেশ প্রভুর এই সফরকালে আলোচনায় উঠে আসবে।

রফতানি উন্নয়ন ব্যুরো-ইপিবির হিসাব মতে, ভারত অ্যান্টিডাম্পিং শুল্ক আরোপের পর দেশটিতে বাংলাদেশি পাটপণ্য রফতানি আয় ব্যাপকভাবে কমে গেছে। ভারতে বাংলাদেশি পণ্যের মধ্যে সবচেয়ে বেশি রফতানি হয় পাট ও পাটপণ্য। পাটপণ্যের রফতানি কমে যাওয়ায় প্রতিবেশী দেশটিতে বাংলাদেশের মোট রফতানি আয়ও কমেছে।

বাংলাদেশি পাটপণ্যের দ্বিতীয় বড় বাজার ভারত। ২০১৭ সালের জানুয়ারি মাসে দেশটি বাংলাদেশি পাট সুতা, চট ও চটের বস্তায় রফতানির ওপর প্রতিষ্ঠানভেদে টনপ্রতি ১৯ থেকে ৩৫২ ডলার পর্যন্ত অ্যান্টিডাম্পিং শুল্ক আরোপ করে।

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads