• বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪২৯

সংগৃহীত ছবি

বাণিজ্য

খনন করা হবে ১০০ নদী

৩৫ ড্রেজার কিনতে সাড়ে ৪ হাজার কোটি টাকার প্রকল্প

  • জাহিদুল ইসলাম
  • প্রকাশিত ২২ অক্টোবর ২০১৮

নাব্য ধরে রাখতে দেশের ছোট-বড় মিলিয়ে ১০০ নদী খনন করা হবে। এর ফলে সারা বছর নৌযান চলবে আরো প্রায় ৮ হাজার কিলোমিটার নদীপথে। বিশাল এ কর্মযজ্ঞ পরিচালনা করতে ৩৫টি ড্রেজার কেনা হচ্ছে। পাশাপাশি কেনা হবে বিভিন্ন ধরনের সহায়ক যন্ত্রপাতি ও আসবাব। এ লক্ষ্যে প্রায় সাড়ে চার হাজার কোটি টাকা ব্যয় ধরে একটি প্রকল্প নিচ্ছে সরকার। প্রকল্পটি অনুমোদনের জন্য আগামীকাল মঙ্গলবার জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) সভায় উপস্থাপন করা হবে। পরিকল্পনা কমিশন সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে।

সূত্র জানায়, নদীপথ ড্রেজিংয়ে চলমান প্রকল্প ও প্রক্রিয়াধীন আরো কয়েকটি প্রকল্প বাস্তবায়ন নিশ্চিত করতে এসব যন্ত্রপাতি কিনতে চায় সরকার। এ লক্ষ্যে নৌপরিবহন মন্ত্রণালয় ‘৩৫টি ড্রেজার ও সহায়ক জলযানসহ আনুষঙ্গিক সরঞ্জামাদি সংগ্রহ এবং প্রয়োজনীয় অবকাঠামো নির্মাণ’ শীর্ষক প্রকল্পটি প্রস্তাব করেছে। একনেকের অনুমোদন পেলে প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করবে বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআইডব্লিউটিএ) ২০২৩ সালের মধ্যে প্রকল্পটির কাজ শেষ করার সময়সীমা বেঁধে দেওয়া হবে।

প্রকল্পটির মূল কার্যক্রমের মধ্যে রয়েছে ৩৫টি ড্রেজার সংগ্রহ। এর মধ্যে রয়েছে ১২ থেকে ২৮ ইঞ্চি মাপের ড্রেজার রয়েছে। একই সঙ্গে ৩৫টি কাটার সাকশন ড্রেজার ক্রেনবোট, ৩৫টি অফিসার ও ক্রু হাউজবোট, পাইপ কেরিং ডার্ম্ব বার্জ ১৫টি, ১৭টি বোলার্ড পুলের টাগবোট সংগ্রহ করা হবে। এ ছাড়া ৫টি করে ওয়েল ও ওয়াটার বার্জ, ১০টি সার্ভে ওয়ার্কবোট, ২টি ইন্সপেকশন ভেসেল, ১টি কেবিন ক্রুুজার সংগ্রহ, ৮৬ হাজার বর্গমিটার অফিসার ও স্টাফ কোয়ার্টার এবং ডরমিটরি নির্মাণ করা হবে প্রকল্পটির আওতায়।

প্রকল্পের প্রস্তাবনায় বলা হয়েছে, দেশে ছোট-বড় মিলে চার শতাধিক নদী রয়েছে। এসব নদীতে বছরে এক লাখ ১০ হাজার কোটি টন পলি জমা হয়। ফলে নদীর স্র্রোত ও পানিধারণের ক্ষমতা কমে আসে। গতিপথ পরিবর্তন হয়ে নদীভাঙনের ঘটনা ঘটে। পর্যাপ্ত খনন যন্ত্রপাতির অভাবে নদীগুলো ঠিকমতো খনন সম্ভব হচ্ছে না। গভীরতা কমে এসব নদীতে জলযান চলাচল ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়েছে। এ অবস্থায় দেশের প্রধান নৌরুটগুলোর উন্নয়নে প্রকল্পটি প্রস্তাব করা হয়েছে।

এ বিষয়ে বিআইডব্লিউটিএ’র সদস্য মো. শহিদুল ইসলাম জানান, নাব্য বজায় রাখতে দেশের সব নদী খনন করা প্রয়োজন। বিআইডব্লিউটিএ’র আওতায় থাকা নদী খননে দুই শতাধিক ড্রেজার প্রয়োজন। ড্রেজার সঙ্কটে নদী খনন সম্ভব হচ্ছে না। তা ছাড়া আগের ড্রেজারগুলো ছোট আকারের। বড় নদী খননে আরো বড় ড্রেজার লাগবে। এ জন্য বিভিন্ন ধরনের ড্রেজার কেনা হবে। এ ছাড়া আরো কিছু ড্রেজার কেনার প্রক্রিয়া চলছে বলেও তিনি জানান।

প্রকল্পের প্রস্তাবনায় নৌপরিবহন মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, নৌরুট চলাচল নির্বিঘ্ন রাখতে কাজ করে বিআইডব্লিওটিএ। পর্যাপ্ত ড্রেজার ও সহায়ক জলযান না থাকায় চাহিদা অনুযায়ী ড্রেজিংকাজ সম্পন্ন হচ্ছে না। নাব্য সঙ্কটে নৌরুট ব্যবহার ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পরেছে। অন্যদিকে প্রতিবেশী কয়েকটি দেশ আন্তর্জাতিক নৌরুট চালুর উদ্যোগ নিচ্ছে। দেশের নদীগুলো আন্তর্জাতিক নৌপথের আওতায় এলে ব্যবসা-বাণিজ্য বাড়বে। এসব বিবেচনায় প্রকল্পটি প্রস্তাব করা হয়েছে।

এর আগে বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ড বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের সমন্বয়ে বাংলাদেশের নদী ড্রেজিং নিয়ে একটি সম্ভাব্যতা যাচাই প্রতিবেদন করে। এতে বলা হয়, দেশের প্রধান ও মাঝারি নদীগুলো ক্যাপিটাল ড্রেজিংয়ের আওতায় আনতে ২১৬টি কাটার সাকশন ড্রেজার প্রয়োজন হবে। বিআইডব্লিউটিএ, বুয়েট ও এমআইএসটির প্রতিনিধিদের সমন্বয়ে গঠিত কমিটির সুপারিশের আলোকে প্রকল্পটি প্রণয়ন করা হয়েছে।

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads