• বুধবার, ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪২৯
ভিড় আছে বিক্রি নেই

বাণিজ্য মেলার চিত্র

ছবি : বাংলাদেশের খবর

বাণিজ্য

ভিড় আছে বিক্রি নেই

  • নিজস্ব প্রতিবেদক
  • প্রকাশিত ১৩ জানুয়ারি ২০১৯

বাণিজ্যমেলা শুরুর পর প্রথম ছুটির সময় ছিল গত দুদিন। অন্য বছর ছুটির দিনে রাজধানীর শেরেবাংলা নগরের আন্তর্জাতিক বাণিজ্যমেলা কেন্দ্রে থাকত লাখো মানুষের ভিড়। সে তুলনায় এবার কিছুটা ব্যতিক্রম। ভিড় বাড়লেও সেটা কাঙ্ক্ষিত মাত্রায় নয়। যারা এসেছিলেন তাদের বড় অংশই ঘুরতে এসেছেন। কেনাকাটায় ব্যস্ত মানুষের সংখ্যা ছিল খুব কম। বিক্রি তেমন না থাকায়  ব্যবসায়ীরা  ছিলেন কিছুটা  বিমর্ষ।

তবে আয়োজকরা বলছে, শুরুর পর যেকোনো দিনের থেকে গত দুদিন (শুক্র ও শনিবার) মানুষের সমাগম বেশি হয়েছিল। আর শুরুর সময় বলে অন্য সময়ের ছুটির দিনের তুলনায় সেটা কম। তবে ক্রমেই জমে উঠছে মেলা। শেষ সময়ের ছুটির দিনগুলোয় লাখো মানুষের ঢল থাকবে। 

দুদিন মেলা ঘুরে দেখা গেছে, দর্শনার্থীদের অধিকাংশ পরিবার, বন্ধু, আত্মীয় নিয়ে এসেছিলেন। এদের একজন বেসরকারি কোম্পানির কর্মকর্তা ফরিদুল হক। তার সঙ্গে ছিলেন পরিবারের বেশ কয়েকজন সদস্য। তিনি বললেন, বছরে একবার এ মেলায় আসতেই হয়। এটা একটা পারিবারিক উৎসবে পরিণত হয়েছে। এখন পরিবার নিয়ে ঘুরতে এসেছি। সকাল থেকে সব স্টল ঘুরলাম, অনেক কিছু দেখলাম। প্রয়োজনীয় কিছু কিনতে হলে শেষের দিকে আসব। সে সময় বিভিন্ন ছাড় থাকে।

পাকিস্তানি একটি স্টলে দেখা গেছে উৎসুক মানুষের ভিড়। তারা যন্ত্রে সবজি কাটা দেখতে জড়ো হন। প্রতিবছর এ বিদেশি স্টল মেলায় থাকে। সেখানে কথা হয় দেশটির নাগরিক জাফর আলীর সঙ্গে। তিনি প্রতিবেদককে বলেন, ছুটির দিন হিসেবে ক্রেতা নেই। শেষ দিকে মেলায় ভিড় বাড়বে বলে আশাবাদী তিনি। 

ভারত, থাইল্যান্ড, মালয়েশিয়ার গহনা ও প্রসাধনী দোকানে ভিড় ছিল চোখে পড়ার মতো। ইরানি কার্পেটের দোকানেও ক্রেতাদের বেশ সমাবেশ দেখা গেছে। তবে বিদেশি অনেক স্টল এখনো খালি। আবার অনেক স্টলে প্রস্তুতির কাজ চলছে। এতে অখুশি কিছু ক্রেতা। ইমতিয়াজ নামের একজন শিক্ষার্থী বলেন, এখনো মেলা শতভাগ সম্পূর্ণ নয়। বিদেশিরা মেলায় এখনো আসেনি। এ কারণে জমেনি। কর্তৃপক্ষ এসব বিষয়ে উদাসীন।

এবারের বাণিজ্যমেলায় সব মিলিয়ে ২২ দেশের ৫২ প্রতিষ্ঠান অংশ নিয়েছে। দেশগুলো হলো থাইল্যান্ড, ইরান, তুরস্ক, শ্রীলঙ্কা, মালদ্বীপ, নেপাল, চীন, মালয়েশিয়া, ভিয়েতনাম, যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, ভারত, পাকিস্তান, হংকং, সিঙ্গাপুর, মারিশাস, দক্ষিণ কোরিয়া, দক্ষিণ আফ্রিকা, জার্মানি, সুইজারল্যান্ড, অস্ট্রেলিয়া ও জাপান। সব মিলে মেলায় স্টল ও প্যাভিলিয়নের সংখ্যা ৬০৫টি।

মেলায় কিছু বিশ্রামের জায়গা, মা ও শিশুকেন্দ্র, ফুলের বাগান, শিশুপার্ক রয়েছে। বন্ধুদের নিয়ে যারা এসেছেন, সবাই মিলে ঘুরে বেড়াচ্ছেন এদিক-ওদিক। আর তরুণ-তরুণীর অনেকে ব্যস্ত সেলফিতে। এ স্টল, ও স্টল ঘুরেফিরে তারা সেলফি তুলছে।

এবারের বাণিজ্যমেলার মূল ফটক তৈরি করা হয়েছে মেট্রো রেলের আদলে। গতবারের মতো এবারো আছে বঙ্গবন্ধু প্যাভিলিয়ন। এর সামনে সারি সারি সাজানো নৌকা। ভেতরেও এবার স্থান বেশি। সেখানে রয়েছে অনেক দর্শনার্থী। সেখানে এক কর্মকর্তা বলেন, সকাল থেকে দর্শনার্থীদের তেমন উপস্থিতি না থাকলেও জুমার নামাজের পর থেকে আসতে শুরু করে দর্শনার্থীরা।

মেলায় বিভিন্ন স্টলের বিক্রেতাদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, এখনো বেচা-বিক্রি শুরু হয়নি। শুধু খাবারের দোকানগুলোয় বিক্রি চলছে। মানুষ এসে দেখছে সব। আর সব স্টল, প্যাভিলিয়নে সব ধরনের পণ্য এখন পর্যন্ত প্রদর্শন করা সম্ভব হয়নি। আগামীকাল (সোমবার) না হলেও পরশু দিন থেকে মেলা একেবারে পরিপাটি থাকবে।

এদিকে মেলা ঘিরে প্রচুর শিক্ষার্থীর কর্মসংস্থানের সুযোগ তৈরি হয়েছে। আয়োজক রফতানি উন্নয়ন ব্যুরো হিসেবে সেটা প্রায় ৪ হাজার। মাসব্যাপী বাণিজ্যমেলা প্রতিদিন সকাল ১০টা থেকে রাত ১০টা পর্যন্ত কাজ করছে এসব শিক্ষার্থী। গতকালও বিভিন্ন স্টলে তাদের সরব উপস্থিতি লক্ষ করা গেছে।

 

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads