• বৃহস্পতিবার, ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪২৮
জমে উঠেছে খেজুর গুড়ের হাট

কলারোয়ার খোরদো বাজারে জমে উঠেছে খেজুরের গুড় বা পাটালির হাট

ছবি : বাংলাদেশের খবর

বাণিজ্য

জমে উঠেছে খেজুর গুড়ের হাট

  • কলারোয়া (সাতক্ষীরা) প্রতিনিধি
  • প্রকাশিত ২০ জানুয়ারি ২০১৯

কলারোয়ার খোরদো বাজারে জমে উঠেছে খেজুরের গুড় বা পাটালি বেচাকেনার হাট। প্রাচীন যুগ থেকে এই বাজর গুড়ের হাট নামে পরিচিত। শীতের মৌসুমে বাজারে খেজুরের গুড় ও পাটালি আসা শুরু হয়। দেশ-বিদেশ থেকে গুড়ের বেপারিরা বাজারে গুড় কেনার আগাম ঘরভাড়া নেয়। সেজন্য এই মৌসুম আসলেই দেখা যায় খেজুর গাছের গাছিদের ব্যস্ততা দৃশ্য।

খেজুর গাছ কাটা থেকে শুরু করে রস আহরণ করে সেই রস থেকে গুড় তৈরি করা পর্যন্ত বেশ ব্যস্ত সময় পার করে থাকে এ জনপদের মানুষেরা। গ্রামাঞ্চলে খেজুর গাছিরা নিজেদের প্রয়োজন মিটিয়ে বাড়তি উপার্জনের জন্য তারা খেজুরের রস আগুনে জ্বালিয়ে তৈরি করে গুড় ও গুড় থেকে তৈরিকৃত পাটালি। গুড় ও পাটালি স্থানীয় বাজারে চাহিদা মিটিয়ে গুড় বা পাটালি চলে যাচ্ছে দেশের বিভিন্ন জেলা শহরেও। খোরদো বাজারের খোরদো-চাকলা ব্রিজ সংলগ্ন গুড়ের হাট সপ্তাহে দু’দিন বৃহস্পতিবার ও রোববার বসে। কপোতাক্ষের তীর ঘেষা খোরদো বাজারস্থ ব্রিজের মুখ সংলগ্ন রাস্তার ধারে এ হাট সত্যি চোখে পড়ার মতো। শীতের মৌসুমে কলারোয়া উপজেলার অন্যতম প্রধান এ খেজুর গুড়ের হাট বেশ জমজমাট হয়ে থাকে বলে অনেকে জানিয়েছেন। স্থানীয়রা জানিয়েছেন- কলারোয়ার খেজুরের রসের রয়েছে আলাদা খ্যাতি বা জস। সেই খেজুরের রস জ্বালিয়ে তৈরি করা হয় গুড় ও পাটালি। উপজেলার খোরদো বাজারে খেজুর গুড় ও পাটালির হাটে গুড় ও পাটালি বিক্রি করতে আসেন পার্শ্ববর্তী যশোর জেলার মনিরামপুর ও কলারোয়া উপজেলার বিভিন্ন অঞ্চলের প্রায় ৩০/৩৫ টি গ্রামের খেজুর গাছের গাছিরা। গুড় বিক্রি করতে আসা দেয়াড়া গ্রামের নাজিম উদ্দিন দফাদার ও জব্বার দফাদার নামের খেজুর গাছি জানান-এখনতো আগের মতো গাছ নেই। বিলুপ্তির পথে খেজুর গাছ। তাই রস এখন কম সংগ্রহ করা হয়, যা সংগ্রহ করতে পারি তাতে খরচটা কোন রকম বেঁচে থাকে। তারপর বর্তমান বাজারে এক ভাড় গুড়ের দামও কম পাওয়া যায়। যেটা কষ্ট এবং জ্বালানি খরচ হিসেবে তুলনামূলকভাবে কম। একই ভাবে মনিরামপুরের চাকলা গ্রামের আতিয়ার রহমান জানান-ব্যাপারিরা গুড়ের দাম কম বলে। যে দাম বলে, সে দামে বিক্রয় করলে লাভ তো দূরে থাক, কষ্টের মুল্যও হবে না। দক্ষিনাঞ্চল আসা ব্যাপারিরা দাবি করেন গাছিরা তাদের সঠিক মূল্য পাচ্ছে। তারা  আরো বলেন গত বারের চেয়ে এ বছর গুড়ের দাম অনেক বেশি। গুড়ের ব্যাপারি হুমায়ুন কবির জানান, এ বছর গুড়ের দাম বেশি। গত বছর যে গুড়ের ভাড় ছিলো ৩শ’ থেকে ৪শ’ টাকা, এ বছর সেই গুড়ের ভাড় সাড়ে ৪শ’ থেকে ৫শ’ এমনকি ৬শ’ টাকা ক্রয় করতে হচ্ছে। এ গুড়ের হাট থেকে ব্যাপারিরা ভাড় ভর্তি গুড় ক্রয় করে নিজ নিজ এলাকায় নিয়ে চলে যান এবং প্লাস্টিকের ড্রামে ভর্তি করে বা বিভিন্ন উপায়ে দেশের বিভিন্ন জেলা শহরে সরবরাহ করে থাকেন। বিশেষ করে দেশের উত্তরের জেলা গুলোর পাশাপাশি বরিশাল, পটুয়াখালী ও অন্যান্য এলাকায় নিয়ে যাওয়া হয়। শুধু হুমায়ুন কবির নয়, কলারোয়ার পার্শ্ববর্তী বিভিন্ন উপজেলা থেকে আসা একদল গুড়ের ব্যাপারি প্রতিনিয়ত খোরদো বাজারের গুড়ের হাট থেকে পাইকারী দামে গুড় ও পাটালি কিনে অন্যত্র বিক্রিয় করে থাকেন। স্থানীয় গুড় ব্যবসাযীরা বলেন খোরদো বাজারের খেজুর গুড়ের হাট থেকে গুড় কিনে ড্রাম ভর্তি করে গোডাউনে স্টক করেও রাখেন অনেক ব্যবসায়ীরা। পরে শীত মৌসুম চলে গেলে সেই গুড় ও পাটালি চড়া দামে বিক্রয় করে থাকেন তারা।

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads