• শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪২৯
বন্ড অপব্যবহারকারীর বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার সুপারিশ

সংগৃহীত ছবি

বাণিজ্য

বন্ড অপব্যবহারকারীর বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার সুপারিশ

  • বাসস
  • প্রকাশিত ০৭ মে ২০১৯

বন্ড সুবিধা নেয়ার ক্ষেত্রে ভুয়া ঠিকানার ব্যবহার এবং বন্ড সুবিধার কাঁচামাল খোলাবাজারে বিক্রিসহ বেশ কিছু অভিযোগের প্রেক্ষিতে ২৯টি বন্ডেড প্রতিষ্ঠানকে রাজস্ব আয়ের ক্ষেত্রে ঝুঁকিপূর্ণ চিহ্নিত করে তালিকা প্রস্তুত করেছে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) আওতাধীন কাস্টমস মূল্যায়ন ও অভ্যন্তরীণ নিরীক্ষা কমিশনারেট (সিভিসি)।এসব প্রতিষ্ঠানের ১৬টিতে ইতোমধ্যে নিরীক্ষা সম্পন্ন করায় কয়েকটির বিরুদ্ধে বন্ড সুবিধার অব্যবহার ও ভুয়া ঠিকানা ব্যবহারের তথ্য মিলেছে।এর প্রেক্ষিতে প্রতিষ্ঠানগুলোর বিরুদ্ধে বন্ড লাইসেন্স বাতিল ও কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণের সুপারিশ করেছে সিভিসি।

সম্প্রতি এ সংক্রান্ত একটি প্রতিবেদন এনবিআরে পাঠিয়েছে সিভিসি। প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়,নিরীক্ষা হওয়া প্রতিষ্ঠানের মধ্যে ছয়টির অস্তিত্ব মেলেনি। একটি প্রতিষ্ঠান বন্ধ রয়েছে। অন্যদের ক্ষেত্রে বন্ড সুবিধার অপব্যবহারের প্রমাণ পাওয়া গেছে।আর ছয়টির নিরীক্ষা চলমান রয়েছে।

এ বিষয়ে এনবিআর চেয়ারম্যান মো. মোশাররফ হোসেন ভূইয়া বলেন,বন্ড সুবিধার অপব্যবহার রোধ করতে প্রিভেন্টিভ কার্যক্রম গ্রহণ,নিয়মিত অডিট,লাইসেন্স বাতিল ও মামাল রুজু করা হচ্ছে।এরপরও কিছু প্রতিষ্ঠান বন্ডের অপব্যবহার করে চলেছে। প্রমাণ পাওয়া মাত্রই তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করা হচ্ছে বলে তিনি জানান।

তিনি বন্ডের অপব্যবহারকারীদের মূখোশ দেশবাসীর কাছে তুলে ধরতে গণমাধ্যমের সহযোগিতা চান।

সিবিসির প্রতিবেদনে গাজীপুরের বন্ডেড প্রতিষ্ঠান এ অ্যান্ড এ এন্টারপ্রাইজ ও রাজধানীর লালবাগ এলাকার এ অ্যান্ড এ এক্সেসরিজ লিমিটেডের বন্ড লাইসেন্স বাতিলসহ আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়ার সুপারিশ করা হয়েছে। পরিদর্শনে গিয়ে এই প্রতিষ্ঠানটির অস্তিত্ব পাওয়া যায়নি। ২০০৭ সালের ১ জুলাই থেকে ২০০৮ সালের ৩১ মার্চ পর্যন্ত প্রতিষ্ঠানটির কোন আমদানি-রফতানির তথ্য নেই। ২০০৫-০৬ অর্থবছর প্রায় পৌনে দুই কোটি টাকার ক্যাপিটাল মেশিনারিজসহ পণ্য সামগ্রী বন্ড সুবিধায় আমদানি করেছে।একই সময় প্রায় সাড়ে ৫ কোটি টাকার পোশাক রফতানি করেছে।প্রতিষ্ঠানটির বন্ড লাইসেন্স বাতিলের সুপারিশ করা হয়।

একই অবস্থা আর এ অ্যান্ড এ এক্সেসরিজ লিমিটেডের,এরও কোন অস্তিত্ব পাওয়া যায়নি।২০১৬ সালের ১৬ জুন থেকে ২০১৮ সালের ১৫ নভেম্বর পর্যন্ত প্রতিষ্ঠানটি কোন আমদানি-রফতানি করেনি। ২০০২-০৮ পর্যন্ত প্রায় আড়াই কোটি টাকার ক্যাপিটাল মেশিনারিজসহ বন্ড সুবিধায় কাঁচামাল আমদানি করেছে।প্রায় পৌনে ৯ লাখ টাকার পোশাক রফতানি করেছে।এ প্রতিষ্ঠানেরও বন্ড লাইসেন্স বাতিলের সুপারিশ করা হয়েছে।

এছাড়া বন্ড সুবিধার অপব্যবহার করা প্রতিষ্ঠানের মধ্যে রয়েছে সাভারের ৫এফ অ্যাপারেলস। প্রতিষ্ঠানটি প্রায় সোয়া তিন কোটি টাকার নিট ফ্রেবিক্স আমদানি করে তা খোলাবাজারে বিক্রি করে দিয়েছে।এছাড়া ইউডি বর্হিভূত প্রায় সাড়ে ১৬ কোটি টাকা ও স্থানীয়ভাবে প্রায় পৌনে তিন কোটি টাকার পণ্য ক্রয় করে বন্ড সুবিধার অপব্যবহার করেছে। ইউডি বর্হিভূত পণ্য আমদানি ও স্থানীয়ভাবে পণ্য সংগ্রহ করায় প্রতিষ্ঠানটির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার সুপারিশ করা হয়েছে।এদিকে,মিরপুরের ৪ইউ ক্লথিং লিমিটেডের নিরীক্ষায় রাজস্ব ফাঁকি পাওয়া না গেলেও অনিয়ম পাওয়া গেছে; যা বন্ডেড সুবিধার অপব্যবহারের শামিল।দুইটি প্রতিষ্ঠান একই বিল্ডিং ও দুই প্রতিষ্ঠানের কাঁচামাল, তৈরি পোশাক একই সাথে গুদামজাত করা হয়েছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়,আশুলিয়া সাভারের বন্ডেড প্রতিষ্ঠান ফোরএস পার্ক স্টাইল প্রায় পৌনে ৫ হাজার কেজি কাঁচামাল অবৈধভাবে অপসারণ করে বন্ড সুবিধার অপব্যবহার করেছে।এ প্লাস ইন্ডাস্ট্রিজ প্রায় দেড় লাখ টাকা,নারায়নগঞ্জের এ বি সুয়েটার্স,সাভারের এ বি এক্সেসরিজ,এ এম সি এস টেক্সটাইল,উত্তরার এবিএম অ্যাপারেলস,গাজীপুরের এ এফ এম সুয়েটার্স,হেমায়েতপুরের এ জে আই অ্যাপারেলস ইন্ডাস্ট্রিজ,টঙ্গীর এ জি ড্রেসেস,মিরপুরের এ কে জে ফ্যাশন,সাভারের এ কে এইচ স্টিচ আর্ট,এ কে এম নিটওয়্যার,শ্যামপুর এলাকার এ ওয়ান ড্রেস মেকাস,গাজীপুরের এ বি জি সুয়েটার্স এবং নারায়নগঞ্জ এলাকার এ অ্যান্ড এইচ এন্টারপ্রাইজ লিমিটেডের বিরুদ্ধে বন্ড সুবিধার অপব্যবহারের প্রমাণ পাওয়া যায়।এসব প্রতিষ্ঠানের পুরো বন্ডিং কার্যক্রম খতিয়ে দেখে ব্যবস্থা নেওয়ার সুপারিশ করা হয়েছে।

গাজীপুরের এ অ্যান্ড এ ফ্যাশন, এ অ্যান্ড এ টাউজার, সাভারের এ ওয়ান (বিডি),এ জে সুপার গার্মেন্টস,এ প্লাস সুয়েটার্স লিমিটেডের নিরীক্ষায় রাজস্ব ফাঁকি পাওয়া যায়নি। নিরীক্ষা চলমান রয়েছে, সাভারের থ্রি-এ ফ্যাশন, নারায়নগঞ্জের এ ওয়ান পোলার,নারায়নগঞ্জের এ কে ফ্যাশন,গাজীপুরের এ এম সি সুয়েটার ও সাভারের এ কে এক্সেসরিজ প্রাইভেট লিমিটেড।এসব প্রতিষ্ঠানের নিরীক্ষা প্রতিবেদন শিগগিরই দেওয়া হবে।

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads