• বুধবার, ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪২৯
ইঞ্জিন অয়েলের বাজারে আসতে চায় ভারত

ছবি : সংগৃহীত

বাণিজ্য

ইঞ্জিন অয়েলের বাজারে আসতে চায় ভারত

  • সাইদ আরমান
  • প্রকাশিত ০৯ মে ২০১৯

দেশের মবিলের (ইঞ্জিন অয়েল) বাজারে আসতে চায় প্রতিবেশী দেশ ভারত। তবে উন্মুক্ত বাজারের মাধ্যমে নয়। রাষ্ট্রায়ত্ত প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম করপোরেশনের (বিপিসি) আওতাধীন কোনো সংস্থার মাধ্যমে ভারতের অয়েল করপোরেশন তাদের মবিলের ব্র্যান্ড বাজারজাত করতে চায় বাংলাদেশে। ইন্ডিয়ান অয়েল করপোরেশন সম্প্রতি এ ব্যাপারে বিপিসিকে একটি চিঠি দিয়েছে। সংশ্লিষ্ট সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।

সূত্র জানায়, ইন্ডিয়ান অয়েল করপোরেশন ভারতের রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থা। এই সংস্থা সার্ভো ব্র্যান্ড নামে ইঞ্জিন অয়েল বাজারজাত ও বিপণন করে। দেশটির বাজারে জনপ্রিয় ব্র্যান্ড সার্ভো লুব্রিকেন্টস। বর্তমানে ২০টি দেশে ইন্ডিয়ান ওয়েল করপোরেশন লিমিটেড এই মবিল রফতানি করছে। প্রতিষ্ঠানটি সার্ভো মবিল বাংলাদেশে বাজারজাতের আগ্রহ প্রকাশ করে বিপিসিকে লিখিত প্রস্তাব দিয়েছে। তবে এখনো এর সুরাহা হয়নি। চলতি মাসেই এ ব্যাপারে দুই পক্ষের একটি বৈঠক হতে পারে।

জানতে চাইলে বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম করপোরেশনের চেয়ারম্যান ও সরকারের সচিব মো. সামছুর রহমান এ প্রতিবেদককে বলেন, ইন্ডিয়ান অয়েল করপোরেশন লিমিটেড একটি চিঠি দিয়েছে। সেটি নিয়ে এখনো কোনো আলোচনা হয়নি। তাদের একটি প্রতিনিধি দল আসবে। তখন আমরা দুই পক্ষ বসে বিষয়টি নিয়ে আলাপ আলোচনা করব।

সূত্রমতে, দেশের তেল ও মবিলের বাজারে রাষ্ট্রায়ত্ত প্রতিষ্ঠান হিসেবে কাজ করে বিপিসির আওতাধীন যমুনা অয়েল কোম্পানি লিমিটেড, পদ্মা অয়েল কোম্পানি লিমিটেড এবং মেঘনা পেট্রোলিয়ান কোম্পানি লিমিটেড। এর মধ্যে পদ্মা টোটাল ব্র্যান্ডের ইঞ্জিন অয়েল বাজারজাত ও বিপণন করে থাকে। যমুনা অয়েল মবিল বাজারজাত ও বিপণন করে। আর মেঘনা পেট্রোলিয়াম ব্রিটিশ পেট্রোলিয়াম ও ক্যাস্ট্রল ব্র্যান্ডের ইঞ্জিন অয়েল বাজারজাত করে থাকে।

ভারতের সরকারি প্রতিষ্ঠানটি আগ্রহ, বিপিসির কোনো সংস্থা সার্ভো আমদানি করে বাংলাদেশের বাজারে বিপণন করার দায়িত্ব নেবে। এতে এ দেশে তাদের বাজার দখল সহজ হবে।

মবিল শুধু পরিবহনগুলোর জন্যই জরুরি নয়। রেলের লোকোমেটিভ, বিদ্যুৎকেন্দ্রের যন্ত্রপাতিসহ নানা মেশিন চালাতে প্রয়োজন হয় মবিলের। তাই ভারত চাচ্ছে সরকারের সঙ্গে সমঝোতা করতে, যাতে বড় পরিসরে বাংলাদেশের বাজারে সার্ভো চলে।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, সচেতনতার অভাবে দেশের বাজার নকল ও নিম্নমানের ইঞ্জিন অয়েলে সয়লাব। বিশেষ করে পরিবহন খাতে এসব ইঞ্জিন অয়েল ব্যবহার হচ্ছে দেদারসে। কিন্তু দেখার কেউ নেই। এছাড়া এই খাত তদারকে কারো ওপর দায়িত্ব না থাকায় অসাধুচক্র নির্ভয়ে ব্যবসা করে যাচ্ছে। তবে মানহীন ইঞ্জিন অয়েলের কারণে ক্ষতি হচ্ছে ইঞ্জিনের। ঘটছে নানা দুর্ঘটনা।

নানা রকম শুল্কের বাধাসহ আরো অনেক বাধা থাকার পরও প্রতিবেশী দেশ ভারতের সঙ্গে বেশ বড় বাণিজ্য রয়েছে বাংলাদেশের। দুই দেশের সীমান্তবর্তী মানুষের মধ্যে বাণিজ্য সম্প্রীতি বাড়াতে খোলা হয়েছে সীমান্ত হাট। নিজেদের উৎপাদিত পণ্য এ হাটে বেচাকেনা করেন সীমান্ত এলাকার মানুষগুলো। তবে এসব হাট নিয়ে এরই মধ্যে নানা অভিযোগ উঠেছে।

এদিকে, গত সোমবার অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামালের সঙ্গে বৈঠক করেন ঢাকায় নিযুক্ত ভারতীয় হাইকমিশনার রিভা গাঙ্গুলী। রাজধানীর শেরে বাংলানগরে অর্থমন্ত্রীর দফতরে এই বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। বৈঠকে অর্থমন্ত্রী ভারতীয় হাইকমিশনারকে বিভিন্ন খাতে বিনিয়োগের আহ্বান জানান। ভারতীয় হাইকমিশনার বিভিন্ন খাতে বিনিয়োগের আগ্রহ প্রকাশ করেন। ভারতের বিভিন্ন স্মার্ট সিটির আদলে বাংলাদেশেও স্মার্ট সিটি নির্মাণের পরামর্শ দেন তিনি। ভারত আগ্রহী হলে বাংলাদেশ যেকোনো সময়ে উন্নয়ন সহযোগী হিসেবে স্মার্ট সিটি নির্মাণে প্রস্তুত বলে জানানো হয়। এছাড়া সাক্ষাৎকালে তারা আখাউড়া-আগরতলা রেলপথ প্রকল্পের নির্মাণকাজ, দ্বি-পাক্ষিক সম্পর্ক উন্নয়ন, বাংলাদেশের আর্থ-সামাজিক উন্নয়নসহ বিভিন্ন বিষয় নিয়ে আলোচনা করেন।

বাংলাদেশ বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতে ভারতের সঙ্গে বেশ কিছু চুক্তি করেছে। ভারত থেকে বিদ্যুৎ আমদানি করা হচ্ছে। এছাড়া ভারত থেকে পাইপলাইনে তেল আমদানির চিন্তা করছে সরকার।

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads