• বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪২৯

বাণিজ্য

ডিজিটাল মাধ্যমে ঘুরে দাঁড়াচ্ছেন ব্যবসায়ীরা

  • নিজস্ব প্রতিবেদক
  • প্রকাশিত ২২ অক্টোবর ২০২০

চলতি বছরের এপ্রিল-মে মাসে মহামারী ভাইরাসের ধাক্কায় সারা বিশ্বের মতো দেশের অর্থনীতিতে প্রভাব পড়ে। ব্যবসা-বাণিজ্যে নেমে আসে স্থবিরতা। কেনা-বেচা নেই দোকানে, ফ্লোর ছেড়ে দিয়েছিলেন অনেক ব্যবসায়ী। এই সময়ে সামাজিক দূরত্ব নিশ্চিত করে অনলাইনে কেনাকাটা বাড়ে। ফলে ব্যবসায়ীরা কিছু বিক্রির আশায় শরণাপন্ন হয়েছেন অনলাইনে। করোনা একেবারে বিদায় না হলেও বাঁচার তাগিদে যথেষ্ট মানুষ বের হচ্ছে। দোকান, মার্কেটে বেড়েছে মানুষের আনাগোন, বেড়েছে ব্যবসা।

ব্যবসায়ীরা বলছেন, অনলাইন-অফলাইন মিলিয়ে ঘুরে দাঁড়াচ্ছেন তারা। দোকানে বিক্রি কম, তবে অনলাইনে বিক্রি বেশি, ঝুঁকি কম। এক বছরের মধ্যে করোনার ক্ষতি কাটিয়ে ওঠার আশা করছেন ব্যবসায়ীরা।

রাজধানীর চন্দ্রিমা মার্কেটে ছেলেদের পোশাক বিক্রি করে অপূর্ব স্টোর। করোনার আগে বিক্রি হতো শুধু দোকানে। তবে করোনার সময় ফেসবুক লাইভে পণ্য বিক্রি শুরু করেন তারা। সারাক্ষণকে দোকানটির ম্যানেজার রাসেল আহমেদ জানান, ফেসবুক পেজ আমাদের আগেও ছিল। তবে করোনার কারণে অনলাইনে বিক্রি বেড়েছে। প্রতিদিনই কয়েকবার লাইভে এসে প্রোডাক্ট দেখাচ্ছি, রেসপন্সও ভালো।

ই-কমার্স ব্যবসায়ীদের সংগঠন ই-ক্যাব বলছে, প্রায় ৪০টি ক্যাটাগরিতে ই-ক্যাবের সদস্য রয়েছে ১৩শ’র মতো। করোনার এই সময়ে অনলাইনে বিক্রি বেড়েছে। গত বছরে দেশের ই-কর্মাসের মার্কেটের আকার যেখানে ছিল প্রায় ১৩ হাজার কোটি টাকার মতো, এই বছরের আগস্টে তা বেড়ে ১৬ হাজার কোটি টাকায় দাঁড়িয়েছে।

ই-ক্যাব আরো জানিয়েছে, বর্তমানে প্রায়ই ফেসবুকের মাধ্যমে প্রায় ১০ হাজার উদ্যোক্তা অনলাইন ব্যবসা করছে। এই মাধ্যমে প্রতিদিন প্রায় ৪০ হাজার অর্ডার ডেলিভারি হচ্ছে। আর মাসে ডেলিভারি হচ্ছে ১০ লাখের বেশি।

করোনাভাইরাসের প্রকোপে ধস নামা হোটেল-রেস্তোরাঁ ব্যবসা ধীরে ধীরে চাঙা হতে শুরু করেছে। রাজধানীর মানিকদির রেস্টুরেন্ট ‘মিস্টার গোস্ত’-এর মালিক মোহাম্মদ ইমরান বলেন, লকডাউনের সময় অনলাইনে খাবার ডেলিভারি দিয়েছি। এতে দোকান-ভাড়া, কর্মচারীর বেতন দিতে পারি নাই। প্রায় ৫ মাস লস দিয়েছি, এখন অনলাইন অর্ডার বেশি। আবার রেস্টুরেন্টেও কাস্টমার আসছে। সবকিছু স্বাভাবিক হতে আরো সময় লাগবে।

বাংলাদেশ রেস্তোরাঁ ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি খন্দকার রুহুল আমিন বলেন, হোটেল রেস্তোরাঁ খুলছে। মানুষের রোগ শোক বেড়েছে, খরচ বেড়েছে। রেস্তারাঁ ব্যবসা একটু খারাপ যাচ্ছে। তারপরও অনলাইনে অর্ডার আছে। এখন কম কর্মচারী নিয়ে ব্যবসা করছে রেস্তোরাঁগুলো।

এ প্রসঙ্গে দোকান মালিক সমিতি সভাপতি হেলাল উদ্দিন বলেন, করোনার কারণে সবচেয়ে বেশি ক্ষতি হয়েছে ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীদের। ব্যবসায়ীদের দোকান ছাড়তে হয়েছে। ব্যবসা গুটিয়ে নিয়েছেন অনেকেই।

তিনি আরো বলেন, দেশে প্রায় ৭ লাখ ক্ষুদ্র ব্যবসায় উদ্যোগ আছে। করোনার কারণে সরকার নির্দেশিত ছুটির কারণে অনেককে দোকান বন্ধ রাখতে হয়। তবে ব্যবসায়ীদের কিন্তু ঠিকই দোকান ভাড়া বিদ্যুৎ বিল দিতে হয়েছে। এসব কারণে অনেক ব্যবসায়ী পুঁজি হারিয়েছেন।’ করোনায় আর্থিক ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ কত হতে পারে- এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘করোনা এখনো শেষ হয়ে যায়নি। কবে শেষ হবে সে নিশ্চয়তাও নেই। আর্থিক ক্ষতির পরিমাণ অগণিত। আমরা একটা সংগঠনের হিসেবে করোনার এই সময়ে প্রতিদিন প্রায় শতকোটি টাকার ক্ষতি হচ্ছে।

অনলাইন, অফলাইনের মাধ্যমে ব্যবসায়ীরা আবার চাঙা হচ্ছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, অনলাইনের কারণে দোকানে আমাদের ১৫ থেকে ২০ শতাংশ বিক্রি কমেছে। আবার অনেকেই একই সঙ্গে দোকান ও ফেসবুক কিংবা ই-কমার্সে নিজেদের পণ্য বিক্রি করছে। এতে তাদের পণ্য বিক্রি আগের তুলনায় বেড়েছে। এমন অবস্থা থাকলে আগামী ৬ মাসের মধ্যে আমরা একটা স্বাভাবিক অবস্থায় আসতে পারব। তবে ক্ষতি পোষাতে ১ বছর লাগতে পারে।

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads