• শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪২৯

আবহাওয়া

বায়ুমণ্ডলের কার্বন ডাইঅক্সাইড

৩০ লাখ বছরের রেকর্ড ছাড়িয়ে ‘ধ্বংসাত্মক’

  • ডেস্ক রিপোর্ট
  • প্রকাশিত ২৩ নভেম্বর ২০১৮

বায়ুমণ্ডলে কার্বন ডাইঅক্সাইড, মিথেন ও নাইট্রাস অক্সাইডের মতো ভয়ঙ্কর গ্রিনহাউজ গ্যাসের উপস্থিতি বেড়েই চলেছে। বিশ্ব আবহাওয়া সংস্থার (ডব্লিউএমও) সর্বশেষ তথ্য মতে, ২০১৭ সালে বায়ুমণ্ডল গ্রিনহাউজ গ্যাসের ঘনত্ব রেকর্ড মাত্রায় পৌঁছেছে। বিশেষ করে কার্বন ডাইঅক্সাইডের যে ঘনত্ব ওই বছর দেখা গেছে তা আগের ৩০ থেকে ৫০ লাখ বছরের মধ্যে দেখা যায়নি। সংস্থাটি এর ধ্বংসাত্মক প্রভাবের আশঙ্কা করে বলেছে, এই অবস্থা চলতে থাকলে জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবেলায় পদক্ষেপ নেওয়ার সুযোগও বন্ধ হয়ে যাবে।

ডব্লিউএমও’র বার্ষিক গ্রিনহাইজ বুলেটিনে বলা হয়েছে, বায়ুমণ্ডলে গ্রিনহাউজ গ্যাসের উপস্থিতি কমার কোনো লক্ষণ দেখা যাচ্ছে না। ২০১৭ সালে বায়ুমণ্ডলে গ্রিনহাউজ গ্যাসের পরিমাণ আরো বেড়ে নতুন রেকর্ড মাত্রায় পৌঁছেছে। বুলেটিনে বলা হয়েছে, গবেষকরা দেখেছেন, সিএফসি-১১ নামের ‌ওজোনস্তর ক্ষয়কারী উপাদানের উপস্থিতিও কয়েক বছরের ব্যবধানে ভয়ঙ্কর মাত্রায় বেড়েছে বায়ুমণ্ডলে।

বুলেটিনে প্রকাশিত তথ্য মতে, ২০১৭ সালে বাতাসে কার্বন ডাইঅক্সাইডের গড় ঘনত্বের পরিমাণ বেড়ে নতুন করে রেকর্ড মাত্রায় পৌঁছেছে। ওই বছর কার্বন ডাইঅক্সাইডের গড় ঘনত্ব ছিল ৪০৫.৫ পিপিএম (পার্টস পার মিলিয়ন)। ২০১৬ সালে এর মাত্রা ছিল ৪০৩.৩ পিপিএম ও ২০১৫ সালে এর মাত্রা ছিল ৪০০.১ পিপিএম। ৩০ থেকে ৫০ লাখ বছরের ইতিহাসে বায়ুমণ্ডলে কার্বন ডাইঅক্সাইডের গড় ঘনত্ব এত বেশি মাত্রায় দেখা যায়নি। সংস্থাটি বলছে, আলোচ্য বছরে বায়ুমণ্ডলে কার্বন ডাইঅক্সাইডের যে ঘনত্ব তা প্রাক শিল্পবিপ্লবের সময়ের চেয়ে ৪৬ শতাংশ বেশি। ডব্লিউএমও’র মহাসচিব পেট্টেরি তালাস বলেন, পৃথিবী এই কার্বন ডাইঅক্সাইডের এই ভয়াবহতার মুখোমুখি হয়নি দীর্ঘদিন। এই অবস্থা ছিল আজ ৩০ থেকে ৫০ লাখ বছর আগে। তখন পৃথিবীর গড় তাপমাত্রা আজকের অবস্থার চেয়ে ৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস বেশি ছিল। সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা আরো ১০ থেকে ১৫ মিটার বেশি ছিল। তিনি বলেন, বিজ্ঞান এখানে স্পষ্ট। দ্রুত বায়ুমণ্ডলে কার্বন ডাইঅক্সাইড ও অন্য গ্রিনহাউজ গ্যাস নিঃসরণ না কমালে পৃথিবীতে জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব আরো বেশি ধ্বংসাত্মক হবে এবং তা অপরিবর্তনীয় হয়ে পড়বে।

আলোচ্য সময়ে বায়ুমণ্ডলে মিথেন ও নাইট্রাস অক্সাইডের মতো গুরুত্বপূর্ণ গ্রিনহাউজ গ্যাসের উপস্থিতিও বেড়েছে বলে সতর্ক করেছে ডব্লিউএমও। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গ্রিনহাইজ গ্যাসের মধ্যে মিথেন দ্বিতীয় প্রভাব রাখছে। মানুষের দৈনন্দিন কর্মকাণ্ডই বায়ুমণ্ডলের ৬০ শতাংশ মিথেন নিঃসরণের জন্য দায়ী। বায়ুমণ্ডলে গ্যাসটির ঘনত্ব এখন ১৮৫৯ পিপিবি (পার্টস পার বিলিয়ন)। এদিকে শিল্পবিপ্লবের পর থেকে আজ পর্যন্ত বাতাসে নাইট্রাস অক্সাইডের ঘনত্ব বেড়েছে ১২২ শতাংশ।

ডব্লিউওমও’র প্রতিবেদনে উদ্বেগ জানিয়ে বলা হয়, বায়ুমণ্ডলে গ্রিনহাউজ গ্যাসের মাত্রা কমার কোনো লক্ষণ দেখা যাচ্ছে না। গ্রিনহাউজ গ্যাসগুলো জলবায়ু পরিবর্তনে ভূমিকা পালন করছে, এতে সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা বেড়ে যাচ্ছে, আবহাওয়ার অবস্থা দিন দিন খারাপ হচ্ছে।

 

 

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads