• শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪২৯
বইতে শুরু করেছে শৈত্যপ্রবাহ

বইতে শুরু করেছে শৈত্যপ্রবাহ

সংরক্ষিত ছবি

আবহাওয়া

হাড় কাঁপাবে ভোটারদের

বইতে শুরু করেছে শৈত্যপ্রবাহ

  • তপু রায়হান
  • প্রকাশিত ২৭ ডিসেম্বর ২০১৮

একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের চূড়ান্ত প্রহর যতই এগিয়ে আসছে ততই বাড়ছে ভোটের মাঠের উত্তাপ। তবে প্রকৃতির তাপমাত্রার পারদ যেন এর সঙ্গে পাল্লা দিয়ে হতে শুরু করেছে নিম্নমুখী। গতকাল থেকে দেশের উত্তর এবং উত্তর-পশ্চিম ও দক্ষিণ-পশ্চিমের এলাকায় বইতে শুরু করেছে মৃদু থেকে মাঝারি ধরনের শৈত্যপ্রবাহ। তাপমাত্রা নেমে গেছে ৭ ডিগ্রি সেলসিয়াসের কোটায়। আবহাওয়াবিদদের আশঙ্কা, আগামী কয়েক দিনের মধ্যে দেশের আরো কয়েকটি এলাকায় বিস্তার লাভ করতে পারে এই শৈত্যপ্রবাহ। তাপমাত্রা নেমে যেতে পারে আরো নিচে। তাতে অনেক এলাকার ভোটারই পড়বেন চরম বিপাকে। হাড় কাঁপানো শীতে ঠকঠক করতে করতেই যেতে হবে ভোটকেন্দ্রে। 

প্রতীক বরাদ্দের পরদিন থেকেই প্রার্থীদের প্রচারণায় চড়তে শুরু করে উত্তেজনার পারদ। ওইদিনের পর থেকেই মূলত উত্তাপ ছড়াতে শুরু করে ভোটের মাঠ। অভিযোগ-পাল্টাঅভিযোগ, হামলা-পাল্টাহামলার মধ্য দিয়ে প্রচারণায় একপ্রকার তেতে ওঠে বাংলাদেশ। তফসিল অনুযায়ী আজ বৃহস্পতিবার মাঝরাত থেকে বন্ধ হওয়ার সেই উত্তেজনার পারদ আবার নিম্নমুখী হবে। কিন্তু ছাইচাপা আগুনের মতো ভেতরে ভেতের ছড়াতে থাকবে ভোটগ্রহণের দিন ৩০ ডিসেম্বর পর্যন্ত। কিন্তু ভোটের পারদ চড়তে থাকলেও প্রকৃতির তাপমাত্রার পারদ নামতে থাকবে প্রায় ব্যস্তানুপাতে।

আবহাওয়া অধিদফতর বলছে, গতকাল বুধবার থেকেই রাজশাহী ও রংপুর বিভাগ এবং যশোর, চুয়াডাঙ্গা, সাতক্ষীরা, গোপালগঞ্জ ও বরিশাল অঞ্চলে মৃদৃ থেকে মাঝারি ধরনের শৈত্যপ্রবাহ শুরু হয়েছে। রাজশাহীতে রেকর্ড করা হয়েছে ৭ দশমিক ৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস, যা এই বছরের দেশের সর্বনিম্ন তাপমাত্রার রেকর্ড। রংপুর বিভাগের বেশিরভাগ এলাকার তাপমাত্রাই ছিল ১০ ডিগ্রি সেলসিয়াসের নিচে।

আবহাওয়াবিদ বজলুর রশিদ জানান, আগামী চার-পাঁচ দিন ধরে বিরাজ করবে এই শৈত্যপ্রবাহ। যার মানে ভোটের দিনও কোনো কোনো এলাকায় থাকবে তীব্র শীত। আবহাওয়া অধিদফতরের ডিসেম্বর মাসের দীর্ঘমেয়াদি পূর্বাভাসের বরাতে তিনি বলেন, সেদিন দেশের কোনো কোনো এলাকার তাপমাত্রা নামতে পারে ০৬ ডিগ্রি সেলসিয়াসেরও নিচে।

আবহাওয়া অধিদফতরের ডিসেম্বর মাসের দীর্ঘমেয়াদি পূর্বাভাসে বলা হয়, ডিসেম্বর মাসের প্রথমার্ধে রাতের তাপমাত্রা স্বাভাবিক অপেক্ষা বেশি থাকতে পারে, কিন্তু শেষার্ধে রাতের তাপমাত্রা স্বাভাবিকের অপেক্ষা কম থাকতে পারে। মাস জুড়ে শেষ রাত থেকে সকাল পর্যন্ত দেশের উত্তরাঞ্চল ও নদনদী অববাহিকায় ঘন ও মাঝারি কুয়াশা এবং দেশের অন্যান্য অঞ্চলে মাঝারি ও হালকা কুয়াশা পড়তে পারে। দিনের বেলায় সূর্যকিরণ থাকতে পারে পাঁচ থেকে ছয় ঘণ্টা।

এছাড়া মাসের শেষার্ধে দেশের উত্তর, উত্তর-পূর্বাঞ্চল ও মধ্যাঞ্চলে এক থেকে দুটি মৃদু (০৮-১০ ডিগ্রি সেলসিয়াস) অথবা মাঝারি (০৬-০৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস) শৈত্যপ্রবাহ বয়ে যেতে পারে।

এদিকে ২০১৭ সালের ডিসেম্বর মাসের আবহাওয়ার চিত্র পর্যালোচনা করে দেখা গেছে, ওই বছর ডিসেম্বর মাসের শেষ দিকে প্রায় সারা দেশে ছিল হাড় কাঁপানো শীত। ডিসেম্বরের শুরু থেকে শীত পড়তে শুরু করলেও তীব্রতা বাড়তে শুরু করে মাসের শেষার্ধে গিয়ে। শেষ সপ্তাহে শুরু হয় শৈত্যপ্রবাহ। সে বছর ২৭ ডিসেম্বর মৃদু শৈত্যপ্রবাহ বইতে শুরু করে উত্তর, উত্তর-পূর্ব ও মধ্যাঞ্চলে। সেদিন দেশের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল চুয়াডাঙ্গা জেলায় ১০ দশমিক ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস। পরের দিনগুলোয় শীত আরো জেঁকে বসতে থাকে। ২৯ ডিসেম্বর সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল তেঁতুলিয়ায় ৯ দশমিক ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস। পরদিন তেঁতুলিয়ায় তাপমাত্রা আরো নেমে হয় ৯ দশমিক ৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস।

আবহাওয়াবিদদের মতে, ডিসেম্বর ও জানুয়ারি হলো দেশের শীতলতম মাস। প্রতি বছর এই দুই মাসে শীতের তীব্রতা থাকাটাই স্বাভাবিক। এ সময় সূর্য আলো দেয় দিনে গড়ে পাঁচ থেকে ছয় ঘণ্টা। এর সঙ্গে ঘন কুয়াশা বাড়ায় শীতের অনুভূতি।

আবহাওয়াবিদরা বলছেন, এ বছরও ডিসেম্বর শেষে শীতের তীব্রতা কেবল বাড়বেই না, তা গেল বছরের রেকর্ডও ছাড়িয়ে যেতে পারে। কারণ এ বছর নভেম্বর মাসের মাঝামাঝি থেকে দেশের কোথাও কোথাও তাপমাত্রা ১২ ডিগ্রি সেলসিয়াসের নিচে নেমে গিয়েছিল। গত ২৮ নভেম্বর শ্রীমঙ্গলে ১১ দশমিক ২ ডিগ্রি সেলসিয়াসে নামে। ওইদিন বাংলা বর্ষপঞ্জি অনুযায়ী ছিল ১৪ অগ্রহায়ণ। অগ্রহায়ণ মাসের মাঝামাঝিতে তাপমাত্রা এতটা নিচে নামার নজিরও কম। তাই ভোটের দিন ৩০ ডিসেম্বর বা ১৬ পৌষ তাপমাত্রা অনেকটাই কম থাকবে সেটাই স্বাভাবিক।

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads