• বৃহস্পতিবার, ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪২৮
এ মাসে আরো তিন শৈত্যপ্রবাহ

ফাইল ছবি

আবহাওয়া

এ মাসে আরো তিন শৈত্যপ্রবাহ

  • নিজস্ব প্রতিবেদক
  • প্রকাশিত ০৩ জানুয়ারি ২০২০

চলতি মাসে সারা দেশে তিনটি শৈত্যপ্রবাহ বয়ে যেতে পারে বলে জানিয়েছে আবহাওয়া অফিস। গতকাল বৃহস্পতিবার আবহাওয়া অধিদপ্তরের পরিচালক সামছুদ্দিন আহমেদ জানান, ৬ জানুয়ারির পর একটি এবং মাসের শেষ সপ্তাহে আরেকটি তীব্র শৈত্যপ্রবাহ বয়ে যাবে। এছাড়া মাসের মাঝামাঝি সময়ে একটি মাঝারি শৈত্যপ্রবাহ বয়ে যেতে পারে।

তিনি বলেন, বছরের প্রথম মাসের প্রথমার্ধেই দেশের অনেক স্থানে বৃষ্টি হবে। বুধবার ঢাকা ও ময়মনসিংহ বিভাগ ছাড়া দেশের সব স্থানেই হালকা থেকে মাঝারি বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে। শুক্রবার বৃষ্টিপাত আরো বাড়বে।

৬ জানুয়ারি থেকে দেশের বিভিন্ন স্থানের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ও রাতের তাপমাত্রা আরো কমে যাবে। শৈত্যপ্রবাহ চলাকালে কনকনে শীত অনুভূত হবে। ৩, ৪, ও ৫ জানুয়ারি বৃষ্টি হবে। বৃষ্টির কারণে তাপমাত্রা ধীরে ধীরে কমতে শুরু করবে। শৈত্যপ্রবাহ দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে বিরাজমান থাকবে। ফলে গ্রামাঞ্চলে শীতের তীব্রতা বেশি অনুভূত হবে।

রাতের তাপমাত্র বা সর্বনিম্ন ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াসের নিচে নেমে গেলে তাকে তীব্র শৈত্যপ্রবাহ হিসেবে ধরা হয়। আর তাপমাত্রা ৬-৮ ডিগ্রির মধ্যে থাকলে মাঝারি এবং তাপমাত্রা ৮-১০ ডিগ্রি সেলসিয়াসের মধ্যে থাকলে তাকে মৃদু শৈত্যপ্রবাহ বলে। সামছুদ্দিন বলেন, রাজশাহী, রংপুর, ময়মনসিংহ ও ঢাকা বিভাগের কিছু অংশ এবং সিলেট ও সুনামগঞ্জ অঞ্চলে শীতের তীব্রতা বেশি থাকবে। পাশাপাশি পার্বত্য চট্টগ্রামের বাঘাইছড়ি ও এর আশপাশে শীতের তীব্রতা বাড়বে। ঢাকা থেকে দক্ষিণাঞ্চলের দিকে মাঝারি ধরনের শৈত্যপ্রবাহ থাকতে পারে।

ডিসেম্বরে দেশের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা তেঁতুলিয়ায় ৪ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াসে নেমেছিল। জানুয়ারিতেও সেখানে একই ধরনের অবস্থা বিরাজ করতে পারে। তাপমাত্রা আরো নিচে নামতে পারে কি না জানতে চাইলে বলেন, গত বছর রেকর্ডে ২ দশমিক ৪ ডিগ্রি সেলসিয়াসে নেমেছিল। এ বিষয়ে এখনো সুনির্দিষ্টভাবে বলা যাচ্ছে না। সপ্তাহখানেক পরে হয়তো বোঝা যাবে।

ডিসেম্বরের মাঝামাঝি মৃদু এবং শেষ দিকে তীব্র শৈত্যপ্রবাহ বয়ে যায়। তাপমাত্রা নেমে যাওয়ার পাশাপাশি সূর্যের আলো কম থাকায় শীতের তীব্রতাও প্রচণ্ড ছিল। তাপমাত্রার মাপকাঠিতে ৮ থেকে ১০ ডিগ্রিকে মৃদু শৈত্যপ্রবাহ বলেছি, কিন্তু সূর্যের আলো কম থাকায় এবং কোথাও কোথাও কনকনে হিমেল হাওয়ার কারণে শীতের তীব্রতা সারা দেশেই প্রবলভাবে অনুভূত হয়েছে তখন।

এদিকে শীত ও শৈত্যপ্রবাহ নিয়ে সরকারের প্রস্তুতি তুলে ধরতে গতকাল বৃহস্পতিবার সচিবালয়ে সংবাদ সম্মেলন করেন দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী এনামুর রহমান। বলেন, শৈত্যপ্রবাহের সময় কেউ যাতে শীতে কষ্ট না পান সেজন্য সরকারের পক্ষ থেকে কর্মসূচি নেওয়া হয়েছে। এটা অব্যাহত থাকবে। অক্টোবরে শীতের পূর্বাভাস পাওয়ার পর প্রত্যেক জেলায় শীতবস্ত্র পাঠিয়েছে মন্ত্রণালয়। জেলা ও উপজেলা প্রশাসনের চাহিদা অনুযায়ী শীতবস্ত্র সরবরাহ করা হয়েছে।

ত্রাণ মন্ত্রণালয় থেকে ৬৪ জেলায় ৭ লাখ ২১ হাজার ৮০০টি কম্বল বরাদ্দ দেওয়া হয়। প্রধানমন্ত্রীর ত্রাণ ভাণ্ডার থেকে ৬৪ জেলার জন্য ২৪ লাখ ৬৯ হাজার ১০০টি কম্বল বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। শীত ও শৈত্যপ্রবাহ শুরুর পর শীতার্ত দরিদ্র জনগোষ্ঠীর জন্য শীতবস্ত্র কিনতে রংপুর, কুড়িগ্রাম, গাইবান্ধা, লালমনিরহাট, নীলফামারী, দিনাজপুর, ঠাকুরগাঁও, পঞ্চগড়, কুষ্টিয়া, মেহেরপুর, চুয়াডাঙ্গা, যশোর, মাগুরা, নড়াইল, ফরিদপুর ও গোপালগঞ্জে এক কোটি ৬৮ লাখ টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে।

শিশুদের জন্য শীতবস্ত্র কিনতে রংপুর, কুড়িগ্রাম, গাইবান্ধা, লালমনিরহাট, নীলফামারী, দিনাজপুর, ঠাকুরগাঁও, পঞ্চগড়, কুষ্টিয়া, মেহেরপুর, চুয়াডাঙ্গা, যশোর, মাগুরা, নড়াইল, রাজশাহী, নওগাঁ, নাটোর, ফরিদপুর, গোপালগঞ্জ, সুনামগঞ্জ- এ ২০ জেলায় ৫৪ লাখ টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। শিশুদের খাবার কিনতে ২১ লাখ টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। এছাড়া রংপুর বিভাগের রংপুর, কুড়িগ্রাম, গাইবান্ধা, লালমনিরহাট, নীলফামারী, দিনাজপুর, ঠাকুরগাঁও ও পঞ্চগড় জেলায় ২ হাজার করে মোট ১৬ হাজার শুকনো ও অন্যান্য খাবারের কার্টন বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে।

শুক্রবার থেকে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয় এবং দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা উত্তরাঞ্চলে গিয়ে শীতবস্ত্র বিতরণ করবেন। এ ছাড়া আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের নেতৃত্বে আগামী ১১ জানুয়ারি উত্তরাঞ্চলে সভার আয়োজন করা হয়েছে। এ সময় আরো উপস্থিত ছিলেন দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের জ্যেষ্ঠ সচিব শাহ কামাল, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক মো. মহসীন প্রমুখ।

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads