• বৃহস্পতিবার, ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪২৮

বিদেশ

মিত্র রাষ্ট্রে ড্রোন বেচবেন ট্রাম্প

  • ডেস্ক রিপোর্ট
  • প্রকাশিত ২০ মার্চ ২০১৮

মিত্র এবং অংশীদার রাষ্ট্রে ড্রোন রপ্তানি করার লক্ষ্যে নীতিমালা সংস্কার করবেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। খুব জলদিই ড্রোন রপ্তানি বিষয়ক সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত করা হবে বলে জানিয়েছে রয়টার্স। বহির্দেশে ড্রোনের মত সামরিক পণ্য বিক্রিতে নীতিমালাগত যে সমস্যা রয়েছে তা চলতি মাসেই মিটিয়ে ফেলা হতে পারে বলেও গত মঙ্গলবার জানান ট্রাম্প।

নীতিমালা পরিবর্তনের ক্ষেত্রে শুরুতেই বহির্দেশে অস্ত্র রপ্তানি বিষয়ক নীতিমালার সংস্কার করা হবে। ফলে যুক্তরাষ্ট্রের অস্ত্র নির্মাতা প্রতিষ্ঠানগুলোর বহির্দেশে অস্ত্র বিক্রিতে আর কোনো বাধা থাকবে না বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা। আন্তর্জাতিক অস্ত্র বাণিজ্যে বিশেষ করে চীন এবং ইসরায়েলের আধিপত্য রোধ করতেই ট্রাম্প প্রশাসন এমন সিদ্ধান্ত নিচ্ছে। চীন এবং ইসরায়েলে অস্ত্র রপ্তানির ক্ষেত্রে নীতিমালা অনেকটাই শিথীল। অনেকদিন ধরেই যুক্তরাষ্ট্রের অস্ত্র বিক্রেতারা নীতিমালা সংস্কারে জোরদার লবি করে আসছিল। ট্রাম্পের ‘বাই আমেরিকা’ স্লোগানের আওতায় নতুন চাকুরির ক্ষেত্র তৈরি এবং বাণিজ্য ঘাটতি কমাতেই হোয়াইট হাউজ কর্তৃপক্ষ এমন সিদ্ধান্ত নিচ্ছে।

এদিকে একাধিক মানবাধিকার সংস্খা এবং অস্ত্র নিয়ন্ত্রণ বিষয়ক আইনজীবিরা আশঙ্কা প্রকাশ করে বলছেন, ট্রাম্প প্রশাসনের এমন সিদ্ধান্ত মধ্যপ্রাচ্য এবং দক্ষিণ এশিয়ায় সহিংসতা উস্কে দেবে এবং অস্থিতিশীল পরিস্থিতির সৃষ্টি করবে। প্রতিরক্ষা সেক্রেটারি জিম ম্যাতিস এক লিখিত চিঠিতে ট্রাম্পের তৎকালীন নিরাপত্তা উপদেষ্টা এইচ আর ম্যাকমাস্টারকে এই নীতিমালা সংস্কারে চাপ প্রয়োগ করেছিলেন বলে রয়টার্স সূত্রে জানা যায়। যদিও এখন পর্যন্ত ম্যাকমাস্টারকে দেয়া ম্যাত্তিসের চিঠি নিয়ে কোনো মন্তব্য করেনি হোয়াইট হাউজ কর্তৃপক্ষ।

প্রাথমিকভাবে রপ্তানি করার ক্ষেত্রে অগ্রাধিকার পাবে ছোটো ড্রোন বিমান। এই বিমানগুলো বেশ কয়েকটি ক্ষেপণাস্ত্র বহনে সক্ষম এবং বড় ড্রোনের তুলনায় কম দূরত্বে চলাচল করতে পারে। শুধু তাই নয়, এই নীতিমালা সংস্কারের ফলে যেকোনো আয়তনের গোয়েন্দা ড্রোন বিক্রি করতে পারবে যুক্তরাষ্ট্রের অস্ত্র নির্মাতা প্রতিষ্ঠানগুলো।

বিশেষজ্ঞদের মতে, ট্রাম্প যদি ড্রোন বিক্রির জন্য নীতিমালা সংস্কার করে থাকেন তবে এটা হবে যুক্তরাষ্ট্রের অস্ত্র বাণিজ্যের ইতিহাসে একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ। কারণ যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক বিভাগে ড্রোন একটি নতুন যুগের সূচনা করেছিল। বিগত বেশ কয়েকটি যুদ্ধে ড্রোন বিমান ব্যবহার করে যুক্তরাষ্ট্র প্রশাসন ব্যাপক সফলতা পায়। পরবর্তীতে যুক্তরাষ্ট্রের পাশাপাশি আরো কয়েকটি রাষ্ট্র ড্রোন তৈরিতে এগিয়ে আসে এবং সফলও হয়।

শুরুর দিকে যুক্তরাষ্ট্রের অস্ত্র বিক্রেতারা শুধু ড্রোন বিমান বিক্রয়ের জন্য নীতিমালা সংস্কারের দাবি তুলেছিলেন। কিন্তু প্রায় এক বছরের আলোচনার ফলে বিক্রেতারা নীতিমালা এমন ভাবে সংস্কারের প্রস্তাব তোলে যাতে ড্রোনের পাশাপাশি আরো অন্যান্য অস্ত্রও বহির্দেশে বিক্রি করতে যুক্তরাষ্ট্র। দেশটি ইতোমধ্যেই ন্যাটোভুক্ত দেশগুলোর কাছে একটি নির্দিষ্ট পরিমানে অস্ত্র বিক্রয় করে থাকে। কিন্তু বিক্রেতাদের প্রস্তাবনা অনুসারে নীতিমালা সংস্কার হলে জাপান, দক্ষিণ কোরিয়া, ভারত, সিঙ্গাপুর এবং অস্ট্রেলিয়ার মতো মিত্র রাষ্ট্রগুলোর কাছেও অস্ত্র বিক্রি করা যাবে। শুধু তাই নয়, মিসাইল টেকনোলজি কনট্রোল রেজিমের (এমটিসিআর) সদস্যভূক্ত ৩৫টি দেশের কাছেও ক্ষেপণাস্ত্র বিক্রিতে আর কোনো বাধা থাকবে না দেশটির। সাম্প্রতিক বছরগুলোতে যুক্তরাষ্ট্র শুধু যুক্তরাজ্য এবং ইতালির কাছে ড্রোন বিক্রি করেছে।

রয়টার্সকে যুক্তরাষ্ট্রের একজন কর্মকর্তা বলেন, ‘আমরা সারাবিশ্বে এগিয়ে থাকতে চাই। কেন আমাদের প্রতিযোগিরা আমাদের মিত্রদের কাছে অস্ত্র বিক্রি করবে যেখানে তারা আমাদের থেকেই অস্ত্র কিনছে।’ নীতিমালা সংস্কার হলে যুক্তরাষ্ট্রের টেক্সটরন এবং ক্রাতোস ডিফেন্স অ্যান্ড সিকিউরিটি সলিউশনস করপোরেশন লাভবান হবে। বর্তমান অস্ত্র বাজারে এই দুইটি কোম্পানিই ছোটো ড্রোন বিমান উৎপাদন করে। যদিও অন্যান্য অস্ত্র নির্মাতা প্রতিষ্ঠানগুলোও ছোটো ড্রোনের মতো নতুন অস্ত্র তৈরি করতে চাইছে যাতে তারাও বাণিজ্যের দৌড়ে এগিয়ে থাকতে পারে।

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads