• বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪২৯

বিদেশ

সীমান্তে ফের সেনা মোতায়েন করছে যুক্তরাষ্ট্র

  • ডেস্ক রিপোর্ট
  • প্রকাশিত ০৫ এপ্রিল ২০১৮

মেক্সিকো সীমান্তে ফের সেনা মোতায়েন করা হবে বলে জানিয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। নির্বাচনী প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী সীমান্তে দেয়াল নির্মাণের আগ পর্যন্ত নিরাপত্তা রক্ষার জন্য সেনা মোতায়েন করা হবে বলে স্থানীয় সময় মঙ্গলবার বাল্টিক নেতাদের সঙ্গে মধ্যাহ্নভোজের সময় ট্রাম্প এ কথা জানান। খবর বিবিসি ও সিএনএন।

ট্রাম্প বলেন, বিষয়টি নিয়ে প্রতিরক্ষামন্ত্রী জেমস ম্যাটিসের সঙ্গেও আলোচনা হয়েছে। বাল্টিক রাষ্ট্রের নেতাদের ট্রাম্প বলেন, মেক্সিকো যা করছে তার প্রতি আমি শ্রদ্ধা রাখি। তাদের আইন খুবই কঠোর এবং শক্তিশালী। মেক্সিকোর তুলনায় সীমান্ত সুরক্ষায় আমাদের সুরক্ষা আইন খুবই দুর্বল। তাই আমরা সামরিকভাবে কিছু পদক্ষেপ নিতে যাচ্ছি। একটি দেয়াল নির্মাণ এবং যথার্থ নিরাপত্তা নিশ্চিত না করা পর্যন্ত সেনা সদস্যদের দিয়ে সীমান্ত পাহারা দেব। এটি একটি বড় পদক্ষেপ।’ 

এ ছাড়া যুক্তরাষ্ট্রগামী ১ হাজার ২০০ অভিবাসী হতে ইচ্ছুকদের একটি দলকে মেক্সিকো সহায়তা করায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন তিনি। অভিবাসী হতে ইচ্ছুকদের ওই দলটি দক্ষিণ আমেরিকা থেকে মেক্সিকোয় ঢুকেছে যুক্তরাষ্ট্রে যাওয়ার জন্য। তাদের থাকতে সহায়তা করেছে দেশটি। তিনি টুইটারে লিখেছেন, মেক্সিকো তাদের ঠেকাতে কোনো কার্যকর পদক্ষেপ নেয়নি।

দেশটি যদি অভিবাসী হতে ইচ্ছুক দলটির যুক্তরাষ্ট্রে ঢোকা ঠেকাতে পদক্ষেপ না নেয় তাহলে নাফটা চুক্তি থেকে পাওয়া সুবিধা বন্ধ করে দেওয়া হবে। এ নিয়ে মেক্সিকোর স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আলফনসো নাভারেতে সরাসরি মন্তব্য না করে টুইটারে লিখেছেন, তিনি যুক্তরাষ্ট্রের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ক্রিস্টজেন নিয়েলসেনের সঙ্গে সোমবার বৈঠক করেছেন। অভিবাসন নিয়ে দুই দেশের আইন মেনে তারা সমাধান খুঁজে বের করার চেষ্টা করছেন। বিষয়টি আমাদের জন্য খুবই স্পর্শকাতর। কারণ যুক্তরাষ্ট্র, কানাডা ও মেক্সিকোর মধ্যে নাফটা চুক্তি নিয়ে আলোচনা চলছে। আর এ নাফটা চুক্তি দিয়েই মেক্সিকোকে শায়েস্তা করার হুমকি দিয়েছেন ট্রাম্প।

অভিবাসী হতে আগ্রহীরা মূলত গুয়েতেমালার মতো দক্ষিণ আমেরিকার দেশগুলোর বাসিন্দা। তাদের কারো উদ্দেশ্য কোনোমতে যুক্তরাষ্ট্রে ঢুকে পড়া আর কেউ চায় সীমান্তে গিয়ে রাজনৈতিক আশ্রয় প্রার্থনা করা। অভিবাসী হতে ইচ্ছুকদের দলটি যে শহরগুলো পার হয়ে যাচ্ছে তার কয়েকটি বেশ ভালোভাবেই তাদের গ্রহণ করেছে। থাকার ব্যবস্থার পাশাপাশি সীমান্তের দিকে যেতে গাড়ির ব্যবস্থাও করে দিয়েছে শহরগুলো। এ কাজগুলোকে আপাত দৃষ্টিতে মেক্সিকোর শহরগুলোর সহযোগিতা মনে হলেও পুয়েবলো সিন ফ্রনটেরাসের রডরিগো আবেজা বলেন, তারা যাতে দ্রুত আমাদের এলাকা ছেড়ে যেতে পারে সেজন্যই এসব করছি।

সম্প্রতি গুয়েতেমালার সীমান্তের কাছে তাপাচুলা নামক স্থান থেকে অভিবাসী হতে ইচ্ছুক ওই দলটি যাত্রা শুরু করে। দলটি এ পর্যন্ত ৩ হাজার ২০০ কিলোমিটার পথ অতিক্রম করেছে। শহরগুলো আপাতত সহায়তা করলেও, যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিক্রিয়ার ভয়ে তাদের যাত্রাকে বাধা দেওয়ার চেষ্টা করেছে মেক্সিকো সরকার। দেশটি সোমবার এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, শুধু বৈধ ও নিয়মতান্ত্রিক অভিবাসন সমর্থন করে তারা। অভিবাসীদের এমন দল ২০১০ সাল থেকেই নিয়মিত যুক্তরাষ্ট্রের সীমান্তে যাচ্ছে। দক্ষিণ আমেরিকা থেকে যাওয়া ওইসব লোকজন মেক্সিকোয়ও অবৈধ। কারণ দেশটিতে ঢোকার কোনো বৈধ  নথি তাদের নেই। দেশটির সরকার দাবি করেছে, ইতোমধ্যে এমন ৪০০ জনকে নিজ নিজ দেশে ফেরত পাঠানো হয়েছে।

উল্লেখ্য, মেক্সিকো সীমান্তে সেনা মোতায়েনের ঘটনা অবশ্য নতুন নয়। যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা ২০১০ সালে সীমান্ত সুরক্ষা পরিকল্পনার অংশ হিসেবে ১ বছরের জন্য সেখানে ন্যাশনাল গার্ডের ১২শ’ সেনা পাঠিয়েছিলেন। তারও আগের প্রেসিডেন্ট জর্জ ডব্লিউ বুশ ২০০৬ সালে পাঠিয়েছিলেন ৬ হাজার ন্যাশনাল গার্ড সেনা। তারা দুই বছর মোতায়েন ছিল। তারা সীমান্তে টহলের কাজে সহায়তা দিতেন। সেই কর্মসূচির নাম দেওয়া হয়েছিল অপারেশন জাম্প স্টার্ট।

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads