• শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪২৯

বিদেশ

সিরিয়ায় হামলার হুমকি যুক্তরাষ্ট্রের

  • ডেস্ক রিপোর্ট
  • প্রকাশিত ১১ এপ্রিল ২০১৮

সিরিয়া থেকে সেনা প্রত্যাহারের ঘোষণা দিয়েছিলেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। কিন্তু ওই ঘোষণার দুই সপ্তাহ পরেই গত সোমবার বাশার সরকারকে হুশিয়ারি দিয়ে কঠোর পদক্ষেপ নেওয়ার ঘোষণা দিলেন তিনি। যুক্তরাষ্ট্রের মিডিয়া ইউএসএটুডের রিপোর্ট অনুসারে, সম্প্রতি সিরিয়ার দৌমা শহরে রাসায়নিক হামলার প্রেক্ষিতেই প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প এমন সিদ্ধান্ত নিচ্ছেন। ক্যাবিনেটের সভায় রাসায়নিক হামলার প্রতিক্রিয়ায় ট্রাম্প বলেন, ‘আগামী ২৪ থেকে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে আমরা বেশ কিছু উল্লেখযোগ্য সিদ্ধান্ত নিতে যাচ্ছি। সিরিয়া এবং প্রেসিডেন্ট বাশারকে এর মূল্য চুকাতে হবে। এটা মানবিকতা সম্পর্কিত এবং এমনটা হতে দেওয়া যায় না। ওই ভয়াবহ হামলার বিপরীতে আমরা কী করতে পারি সেই সিদ্ধান্তই নেওয়া হবে।’ সিরিয়ার ক্ষেপণাস্ত্র হামলা থেকে শুরু করে আরো সেনা মোতায়েনের মতো সম্ভাবনাকেও এগিয়ে রাখছেন ট্রাম্প।

এদিকে জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের জরুরি সভায় সিরিয়ার রাসায়নিক হামলা নিয়ে স্বাধীন তদন্তের দাবি করেছে যুক্তরাষ্ট্র। যদিও সিরিয়া ওই হামলার সঙ্গে সংশ্লিষ্টতা অস্বীকার করেছে। নিরাপত্তা পরিষদের বৈঠকে মস্কো এবং ওয়াশিংটনের কর্মকর্তাদের মধ্যে উত্তপ্ত বাক্যবিনিময় হয়েছে বলে জানিয়েছে আলজাজিরা। যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, ফ্রান্স এবং অন্যান্য ছয়টি দেশ ক্লোরিন গ্যাস হামলার জন্য বাশার সরকারকে দায়ী করলেও রাশিয়া এমন অভিযোগকে মিথ্যাচার বলছে। তবে জাতিসংঘে নিযুক্ত যুক্তরাষ্ট্রের দূত নিক্কি হ্যালি জানিয়েছেন, নিরাপত্তা পরিষদের সিরিয়ার বিরুদ্ধে কোনো পদক্ষেপ নেওয়ার অপেক্ষা করবে না যুক্তরাষ্ট্র। এ বিষয়ে তিনি আরো বলেন, ‘নিরাপত্তা পরিষদ তার কর্তব্য পালন করবে কি না কিংবা সিরিয়ার মানুষকে রক্ষা করতে সম্পূর্ণরূপে ব্যর্থ হয়েছে কি না তা ইতিহাসে নথিভুক্ত হয়ে থাকবে।’ নিক্কি হ্যালির এমন বক্তব্যের বিপরীতে রাশিয়ার দূত ভ্যাসিলি নেবেনজিয়া রাশিয়ার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রের জন্য যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য এবং ফ্রান্সকে দায়ী করেন। এ ছাড়াও রাশিয়ার বিশেষজ্ঞ দল সিরিয়ার দৌমায় পরিস্থিতি পরীক্ষার জন্য যেতে প্রস্তুত বলেও তিনি জানান।

সিরিয়া ইস্যুতে রাশিয়া এবং ইরানেরও সমালোচনা করে ট্রাম্প বলেন, ‘এই ঘটনার সঙ্গে যদি রাশিয়ানরা, সিরীয়রা, ইরানিরা এবং অন্য কেউ জড়িত থাকে, আমরা তাদের খুঁজে বের করব।’ কড়া বক্তব্যে পিছিয়ে নেই যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিরক্ষামন্ত্রী জিম ম্যাত্তিস। গত সোমবার সকালে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, ‘সকল কেমিক্যাল অস্ত্র নিরস্ত্রীকরণের দায়িত্বে ছিল রাশিয়া, তারপরেও কেন সিরিয়ায় রাসায়নিক অস্ত্রের ব্যবহার হচ্ছে? আমাদের মিত্র এবং ন্যাটোকে নিয়ে এই ইস্যুটি পরীক্ষা করে দেখব আমরা।’ রাসায়নিক হামলার জন্য বাশার সরকারই দায়ী কি না তা এখনো প্রমাণ হয়নি। কিন্তু ট্রাম্পসহ তার প্রশাসনের কর্তব্যক্তিদের বক্তব্য প্রমাণ করছে যে তারা বাশার সরকারের সংশ্লিষ্টতা নিয়ে নিশ্চিত। ক্রেমলিন মুখপাত্র দিমিত্রি পেসকভ যুক্তরাষ্ট্র এবং যুক্তরাজ্যকে কোনো ঝুঁকিপূর্ণ পদক্ষেপ না নিতে সতর্ক করে দিয়েছেন। সিরিয়ার বিদ্রোহীরাই দৌমায় হামলা চালিয়ে বাশার সরকারের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করছে বলেও তিনি দাবি করেন।

গত সোমবার রাতে সিরিয়ার হোমস শহরে ইরানের বিমানঘাঁটিতে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালানো হয়েছিল। সিরিয়ার রাষ্ট্রায়ত্ত মিডিয়া প্রাথমিকভাবে হামলার জন্য যুক্তরাষ্ট্রকে দায়ী করলেও পরে রাশিয়া এবং সিরিয়া উভয়েই ইসরাইলকে হামলার জন্য দায়ী করে। জানা যায়, লেবাননের বিমানঘাঁটি ব্যবহার করে ইসরাইলের দুটি যুদ্ধবিমান টি-ফোর সামরিক বিমানঘাঁটিতে হামলা চালায়। হামলায় ১৪ জন নিহত ও বেশ কয়েকজন আহত হয়। যদিও এখন পর্যন্ত ওই হামলা নিয়ে যুক্তরাষ্ট্র ও ইসরাইল কেউই মুখ খোলেনি।

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads