• শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪২৯

বিদেশ

তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধের দ্বারপ্রান্তে পৃথিবী!

  • ডেস্ক রিপোর্ট
  • প্রকাশিত ১৩ এপ্রিল ২০১৮

সিরিয়ার গৃহযুদ্ধকে কেন্দ্র করে আন্তর্জাতিক রাজনীতি ক্রমেই অস্থির হয়ে উঠছে। পারমাণবিক শক্তিধর দেশগুলো পরস্পরকে নানা ধরনের হুমকি দিচ্ছে। দুই ভাগে বিভক্ত হওয়া রাজনৈতিক শক্তির একদিকে রয়েছে রাশিয়া; যে দেশটি সরাসরি সমর্থন দিচ্ছে সিরিয়ার প্রেসিডেন্ট বাশার আল আসাদকে। অপর পক্ষে থাকা যুক্তরাষ্ট্রসহ পশ্চিমা শক্তিধর দেশগুলো সহযোগিতা করছে আসাদবিরোধী বিদ্রোহীদের। এমন প্রেক্ষাপটে প্রশ্ন দেখা দিয়েছে- পৃথিবী কি তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে?

সিরিয়ায় রাসায়নিক অস্ত্র ব্যবহারের অভিযোগকে কেন্দ্র করে রাশিয়া ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে এ সংঘাতের ঝুঁকি তৈরি হয়েছে। মধ্যপ্রাচ্যবিষয়ক বিশ্লেষক লিনা খাতিব বলছেন, সিরিয়ার সংঘাত বৈশ্বিক রূপ লাভ করেছে। শীতল যুদ্ধ এরই মধ্যে শুরু হয়ে গেছে। গত কয়েক দিনের মধ্যে বিষয়টি আরো স্পষ্ট হয়ে উঠেছে দুই দেশের পাল্টা জবাবের মধ্য দিয়ে। যুক্তরাষ্ট্র বলেছে, রাসায়নিক অস্ত্র ব্যবহার করার জন্য সিরিয়াকে কড়া জবাব দেওয়া হবে। দেশটির প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প সবশেষ এই টুইটে বলেছেন- ‘রাশিয়া প্রস্তুত হও; সুন্দর, নতুন এবং বুদ্ধিমান মিসাইল আসছে।’

তবে যুক্তরাষ্ট্রের মাথাব্যথা হওয়ার মতো আরো দুটি দেশ হলো উত্তর কোরিয়া ও ইরান। লন্ডনের স্কুল অব আফ্রিকান অ্যান্ড ওরিয়েন্টাল স্টাডিজের গবেষক স্টিভ স্যাং মনে করেন, উত্তর কোরিয়া পারমাণবিক সক্ষমতা অর্জনের কাছাকাছি পৌঁছে গেছে। যদিও এমন অবস্থার মধ্যেই অনেকটা হঠাৎ করেই উত্তর কোরিয়া যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে আলোচনায় বসতে রাজি হয়েছে। বিপরীতে রাশিয়ার সঙ্গেও এ দেশটির সম্পর্ক খুব একটা বন্ধুত্বপূর্ণ না হলেও শত্রুভাবাপন্নও নয়। তবে ইরানের সঙ্গে বাশার আল আসাদ ও রাশিয়ার সম্পর্ক বেশ ভালো। এদিক থেকে রাশিয়ার পাল্লা বেশ ভারী। যদিও মস্কোর ইনস্টিটিউট অব পলিটিক্যাল স্টাডিজের গবেষক সার্গেই ম্যারকভ বলছেন, পশ্চিমা নেতারা নিজেদের রাশিয়ার চেয়ে শক্তিশালী মনে করে।

এসব হম্বিতম্বির মধ্যেই হঠাৎ করে কিছু কারণে তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধ বেধে যেতে পারে বলে মনে করেন বিশ্লেষকরা। এর মধ্যে সার্গেই ম্যারকভ জানান, রাশিয়ার সেনাদের ওপর যুক্তরাষ্ট্র যদি সরাসরি হামলা চালায় তাহলে আসলেই উদ্বিগ্ন হওয়ার মতো ঘটনা ঘটবে। লিনা খাতিব বলেন, বৃহৎ শক্তিগুলোর পরস্পরের মধ্যে যদি যোগাযোগ ব্যবস্থা বন্ধ হয়ে যায় কিংবা পরস্পরের স্যাটেলাইটে সাইবার আক্রমণ করে তাহলে যুদ্ধ পরিস্থিতি তৈরি হবে বৈকি। আরেকটি আশঙ্কা করার মতো বিষয় উল্লেখ করেন লন্ডনের স্কুল অব আফ্রিকান অ্যান্ড ওরিয়েন্টাল স্টাডিজের গবেষক স্টিভ স্যাং। তিনি বলেন, কোরিয়া উপদ্বীপ থেকে যুক্তরাষ্ট্র যদি তাদের সেনা প্রত্যাহার করে, তাহলে ওই অঞ্চলে একটি যুদ্ধের পরিস্থিতির আশঙ্কা দেখা দেবে। দক্ষিণ এশিয়ার মধ্যপ্রাচ্যবিষয়ক বিশ্লেষক শশাঙ্ক জোসির মতে, শক্তিধর দেশগুলো এখন যারা পরিচালনা করছে তারা সবাই জাতীয়তাবাদী। সে জন্য যেকোনো সঙ্কটের ক্ষেত্রে তাদের ছাড় দেওয়ার মানসিকতা কম। এই একটি কারণই তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধ বাধার জন্য যথেষ্ট।

তবে জোসি জানান, এমন পরিস্থিতিতে উত্তেজনা প্রশমনের জন্য আন্তর্জাতিকভাবে কিছু দেশ ও অনেক ব্যক্তিবর্গ কাজ করছে। এক্ষেত্রে জাতিসংঘ এবং অন্যন্য আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলোরও একটি বড় ভূমিকা রয়েছে। তিনি বলেন, যাতে যুদ্ধ না বাধে সে জন্য জাতিসংঘ একটি বড় ভূমিকা পালন করতে পারে। ব্রিটিশ গণমাধ্যম বিবিসির বিশ্লেষণ।

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads