• বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪২৯

বিদেশ

বাশার আল আসাদের পেছনে যারা

  • ডেস্ক রিপোর্ট
  • প্রকাশিত ১৬ এপ্রিল ২০১৮

সাত বছর ধরে চলা গৃহযুদ্ধ পরিস্থিতি সামাল দিয়ে চলেছেন সিরিয়ার প্রেসিডেন্ট বাশার আল আসাদ। অভ্যন্তরীণ এবং আন্তর্জাতিক ব্যাপক চাপ সত্ত্বেও নিজের রাজনৈতিক অবস্থান ঠিক রেখেছেন তিনি। গত শনিবার যুক্তরাষ্ট্র নেতৃত্বাধীন বিমানবাহিনী আসাদ সরকারের গুরুত্বপূর্ণ সরকারি স্থাপনায় হামলা চালায়। বলা হচ্ছে, আসাদ সরকারের পতন নিশ্চিত করতেই ওই হামলা চালানো হয়।

সিরিয়ায় গৃহযুদ্ধ শুরুর বছরগুলোতে ক্রমশ বিদ্রোহীরা দেশটির বেশ কিছু অঞ্চল দখল করে নিয়েছিল। এমনকি রাজধানী দামেস্কের একাংশও দখলে চলে যায় যুক্তরাষ্ট্র সমর্থনপুষ্ট বিদ্রোহী বাহিনীর হাতে। তবুও আসাদ সরকার বিদ্রোহীদের বিরুদ্ধে লড়াই চালিয়ে যায়। ফলে বর্তমানে বিভিন্ন পক্ষের সমর্থন নিয়ে বিদ্রোহীদের প্রায় কোণঠাসা করে ফেলেছে সিরীয় বাহিনী। দামেস্ক এবং আলেপ্পোর মতো গুরুত্বপূর্ণ শহর থেকে পিছু হটতে বাধ্য হয়েছে বিদ্রোহীরা। এই দীর্ঘ যুদ্ধে আসাদের শক্তির পেছনে যেমন আছে অভ্যন্তরীণ সমর্থন, তেমনি আছে আন্তর্জাতিক সমর্থন।

২০১২ সালের মধ্য গ্রীষ্মে দামেস্কে এক বোমা হামলায় সিরিয়ার বেশ কয়েকজন উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা মারা যান। তাদের মধ্যে আসাদের প্রতিরক্ষামন্ত্রী ও জামাতা আসেফ শওকতও ছিলেন। ওই ঘটনার পর বিদ্রোহীরা মনে করেছিল বিজয় আসন্ন। তখন ফ্রি সিরিয়া আর্মি কমান্ডার বাশার আল জুবেই আলজাজিরাকে বলেছিলেন, ‘সিরীয় সেনাবাহিনী যেকোনো মুহূর্তে পরাজিত হবে।’ ঠিক তখনই সিরিয়ার পাশে দাঁড়ায় ইরান। প্রশিক্ষণ, অভিজ্ঞ যোদ্ধা এবং পদাতিক বাহিনী দিয়ে আসাদকে সহায়তা করতে শুরু করে খোমেনি প্রশাসন। জানা যায়, সিরিয়ায় প্রায় দশ হাজার যোদ্ধা পাঠিয়েছিল ইরান। কারণ ওই অঞ্চলে আধিপত্য বজায়ের জন্য তেহরানের গুরুত্বপূর্ণ মিত্র দামেস্ক। এদিকে ইরান সিরিয়ায় সমর্থন বাড়ানোর সঙ্গে সঙ্গে রাশিয়াও এগিয়ে আসতে শুরু করে। ২০১৫ সাল নাগাদ মস্কো সিরিয়ার বিদ্রোহীদের ওপর বিমান হামলা শুরু করে। ওই হামলার ফলে আলেপ্পো এবং পূর্ব ঘৌতার মতো শক্ত ঘাঁটি বিদ্রোহীদের হাতছাড়া হয়।

বিদ্রোহীদের মধ্যকার ভাঙনও আসাদ সরকারকে সহায়তা করে। ফ্রি সিরিয়া আর্মি ভেঙে গেলে কিছু কট্টরপন্থী দল আসাদ সরকারের বিরোধিতা করে এবং অন্য দলগুলো ইসলামিক স্টেটের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে জড়িয়ে যায়। এ সময় ইসলামিক স্টেট বিদ্রোহীদের পরাজিত করে রাকার মতো বেশ কয়েকটি শহর দখল করে নিয়েছিল। এরপরই বিদ্রোহীদের মধ্যে চলে আসে কুর্দি যোদ্ধারা। আর বর্তমানে সিরিয়ার বিদ্রোহীরা অন্তত বারো ভাগে বিভক্ত।

তুরস্ক এবং সৌদি আরব আসাদ সরকারের বিরোধিতা করলেও সিরিয়ার প্রেসিডেন্টকে উৎখাতে তেমন কোনো পদক্ষেপ গ্রহণ করেনি। এমন অবস্থায় যুক্তরাষ্ট্র সিরিয়ায় বিদ্রোহীদের অস্ত্র সহায়তা কমিয়ে দিতে থাকে। কারণ যুক্তরাষ্ট্র ভয় পেয়েছিল তাদের সরবরাহকৃত অস্ত্র ইসলামিক স্টেটের হাতে চলে গেলে তা পশ্চিমাদের বিরুদ্ধেই ব্যবহার করা হতে পারে। ২০১৭ সালের মার্চ মাসে যুক্তরাষ্ট্রের দূত নিক্কি হ্যালি জানান, আসাদকে উৎখাত করা যুক্তরাষ্ট্রের একমাত্র পলিসি নয়। এর দুই মাস পরই ব্রিটিশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী বরিস জনসন জানান, আসাদ শান্তি চুক্তির আওতায় চাইলে ক্ষমতায় থাকতে পারে। সবকিছুর বাইরেও সিরিয়ার অভ্যন্তরে আসাদের সমর্থন এখনো অনেক। প্রেসিডেন্ট বাশারের নিজের গোষ্ঠী আলাওয়াইত ছাড়াও অন্য অনেকগুলো গোষ্ঠী সিরীয় প্রশাসনকে সমর্থন দিয়ে যাচ্ছে এবং এই গোষ্ঠীগুলোর অধিকাংশই সুন্নি মুসলমান।

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads