• শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪২৮

বিদেশ

জাতিসংঘে রুশ নিন্দা প্রস্তাব ব্যর্থ

পাল্টা হুমকি মস্কোর

  • ডেস্ক রিপোর্ট
  • প্রকাশিত ১৬ এপ্রিল ২০১৮

সিরিয়ায় যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য ও ফ্রান্সের যৌথ বিমান হামলার নিন্দা জানিয়ে জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদে আনা রাশিয়ার প্রস্তাব খারিজ হয়ে গেছে। স্থানীয় সময় গত শনিবার নিরাপত্তা পরিষদের ১৫ সদস্যের মধ্যে বলিভিয়া ও চীন ছাড়া কেউ এই নিন্দা প্রস্তাবের পক্ষে ভোট দেয়নি বলে রয়টার্সের খবরে বলা হয়। এদিকে এই হামলার কড়া সমালোচনা করেছেন রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। তবে তিনি পাল্টা কোনো ব্যবস্থা নেওয়ার কথা বলেননি। যদিও ওয়াশিংটনে অবস্থানরত রুশ রাষ্ট্রদূত হুশিয়ার করে বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্রকে এর মূল্য চোকাতে হবে।

রয়টার্সের খবরে বলা হয়, গত শনিবার মস্কোর আনা এই নিন্দা প্রস্তাবের পক্ষে ১৫ সদস্যের নিরাপত্তা পরিষদে বলিভিয়া ও চীন ছাড়া আর কেউ ভোট দেয়নি। এ ছাড়া পেরু, কাজাখস্তান, ইথিওপিয়া ও একোয়াটোরিয়াল গিনি ভোটদানে বিরত ছিল। অপরদিকে তিন স্থায়ী সদস্য রাষ্ট্র যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য ও ফ্রান্সসহ আট সদস্য বিপক্ষে ভোট দিয়েছে। স্থায়ী পাঁচ সদস্য রাষ্ট্রের ভেটো ছাড়াই কোনো প্রস্তাব পাসের ক্ষেত্রে নিরাপত্তা পরিষদের অন্তত নয়টি দেশের সমর্থন লাগে।

সিরিয়ার দৌমায় প্রেসিডেন্ট বাশার আল আসাদ বাহিনীর বিষাক্ত গ্যাস হামলার অভিযোগ ওঠার পর গত এক সপ্তাহে এই নিয়ে পাঁচবার নিরাপত্তা পরিষদ একত্রিত হলো। সিরিয়ার রাসায়নিক অস্ত্র কর্মসূচি লক্ষ্য করে ইঙ্গ-মার্কিন-ফরাসি বাহিনীর ১০৫টি ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপের প্রতিক্রিয়ায় রাশিয়া এ বৈঠক ডেকেছিল। এর আগে গত মঙ্গলবারও সিরিয়ায় রাসায়নিক হামলার ব্যাপারে তিনটি প্রস্তাব নিরাপত্তা পরিষদে খারিজ হয়ে গিয়েছিল। এর মধ্যে যুক্তরাষ্ট্রের প্রস্তাবটি রাশিয়ার ভেটোতে অকার্যকর হয়। প্রয়োজনীয় ৯ ভোট পেতে ব্যর্থ হয় রাশিয়ার করা বাকি দুটি খসড়া।

জাতিসংঘে নিন্দা প্রস্তাব খারিজ হয়ে যাওয়ার পর রাশিয়ার রাষ্ট্রদূত ভাসেলি নেবেনজিয়া বলেন, রাসায়নিক হামলার বিষয়ে যে তদন্তের আহ্বান জানিয়েছিলেন, তার ফলের জন্য কেন আপনারা অপেক্ষা করলেন না। তিনি প্রশ্ন ছুড়ে দেন, তদন্তের আগেই কেন আপনারা হামলা করলেন? সিরিয়ায় হামলা চালিয়ে যুক্তরাষ্ট্র, ফ্রান্স ও যুক্তরাজ্য আন্তর্জাতিক আইনের প্রতি বৃদ্ধাঙ্গুলি প্রদর্শন করেছে বলেও অভিযোগ করেন তিনি। দৌমায় কোনো বিষাক্ত গ্যাস ব্যবহূত হয়েছে কি না তা খতিয়ে দেখতে অর্গানাইজেশন ফর প্রোহিবিশন অব কেমিক্যাল উইপনের (ওপিসিডব্লিউ) তদন্ত কর্মকর্তারা সিরিয়ায় পৌঁছেছেন। শনিবার থেকেই দলটির কাজ শুরু করার কথা ছিল। পশ্চিমা দেশ ও বিভিন্ন সংস্থা বিদ্রোহীদের ওপর রাসায়নিক হামলার জন্য বাশার বাহিনীকে দায়ী করলেও সিরিয়া ও তাদের মিত্র রাশিয়া বলছে, দৌমায় বিষাক্ত গ্যাস ব্যবহারের কোনো প্রমাণ পাওয়া যায়নি।

শনিবার নিরাপত্তা পরিষদের বৈঠকে ফ্রান্স, যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্য তাদের সামরিক হামলাকে বৈধ অ্যাখ্যা দিয়ে এর পক্ষে অবস্থান নেয়। জাতিসংঘে যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূত নিকি হ্যালি বলেন, সিরিয়ার রাসায়নিক অস্ত্র কর্মসূচিকে পঙ্গু বানিয়ে দেওয়া গেছে বলে আত্মবিশ্বাসী আমরা। সিরিয়ার শাসনব্যবস্থা যদি আমাদের ইচ্ছার পরীক্ষা নেওয়ার মতো বোকা হয়, তাহলে এই চাপ অব্যাহত রাখতেও প্রস্তুত আমরা। সিরিয়ার রাসায়নিক অস্ত্র কর্মসূচির লাগাম টানতে ও সন্ত্রাসীদের নিশ্চিহ্ন করতে এই জোট নিরাপত্তা পরিষদে নতুন একটি প্রস্তাব নিয়ে কাজ করছে বলে শনিবার জাতিসংঘে ফ্রান্সের রাষ্ট্রদূত ফ্রাঙ্কো দেলাত্রে জানিয়েছেন।

এদিকে রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন বিষয়টিকে সামরিক আগ্রাসন বলে আখ্যা দিয়ে জানিয়েছেন, এই হামলা সিরিয়ার মানবিক সঙ্কট বাড়াবে বই কমাবে না। এর ফলে আন্তর্জাতিক পরিস্থিতি আরো ঘোলা হবে বলেও হুশিয়ার করেন তিনি। হামলায় যুক্তরাষ্ট্রকে সতর্ক করলেও পাল্টা হামলার ব্যপারে কোনো মন্তব্য করেননি পুতিন। তবে পুতিনের প্রতিনিধি ওয়াশিংটনে রাশিয়ার রাষ্ট্রদূত অ্যানাটোলি অ্যান্তোনোভ বলেন, রাশিয়াকে হুমকি দেওয়া হচ্ছে। এটা কিন্তু কোনোভাবেই মেনে নেওয়া হবে না। আমরা সতর্ক করছি, এই হামলার ফল ভয়ঙ্কর হবে। তার দায় সম্পূর্ণভাবে পড়বে ওয়াশিংটন, লন্ডন আর প্যারিসের ওপর। তবে একই সঙ্গে রাশিয়া জানিয়েছে, সিরিয়ায় তাদের সামরিক ঘাঁটিগুলো এই হামলায় অক্ষত রয়েছে।

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads