• শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪২৯

বিদেশ

মাইক পম্পেওর সঙ্গে গোপন বৈঠক

  • ডেস্ক রিপোর্ট
  • প্রকাশিত ১৯ এপ্রিল ২০১৮

উত্তর কোরিয়ার সর্বোচ্চ নেতা কিম জং উনের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের গোয়েন্দা সংস্থা সিআইএপ্রধানের গোপন বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছে বলে ওয়াশিংটনের বরাত দিয়ে জানিয়েছে দ্য গার্ডিয়ান। ইস্টারের উৎসব চলাকালীন সময়ে গত মার্চের শেষ এবং এপ্রিলের শুরুর কোনো এক সময়ে ট্রাম্প এবং কিমের সম্ভাব্য সম্মেলন নিয়ে ওই গোপন বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছিল।

বার্তা সংস্থা অ্যাসোসিয়েট প্রেস যুক্তরাষ্ট্রের কর্মকর্তাদের উদ্ধৃতি দিয়ে ওই গোপন বৈঠকের সত্যতা নিশ্চিত করেছে। প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প সিআইএপ্রধানকে পররাষ্ট্রমন্ত্রী হিসেবে মনোনীত করার পরই এমন বৈঠকের আয়োজন করা হয়। অবশ্য এখনো সিআইএ কর্তৃপক্ষ ওই বৈঠকের সত্যতা নিশ্চিত করেনি। এমনকি হোয়াইট হাউজের এক মুখপাত্র বলেন, ‘আমরা সিআইএপ্রধানের ভ্রমণ নিয়ে কোনো মন্তব্য করতে চাই না।’ ২০০০ সালের পর যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী পর্যায়ের কোনো কর্তাব্যক্তি এবারই প্রথম উত্তর কোরিয়া সফর করলেন।

গোপন এই বৈঠক নিয়ে ওয়াশিংটন পোস্ট রিপোর্ট করার কয়েক ঘণ্টা আগেই ট্রাম্প সাংবাদিকদের বলেন, ‘আমরা উত্তর কোরিয়ার সঙ্গে সরাসরি আলোচনা শুরু করেছি। উচ্চ পর্যায়ে, উত্তর কোরিয়ার শীর্ষ পর্যায়ের কর্মকর্তাদের সঙ্গে আমাদের সরাসরি আলোচনা হয়েছে। আমি সত্যিই বিশ্বাস করি খুবই ভালো কিছু হবে। অনেক কিছুই ঘটছে। ভালো কিছুও ঘটছে।’ ফ্লোরিডাতে জাপানের প্রধানমন্ত্রী শিনজো অ্যাবের সঙ্গে বৈঠকের সময় ট্রাম্প বলেন, ‘কী ঘটে তা আমরা দেখব। কারণ এটাই সর্বশেষ ফলাফল যা গণনা করা হচ্ছে, এর কারণ এই নয় যে আমরা বৈঠকের ব্যাপারে ভাবছি।’

আগামী জুন অথবা তার কিছু আগেই দক্ষিণ কোরিয়ার মধ্যস্থতায় যুক্তরাষ্ট্র এবং উত্তর কোরিয়ার মধ্যকার সম্মেলন অনুষ্ঠিত হতে পারে। যদিও এখন পর্যন্ত ওই সম্মেলন কোথায় অনুষ্ঠিত হবে তা কোনো পক্ষই নিশ্চিত করেনি। তবে তৃতীয় পক্ষ হিসেবে মঙ্গোলিয়া তাদের দেশে এই গুরুত্বপূর্ণ সম্মেলন করার আহ্বান জানিয়েছে।

স্ত্রীকে ক্ষমতায় আনছেন উন

উত্তর কোরিয়ার রাষ্ট্রীয় ক্ষমতা কাঠামোয় নেতৃত্বের জায়গায় নতুন মুখ হিসেবে আসছেন কিম জং উনের স্ত্রী রি সল জু। সম্প্রতি দেশটির রাষ্ট্রীয় মিডিয়া কেসিএনএ’র রিপোর্টে সর্বোচ্চ নেতার স্ত্রীকে ‘সম্মানিত ফার্স্ট লেডি’ হিসেবে সম্বোধন করা হচ্ছে বলে জানিয়েছে সিএনএন। উত্তর কোরিয়ার রাজনীতি-বিষয়ক বিশ্লেষকরা স্ত্রীকে রাজনীতিতে সামনে এগিয়ে নিয়ে আসাকে কিম জং উনের রাজনৈতিক সংস্কার ভাবনার বহিঃপ্রকাশ হিসেবে দেখছেন।

এতদিন পর্যন্ত দেশটির মিডিয়াগুলোয় রি সল জুকে ‘কমরেড’ হিসেবে সম্বোধন করা হচ্ছে। এ বিষয়ে কোরিয়া ইকোনমিক ইনস্টিটিউটের সিনিয়র প্রধান টরি স্ট্যাঙ্গারন বলেন, ‘উত্তর কোরিয়ায় কোনো কিছুই দুর্ঘটনাবশত নয়। প্রত্যেকটি পদক্ষেপ কোনো কারণেই কোরিওগ্রাফ করা হয়। রি’র পদোন্নয়ন উত্তর কোরিয়ায় কিমের পরিবারকে আরো শক্তিশালী করতে সাহায্য করবে। কিন্তু একই সঙ্গে দেশটি সম্পর্কে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের দৃষ্টিভঙ্গিও পাল্টাবে।’

বিশ্বের অন্যান্য দেশের প্রধানদের স্ত্রীদের যে পদমর্যাদা দেওয়া হয় তা কিমের বাবা এবং দাদার স্ত্রীদের বেলায় দেওয়া হয়নি। তবে ১৯৭০ সালের দিকে কিম ইল সুংয়ের স্ত্রী কিম সুং আই’কে সর্বশেষ ‘ফার্স্ট লেডি’ হিসেবে ডাকা হতো। কিন্তু ১৯৭৪ সালের পর দেশটির কোনো মিডিয়ায়ই প্রেসিডেন্টের স্ত্রীকে ফার্স্ট লেডি পদমর্যাদা দেওয়া হয়নি। তারপরও কিম ইল সুং অথবা কিম জং ইলের আমলে সর্বোচ্চ নেতার স্ত্রীকে ‘কমরেড’ হিসেবেই ডাকা হতো। বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, রি’কে ফার্স্ট লেডি পদমার্যাদা দেওয়ার ফলে পশ্চিমা দেশগুলো উত্তর কোরিয়া সম্পর্কে যে ধারণা পোষণ করে তা কিছুটা হলেও পাল্টাবে।

শুধু স্ত্রীকেই নয়, নিজের বোনকেও নেতৃত্বের সামনের সারিতে নিয়ে এসেছেন উন। গত ফেব্রুয়ারিতে শীতের অলিম্পিকে বোন কিম ইয়ো জংকে দক্ষিণ কোরিয়ায় পাঠান তিনি। আর কিমের বোনের হাত ধরেই যুক্তরাষ্ট্র-উত্তর কোরিয়ার সম্ভাব্য সম্মেলনের সূত্রপাত হয়েছে, যাকে সহজেই উত্তর কোরিয়ার কূটনৈতিক সফলতা বলা যায়।

গত শনিবার কিম জং উনকে ছাড়াই ন্যাশনাল ব্যালেট অব চীনে সফরে যান রি সল জু। ওই সফরে রি চীনের কমিউনিস্ট পার্টির আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের প্রধানের সঙ্গে বৈঠক করেন। শুধু তাই নয়, গত মাসে হঠাৎ করেই কিম চীনে সফর করলে তখনো সফরসঙ্গী হয়েছিলেন রি। তখন রাষ্ট্রীয় গুরুত্বপূর্ণ বৈঠকেও চীনা প্রেসিডেন্টের মুখোমুখি স্বামীর সঙ্গে ছিলেন তিনি। ধারণা করা হচ্ছে আগামী মে অথবা জুনে অনুষ্ঠিতব্য ট্রাম্প-উন সম্মেলনেও উপস্থিত থাকবেন রি।

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads