• শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪২৯

বিদেশ

উ. কোরিয়ার পারমাণবিক ও ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষা স্থগিত

  • ডেস্ক রিপোর্ট
  • প্রকাশিত ২২ এপ্রিল ২০১৮

সব ধরনের ক্ষেপণাস্ত্র ও পারমাণবিক পরীক্ষা স্থগিতের ঘোষণা দিয়েছে উত্তর কোরিয়া। এ ছাড়া একটি পারমাণবিক পরীক্ষা কেন্দ্রের কাজও বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। অর্থনৈতিক অগ্রগতি ধরে রাখা এবং কোরীয় উপদ্বীপে শান্তি প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে কোরিয়ার শীর্ষ নেতা কিম জং উন এ সিদ্ধান্ত নিয়েছেন বলে জানিয়েছে কোরিয়ান সেন্ট্রাল নিউজ এজেন্সি (কেসিএনএ)। উত্তর কোরীয় নেতার এমন সিন্ধান্তকে স্বাগত জানিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র, জাপান ও দক্ষিণ কোরিয়া। খবর বিবিসি ও সিএনএন।

উত্তর কোরিয়ার ক্ষমতাসীন ওয়ার্কার্স পাটির কেন্দ্রীয় কমিটি দক্ষিণ কোরিয়া ও যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে বহুল প্রত্যাশিত আলোচনার প্রস্তুতি নিতে শুক্রবার বৈঠকে বসে। শনিবার দেশটির রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যম জানায়, বৈঠকে পরমাণু ও ক্ষেপণাস্ত্র কর্মসূচি বন্ধের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে এবং আজ থেকেই তা কার্যকর। পরমাণু অস্ত্র উন্নয়নে লক্ষ্যমাত্রা অর্জিত হওয়ায় কিম জং উন এ সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। একই সঙ্গে তিনি শিগগিরই পরমাণু বিস্তার রোধ বিষয়ক চুক্তি বাস্তবায়নেরও প্রতিশ্রুতি ব্যক্ত করেন। খবরে বলা হয়, অবিলম্বে পরমাণু পরীক্ষা কেন্দ্র ধংস করবে বলে জানায় উত্তর কোরিয়া।

উত্তর কোরিয়ার এ সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। এক টুইটে তিনি বলেন, পরমাণু ও ক্ষেপণাস্ত্র কর্মসূচি বন্ধ এবং পরীক্ষা কেন্দ্র ধংসের সিদ্ধান্ত উত্তর কোরিয়া এবং বিশ্বের জন্য অনেক ভালো খবর। এ সিদ্ধান্তকে বড় ধরনের অগ্রগতি উল্লেখ করে কিম-ট্রাম্প বৈঠক নিয়ে আবারো আশাবাদ ব্যক্ত করেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট।

পিয়ংইয়ংয়ের ঘোষণাকে স্বাগত জানিয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট। টুইটারে তিনি বলেন, উত্তর কোরিয়া ও পৃথিবীর জন্য এটি খুবই ভালো সংবাদ। এটি বিরাট অগ্রগতি। এর আগে বৃহস্পতিবারও তিনি বলেছিলেন, উত্তর কোরিয়া যদি পারমাণবিক পথ থেকে সরে আসে তাহলে দেশটির জন্য উজ্জ্বল ভবিষ্যৎ অপেক্ষা করছে। মানবাধিকার লংঘন ও পারমাণবিক কর্মসূচির কারণে দশককাল ধরে আন্তর্জাতিক নিষেধাজ্ঞায় থাকা উত্তর কোরিয়ার আলোচনার প্রস্তাবে সাড়া দিয়ে গত মাসে বিশ্বকে অবাক করে দিয়েছিলেন ট্রাম্প।

এরপর জুনের প্রথমদিকে কিংবা তারও আগে কিমের সঙ্গে বৈঠকের প্রস্তুতি নিতে প্রশাসনকে নির্দেশ দেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট। বৈঠকস্থল হিসেবে তৃতীয় কোনো দেশকেই বেছে নেওয়া হতে পারে। ইতোমধ্যে বেশ কয়েকটি স্থানকে বৈঠকের সম্ভাব্য স্থান হিসেবে বিবেচনা করা হয়েছে। রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, দুই কোরিয়ার ডিমিলিটারাইজ জোন কিংবা বেইজিংয়ে যুক্তরাষ্ট্র ও উত্তর কোরিয়ার শীর্ষ নেতাদের এ সরাসরি বৈঠক অনুষ্ঠিত হতে পারে। অন্য কোনো এশীয় দেশ কিংবা ইউরোপের যেকোনো স্থানেও বৈঠকের সম্ভাবনা আছে। এমনকি আন্তর্জাতিক জলসীমায় কোনো নৌযানের মধ্যে ট্রাম্প-কিমের বৈঠকের বিষয়টিকেও বিবেচনায় রাখা হচ্ছে।

পিয়ংইয়ংয়ের এমন উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়েছেন জাপানের প্রধানমন্ত্রী শিনজো অ্যাবে। তিনি বলেন, উত্তর কোরিয়ার এগিয়ে যাওয়ার এ পদক্ষেপকে স্বাগত জানাই। তাদেরকে যাচাইযোগ্য ও স্থায়ীভাবে পরমাণু ও ক্ষেপণাস্ত্র কর্মসূচি বন্ধ করতে হবে। পিয়ংইয়ংয়ের পরমাণু কার্যক্রম বন্ধের পদক্ষেপকে ‘অর্থবহ অগ্রগতি’ হিসেবে বর্ণনা করেছেন দক্ষিণ কোরিয়ার প্রেসিডেন্টের এক মুখপাত্রও।

কিমের এ সিদ্ধান্ত দুই দেশের আসন্ন বৈঠকে ইতিবাচক প্রভাব ফেলবে বলে মন্তব্য করেছে মুন জায়ে ইনের দফতর। ১৯৫০-৫৩ পর্যন্ত দুই কোরিয়ার যুদ্ধ হয়েছিল। যুদ্ধ সমাপ্তিতে কোনো শান্তি চুক্তি না হওয়ায় দেশ দুটি এখনো কার্যত যুদ্ধবিরতির মধ্যেই আছে। ফেব্রুয়ারিতে পিয়ংচ্যাংয়ে শীতকালীন অলিম্পিককে কেন্দ্র করে দুই কোরিয়ার মধ্যে সম্পর্কের বরফ গলতে শুরু করে।

১৯৮৪ থেকে ২০১৭ সাল পর্যন্ত প্রায় ১২০টি ক্ষেপণাস্ত্রের পরীক্ষা চালায় উত্তর কোরিয়া। ২০০৬ সাল থেকে পরমাণু অস্ত্রের পরীক্ষা শুরু করে দেশটি। ২০১৭ সালের সেপ্টেম্বর পর্যন্ত তারা ছয়টি পরমাণু অস্ত্রের পরীক্ষা চালায়। আন্তর্জাতিক আইন লংঘন করে এসব পরীক্ষার কারণে একের পর এক নিষেধাজ্ঞায় ভেঙে পড়ে দেশটির অর্থনীতি।

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads