• বৃহস্পতিবার, ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪২৮

বিদেশ

কিমের লক্ষ্য অর্থনৈতিক সমৃদ্ধি

  • ডেস্ক রিপোর্ট
  • প্রকাশিত ২৩ এপ্রিল ২০১৮

রাষ্ট্রীয় ‘সমান্তরাল উন্নয়ন’ বা ‘বায়ুজিন’ নীতিমালা থেকে সরে এসেছেন উত্তর কোরিয়ার সর্বোচ্চ নেতা কিম জং উন। দেশটির ক্ষমতায় বসার পর ২০১৩ সালে পরমাণু অস্ত্র এবং অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি উন্নয়নের সমান্তরাল নীতি নিয়েছিলেন তিনি। কিন্তু গত শনিবার উন এক ঘোষণায় পরমাণু কার্যক্রম বন্ধের ঘোষণা দিয়ে অর্থনৈতিক উন্নয়ন এগিয়ে রাখার ঘোষণা দিলেন। নতুন কৌশলগত নীতিমালা অনুসারে এখন থেকে উত্তর কোরিয়া নতুন কোনো আন্তঃমহাদেশীয় ও দূরপাল্লার ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষা করবে না। শুধু তাই নয়, দেশটির সর্বাধিক আলোচিত পরমাণু পরীক্ষা কেন্দ্রটিও শিগগির বন্ধ করে দেওয়া হবে। বায়ুজিন নীতিমালা সফল হওয়ায় এই নীতিমালা গ্রহণ করা হয়েছে বলেও জানান উন।

বায়ুজিন নীতির অধীনে কিম দেশটিতে একটি বিশেষ ইকোনমিক জোন সৃষ্টি করেছেন। বহির্দেশীয় বিনিয়োগকারীদের বিনিয়োগে আকৃষ্ট করতেই এই ইকোনমিক জোনের সৃষ্টি হলেও, দেশটির ওপর আরোপিত অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞা রহিত না হলে কিমের এই স্বপ্ন পূরণ হবে না। অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির স্বপ্ন পূরণ করতে হলে কিমের আন্তর্জাতিক সহায়তা দরকার হবে। উল্লেখ্য, ১৯৮০ সালে চীনের তৎকালীন নেতা দেং জিয়াং পিং পশ্চিমাদের জন্য দুয়ার খুলে দেশের ব্যাপক উন্নয়ন করেছিলেন।

এমন সময় কিম জং উন নতুন নীতিমালার ঘোষণা দিলেন যখন দক্ষিণ কোরিয়ার প্রেসিডেন্ট মুন জায়ে ইনের সঙ্গে বৈঠক অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা রয়েছে। এ ছাড়াও আগামী কয়েক সপ্তাহের মধ্যেই যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে উনের ঐতিহাসিক সম্মেলন অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা রয়েছে।

বিশ্লেষকদের মতে, ঠিক কয়েক দশক আগে সোভিয়েত ইউনিয়ন সমঝোতার ভিত্তিতে পরমাণু ইস্যুতে যে নীতি গ্রহণ করেছিল উত্তর কোরিয়াও একই নীতি গ্রহণ করছে। দক্ষিণ কোরীয় নীতিনির্ধারকদের মতে, কিম জং উন পরমাণু প্রকল্প বন্ধের ঘোষণা দিয়ে ওয়াশিংটন থেকে শান্তি চুক্তি, অর্থনৈতিক সহায়তা এবং নিরাপত্তার নিশ্চয়তা আদায় করে নিতে পারে। ফলে স্বাভাবিকভাবেই উত্তর কোরিয়া অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির দিকে পূর্ণ মনোযোগ দিতে পারবে। দক্ষিণ কোরিয়ার সাবেক মন্ত্রী লি জং সিওক স্ট্রেইট টাইমসকে বলেন, ‘তিনি (উন) চীনের মতো দ্রুত অর্থনৈতিক উন্নয়ন চাইছেন। তার বাবার আমলের উত্তর কোরিয়ার চেয়ে এই উত্তর কোরিয়া অনেক ভিন্ন। আমরা উনের আমলের পরমাণু প্রকল্পই শুধু দেখেছি, কিন্তু অন্য দিকগুলো দেখিনি। শুধু তিন বেলা খাবারের নিশ্চয়তার জন্য তিনি পরমাণু প্রকল্প ত্যাগ করবেন না।’ যদিও গবেষক লি সুং ইউন মনে করেন, উত্তর কোরিয়া তার পুরনো কৌশল ব্যবহার করে শত্রুদের দ্বিধান্বিত করার চেষ্টা করছে।

এদিকে যুক্তরাষ্ট্রের কর্মকর্তাদের মতে, তারা উত্তর কোরিয়ার পরমাণু প্রকল্প বন্ধের ঘোষণার প্রতি বিশ্বাস রাখতে পারছেন না। কারণ এর আগেও দুই দফায় চুক্তি ভঙ্গ করেছিল দেশটি। ১৯৯৪ সালে যুক্তরাষ্ট্র অভিযোগ এনেছিল যে, উত্তর কোরিয়া চুক্তি ভঙ্গ করে গোপনে ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধিকরণ প্রকল্প চালাচ্ছে। এরপর ২০০৫ সালে আবারো একই অভিযোগ আনা হয় দেশটির বিরুদ্ধে। ২০১২ সালে উত্তর কোরিয়া অপর একটি চুক্তিতে ঐকমত্যে আসার পরেই দূরপাল্লার ক্ষেপণাস্ত্র উৎক্ষেপণ করেছিল। তারপরও কিম জং উনের গত শনিবারের ঘোষণাকে স্বাগত জানিয়েছে ওয়াশিংটন, সিউল, বেইজিং এবং টোকিও। যদিও উনের ঘোষণায় কবে নাগাদ পরমাণু প্রকল্প বন্ধ করা হবে তা নিয়ে সুস্পষ্ট বক্তব্য না থাকায় এই পরিস্থিতি নিয়ে কিছুটা সন্দিহান পশ্চিমা বিশ্ব।

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads