• শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪২৯

বিদেশ

কতজন ব্রিটিশ তিন সন্তান নিতে পারেন!

  • ডেস্ক রিপোর্ট
  • প্রকাশিত ২৬ এপ্রিল ২০১৮

ব্রিটিশ রাজবধূ কেট মিডলটন তার তৃতীয় সন্তানের জন্ম দিলেন গত সোমবার। রাষ্ট্রীয়ভাবে উদযাপন করে মা ও সন্তানকে স্বাগত জানানো হলো। আনন্দেরই বিষয়, কারণ রাজপুত্তুর উইলিয়ামের তিন সন্তান লালন-পালন করার জন্য ব্যাংক ডাকাতি করতে হবে না। কিন্তু অধিকাংশ মধ্যবিত্ত ব্রিটিশদের অবস্থা এরকমই।

সেন্টার ফর ইকোনমিকস অ্যান্ড বিজনেস রিসার্চের (সিইবিআর) পরিসংখ্যান মতে, যুক্তরাজ্যে ২১ বছর বয়স পর্যন্ত একজন শিশুর পেছনে ২ লাখ ৩২ হাজার পাউন্ড বা ২ কোটি ৭১ লাখ ৩২ হাজার টাকা ব্যয় হয়। লন্ডনে এই ব্যয় বেড়ে হয় ২ লাখ ৫৪ হাজার পাউন্ড বা দুই কোটি ৯৭ লাখ ৩৬ হাজার টাকা। এর মানে, লন্ডনে কোনো পরিবার যদি তিনটি সন্তান লালন পালন করতে চান তাহলে তাদের ব্যয় হবে এক মিলিয়ন পাউন্ডেরও বেশি। এই ব্যয়ের মধ্যে বেসরকারি স্কুল অথবা বিশ্ববিদ্যালয়ের খরচ ধরা হয়নি। যদি তা হয়, তাহলে বাড়তি আরো দুই লাখ পাউন্ড মোট ব্যয়ের সঙ্গে যুক্ত হবে।

যুক্তরাজ্যে মধ্যবিত্তদের বড় একটি অংশ বাসাবাড়িতে সাহায্যকারীর কাজ করে থাকেন। এই কাজ করে বার্ষিক আয়কর দেওয়ার পর তাদের হাতে থাকে সর্বোচ্চ ২৯ হাজার ৩০০ পাউন্ড বা ৩৩ লাখ ৬৮ হাজার ৪০০ টাকা। এ ছাড়া লন্ডনের কোনো পরিবারকে ‘নিজের একটি আবাসনে’র জন্য ন্যূনতম ৪ লাখ ৭২ হাজার পাউন্ড বা ৫ কোটি ৫২ লাখ ৭২ হাজার টাকা পরিশোধ করতে হয়। ২০১৪ সালে ২১ শতাংশ দম্পতির ওপর করা এক গবেষণা উল্লেখ করে সিইবিআর জানায়, অর্থনৈতিক কারণে তরুণরা সন্তান নিতে দেরি করছেন। বিশেষ করে যাদের জন্ম (মিলেনিয়ালস) ১৯৮০ থেকে ১৯৯০ সালের মধ্যে তাদের জন্য চ্যালেঞ্জ আরো বেশি। কারণ এই প্রজন্মের আয়ের হার তুলনামূলক কম, ফলে সন্তান জন্ম দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিতে গেলে তাদের হাজারবার ভাবতে হয়। বিবিসির এক রিপোর্টে বলা হয়, মিলেনিয়ালসদের আয়ের অধিকাংশই চলে যায় আবাসন খাতে, যেখানে এর আগের প্রজন্মগুলোতে এ বিষয়ে তেমন ভাবতে হতো না। এরপর বাচ্চাদের নিরাপত্তা এবং একটু ভালো থাকার জন্য চলে যায় মাসের উপার্জনের প্রায় সবটুকুই।

বিপরীতে অর্থ উপার্জন করার জন্য কেট এবং উইলিয়ামকে কখনো রাতের ঘুম তাড়িয়ে চিন্তা করতে বসতে হয় না। তারা দাফতরিক কাজ করে সম্মানী পাওয়া ছাড়াও বাবা প্রিন্স চার্লসের কাছ থেকে প্রচুর অর্থ পেয়ে থাকেন। এ ছাড়া তাদের একটি ম্যানসন আছে এবং ‘ক্রাউন প্রিন্স’ হওয়ার সুবাদে লন্ডনে কেসিংটন প্রাসাদে বিনামূল্যে থাকতে পারেন তারা।

এটা তো গেল জীবন-ধারণের জন্য অর্থ উপার্জনের বিষয়। এ ছাড়া সন্তান গ্রহণ নীতিমালায় রাষ্ট্রীয় পর্যায়েও পরিবর্তন এনেছে যুক্তরাজ্য। লুমবার্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের সেন্টার ফর রিসার্চ ইন সোশ্যাল পলিসির প্রধান ডোনাল্ড রিশ্চের জানিয়েছেন, এই নীতিমালা পরিবর্তনের ফলে সরকারের পক্ষ থেকেই দম্পতিদের তিন সন্তান না নেওয়ার ব্যাপারে উৎসাহী করা হচ্ছে। এরই অংশ হিসেবে ২০১৭ সাল থেকে যেসব দম্পতির তিন সন্তান রয়েছে তাদের ভাতা কমিয়ে দেওয়া হয়।

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads