• বৃহস্পতিবার, ১৮ এপ্রিল ২০২৪, ৫ বৈশাখ ১৪২৯

বিদেশ

আইএস-নিয়ন্ত্রিত এলাকায় অভিযানে বাশার বাহিনী

সিরিয়াকে বিভক্ত করার চেষ্টা করছে যুক্তরাষ্ট্র : ল্যাভরভ

  • ডেস্ক রিপোর্ট
  • প্রকাশিত ৩০ এপ্রিল ২০১৮

সিরিয়ার রাজধানী দামেস্কের ইসলামিক স্টেট (আইএস) নিয়ন্ত্রিত হাজার আল-আসওয়াদ এলাকায় বিমান হামলা চালিয়েছে সরকারি বাহিনী। স্থানীয় সময় রোববার এ বিমান হামলা চালানো হয়। এদিকে রাশিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী সের্গেই ল্যাভরভ বলেছেন, সিরিয়াকে বিভক্ত করার চেষ্টা করছে যুক্তরাষ্ট্র। শনিবার মস্কোতে তুরস্ক ও ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠকে তিনি এ অভিযোগ করেন। খবর বিবিসি ও আলজাজিরা।

আইএসকে হটিয়ে এলাকাটির নিয়ন্ত্রণ পুনরায় নিতে শনিবার অভিযান শুরু করেছে দেশটির সরকারি বাহিনী। এলাকাটিতে সিরীয় সেনাবাহিনী ও তাদের মিত্র বাহিনীগুলোর সঙ্গে আইএস জঙ্গিদের তীব্র লড়াই চলছে। সিরিয়া যুদ্ধের পর্যবেক্ষক একটি গোষ্ঠী এবং দেশটির রাষ্ট্রীয় টেলিভিশন লড়াইয়ের বিষয়টি নিশ্চিত করেছে। গোলাবিনিময়ের পাশাপাশি হালকা অস্ত্রও ব্যবহূত হচ্ছে। লড়াইয়ে সেনাবাহিনী বড় ধরনের অগ্রগতি অর্জন করেছে বলে সিরিয়ার রাষ্ট্রীয় টেলিভিশনের খবরে বলা হয়েছে। ব্রিটেনভিত্তিক পর্যবেক্ষক সংস্থা সিরিয়ান অবজারভেটরি ফর হিউম্যান রাইটস জানিয়েছে, ঘনবসতিপূর্ণ ওই এলাকার কয়েকটি ভবনের নিয়ন্ত্রণ নিয়েছে সিরীয় বাহিনী।

আইএস-নিয়ন্ত্রিত ওই এলাকাটি ফিলিস্তিনি শরণার্থী শিবির ইয়ারমৌকের কাছে। এর মধ্যে আল-কাদাম জেলার কিছু অংশ ও হাজার আল-আসওয়াদ তাদের নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। টেলিভিশনে সমপ্রচারিত ফুটেজে দেখা গেছে, আইএস-নিয়ন্ত্রিত এলাকাটির পাশ দিয়ে সরকারি বাহিনীর ট্যাঙ্ক এগিয়ে যাচ্ছে। এ ছাড়া ক্ষতিগ্রস্ত রাস্তা ধরে উর্দি পরা সৈন্যদের এগিয়ে যেতে দেখা গেছে। তাদের মাথার ওপর ঘন কালো ধোঁয়ার মেঘ। চারপাশে উড়ন্ত গোলা ও গোলা বিস্ফোরিত হওয়ার শব্দ, হালকা অস্ত্রের একটানা গুলিবর্ষণ এবং ভারী বিস্ফোরণের শব্দ প্রতিধ্বনিত হচ্ছে।

চলতি মাসে বিদ্রোহীদের পরাজিত করে রাজধানী দামেস্কের কাছে পূর্ব ঘৌতা পুনরায় নিয়ন্ত্রণে নেয় সিরিয়ার সরকারি বাহিনী। এরপর দামেস্কের কাছে হাতছাড়া হওয়া ছোট ছোট এলাকা পুনরুদ্ধারের দিকে নজর দিয়েছে সরকার। গত বছর দুটি ক্ষিপ্রগতির অভিযানের মুখে সিরিয়ায় নিজেদের নিয়ন্ত্রণে থাকা অধিকাংশ এলাকার নিয়ন্ত্রণ হারায় জঙ্গিগোষ্ঠী আইএস। ওই দুটি অভিযানের একটি চালিয়েছিল রাশিয়া ও ইরান সমর্থিত সিরিয়ার সেনাবাহিনী। অপরটি যুক্তরাষ্ট্র সমর্থিত কুর্দি বাহিনীর জোট ও আরব বেসামরিক বাহিনীগুলো চালায়। এই দুই অভিযানের মুখে পড়ে আইএস সিরিয়ায় দুর্বল হয়ে পড়ে।

বর্তমানে পূর্বাঞ্চলের মরুভূমি পরিবেষ্টিত কিছু এলাকা এবং দামেস্কের দক্ষিণে কয়েকটি বিচ্ছিন্ন অংশ শুধু আইএসের নিয়ন্ত্রণে আছে। পাশাপাশি জর্ডান ও ইসরাইল সীমান্তের কয়েকটি এলাকা আইএসের প্রতি আনুগত্য ঘোষণা করা একটি গোষ্ঠীর নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। ২০১৫ সালে সিরিয়ার গৃহযুদ্ধে রাশিয়ার হস্তক্ষেপের পর প্রেসিডেন্ট বাশার আল আসাদের বিজয় সূচিত হতে থাকে। এতে তাকে ক্ষমতা থেকে হটানোর যে আশা বিদ্রোহীরা করেছিল তা চুরমার হয়ে যায়। তবে এরপরও বিদ্রোহী গোষ্ঠীগুলো সিরিয়ার উত্তর-পশ্চিমাঞ্চল এবং দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের বিশাল এলাকার নিয়ন্ত্রণ ধরে রেখেছে।

এদিকে রাশিয়া অভিযোগ করেছে, সিরিয়াকে বিভক্ত করার চেষ্টা করছে যুক্তরাষ্ট্র। শনিবার মস্কোতে তুরস্ক ও ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠকে রুশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ অভিযোগ করেন। ল্যাভরভ বলেন, সিরিয়ার আঞ্চলিক অখণ্ডতা সম্পর্কে যুক্তরাষ্ট্রের বিবৃতিতে এটা স্পষ্ট হয়ে গেছে- তারা মধ্যপ্রাচ্য সংস্কার এবং দেশটিকে বিভক্ত করার পরিকল্পনা করেছে।

তিনি আরো বলেন, সিরিয়াকে সন্ত্রাসীমুক্ত করতে প্রেসিডেন্ট বাশার আল আসাদের প্রয়োজন ইরান, তুরস্ক ও রাশিয়ার সহযোগিতা। অন্যদিকে তুরস্কের পররাষ্ট্রমন্ত্রী মেভলুত কাভুসোগলু বলেছেন, সিরিয়ায় অস্থিতিশীলতা এড়াতে রাশিয়া, ইরান ও তুরস্কের জাতিসংঘের সঙ্গে কাজ করা দরকার। কারণ এ তিনটি দেশ বাশার সরকার ও বিদ্রোহীদের মধ্যস্থতাকারী হিসেবে কাজ করতে সক্ষম।

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads