• শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪২৯

বিদেশ

বিশ্বে এক বছরে ১২০ সাংবাদিক নিহত

  • ডেস্ক রিপোর্ট
  • প্রকাশিত ০৪ মে ২০১৮

বিশ্বজুড়ে ২০১৭-এর মে থেকে এ বছরের এপ্রিল পর্যন্ত দায়িত্ব পালনকালে ১২০ সাংবাদিক নিহত হয়েছেন। তাদের মধ্যে গত বছর নিহত হয়েছেন ৮৮ জন। আর চলতি বছরের প্রথম চার মাসেই এক নারীসহ ৩২ সাংবাদিক নিহত হয়েছেন। গড়ে প্রতি মাসে বিশ্বজুড়ে নিহত হচ্ছেন ৮ সাংবাদিক। ওয়ার্ল্ড প্রেস ইনস্টিটিউটের (আইপিআই) এক প্রতিবেদনে এসব তথ্য উঠে এসেছে। এদিকে ৩মে ‘বিশ্ব মুক্ত গণমাধ্যম দিবস’কে কেন্দ্র করে এক হচ্ছে বিশ্বের প্রায় ৪০টি সংবাদ সংস্থা ও সংবাদমাধ্যম। গতকাল বৃহস্পতিবার শুরু হওয়া এই ক্যাম্পেইনের মূল উদ্দেশ্য সংবাদমাধ্যমের স্বাধীনতা।

গতকাল বিশ্ব মুক্ত গণমাধ্যম দিবসকে সামনে রেখে প্রকাশিত এই প্রতিবেদনে বলা হয়, গত বছর নিহত ৮৮ সাংবাদিকের মধ্যে ছয়জন নারী। ২০১৭ সালের শেষ আট মাসে নিহত হয়েছিলেন ৫৫ সাংবাদিক। তাদের বেশিরভাগকেই টার্গেট করে হত্যা করা হয়েছিল। নিহতদের মধ্যে ৪৬ জন দুর্নীতিবিষয়ক খবর সংগ্রহে জড়িত ছিলেন এবং তা প্রকাশের চেষ্টা করছিলেন।

এরমধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো ৩০ এপ্রিল আফগানিস্তানে কর্তব্যরত অবস্থায় নিহত হন ১০ সাংবাদিক।  এ ছাড়া চলতি বছর স্লোভাকিয়ায়ই সরকারের দুর্নীতির অনুসন্ধান করতে গিয়ে প্রাণ হারাতে হয় সাংবাদিক জ্যান কুসিয়াককে। গত ২২ ফেব্রুয়ারি তার বাড়ি থেকে প্রেমিকা ও তার মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। এই হত্যাকাণ্ডের পর পদত্যাগে বাধ্য হন দেশটির প্রধানমন্ত্রী রবার্ট ফিকো। ইসরাইলি বাহিনীর গুলিতে প্রাণ হারিয়েছেন ফিলিস্তিনি দুই সাংবাদিক। এ ছাড়া মালটায় গাড়িবোমা হামলা, ভারতে নিজ বাড়ির সামনে খুন হওয়া গৌরী লঙ্কেশ, মেক্সিকোর অনুসন্ধানী প্রতিবেদক জ্যাভিয়ের ভালদেস কার্দেনাসের মৃত্যুকে উল্লেখ করা হয়।

আইপিআইর ডেথ ওয়াচ প্রকল্প থেকে জানা গেছে, ১৯৯৭ সাল থেকে দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে নিহত হয়েছেন ১৮০১ সাংবাদিক। সবচেয়ে বেশি ছিল ২০১২ সালে। ওই বছর নিহত হন ১৩৩ জন এবং পরের বছর এই সংখ্যা ছিল ১২১ জন। সংস্থাটির অনুসন্ধানে উঠে এসেছে, গত ১২ মাসে হত্যাকাণ্ডের শিকার সাংবাদিকদের মামলার অগ্রগতি তেমন হয়নি। কয়েকজনকে আটক করলেও খুব বেশি তদন্ত আগায়নি।

ইউরোপে সাংবাদিক হত্যার বিষয়টি সারা বিশ্বে আলোচনায় এলেও আরো অনেক মৃত্যু খুব একটা মনোযোগ পায় না। লাতিন আমেরিকায় সবচেয়ে বেশি সাংবাদিক হত্যাকাণ্ডের শিকার হয়েছেন। তারা বেশিরভাগই সেখানকার মাদক পাচার ও দুর্নীতি নিয়ে প্রতিবেদন প্রকাশ করছিলেন। শুধু মেক্সিকোয়ই প্রাণ হারিয়েছেন ১২ জন। আইপিআইর নির্বাহী পরিচালক বারবারা ত্রিনোফি বলেন, সাংবাদিককে হত্যা করা হচ্ছে সংবাদকে দমিয়ে রাখার নৃশংসতম পন্থা। ডেথ ওয়াচের মাধ্যমে আমরা দেখি, এই মৃত্যু শুধু সাংবাদিকের পরিবার, স্বজন ও বন্ধুদের জন্যই কষ্ট নয়, বরং গণতন্ত্রের জন্যও হুমকি নিয়ে এসেছে।

এদিকে ‘মিডিয়া ইউনাইট ফর প্রেস ফ্রিডম’ প্রকল্পের আওতায় সংবাদমাধ্যমের স্বাধীনতার জন্য গতকাল এক হয়েছে ৪০টি আন্তর্জাতিক গণমাধ্যম। চলতি বছরের প্রতিবাদ্য বিষয়, ‘কিপিং পাওয়ার ইন চেক: মিডিয়া, জাস্টিস অ্যান্ড রুল অব ল’। গণতন্ত্রে সংবাদমাধ্যমের স্বাধীনতা কতটা গুরুত্বপূর্ণ সেটাই তুলে ধরতে এই আয়োজন। এই সংবাদ সংস্থাগুলো ইউনেস্কোর মুক্ত গণমাধ্যম দিবসে বার্তা দিচ্ছে ‘পড়ুন, শুনুন ও বুঝুন। আর এটা শুরু হবে সংবাদমাধ্যমের স্বাধীনতার মধ্য দিয়ে।’ দিবস উপলক্ষে আয়োজিত মূল অনুষ্ঠানে অংশ নেন ৯০০ সাংবাদিক, সরকারি প্রতিনিধি ও ব্যবসায়ীরা।

গণমাধ্যমগুলোর মধ্যে রয়েছে বিবিসি নিউজ, দ্য ইকোনোমিস্ট, দ্য নিউইয়র্ক টাইমস, রিপাবলিকা, ওয়াল স্ট্রিট জার্নাল, দ্য গার্ডিয়ান, ফিন্যান্সিয়াল টাইমস, সিএনএন, ইউএসএ টুডে, এনবিসিসি নিউজসহ আরো বেশ কিছু গণমাধ্যম।

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads