• বৃহস্পতিবার, ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪২৮

বিদেশ

কোরীয় উপদ্বীপ থেকে সেনা কমানোর নির্দেশ ট্রাম্পের

  • ডেস্ক রিপোর্ট
  • প্রকাশিত ০৫ মে ২০১৮

দক্ষিণ কোরিয়া থেকে যুক্তরাষ্ট্রের সেনা সংখ্যা কমানোর জন্য পেন্টাগনকে প্রস্তুতি নিতে নির্দেশ দিয়েছেন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। সেনাবাহিনীর পেছনে ব্যয় হওয়া অর্থ কমানোর জন্যই ট্রাম্প এমন সিদ্ধান্ত নিচ্ছেন বলে জানিয়েছে ওয়াশিংটন পোস্ট। উত্তর কোরিয়ার সর্বোচ্চ নেতা কিম জং উনের সঙ্গে বৈঠকের কয়েক সপ্তাহ আগেই ট্রাম্পের এমন সিদ্ধান্ত ঘিরে শঙ্কা এবং ইতিবাচক পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে। অবশ্য পেন্টাগন কর্মকর্তাদের মতে দক্ষিণ কোরিয়া থেকে সেনা সংখ্যা কমানোর ক্ষেত্রে উত্তর কোরিয়ার সঙ্গে বৈঠকে কোনো প্রভাব পড়বে না। খবর নিউইয়র্ক টাইমসের।

দুই কোরিয়ার মধ্যকার শান্তিচুক্তির ফলে দক্ষিণ কোরিয়ায় যুক্তরাষ্ট্রের ২৮ হাজার ৫০০ সেনা সদস্যের প্রয়োজন নেই বলে মনে করেন পেন্টাগন কর্মকর্তারা। জাপানকে সুরক্ষিত রাখতে কয়েক দশক ধরেই দক্ষিণ কোরিয়ায় সেনা মোতায়েন করে রাখে যুক্তরাষ্ট্র। কিন্তু এর মধ্যেই পরমাণু ক্ষমতায় শক্তিধর হয়ে ওঠে উত্তর কোরিয়া।

গত সপ্তাহেই যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিরক্ষামন্ত্রী জিম ম্যাত্তিস উদ্বেগ প্রকাশ করে বলেন, ‘বিষয়টি নিয়ে আমরা প্রথমে আমাদের মিত্রদের সঙ্গে আলোচনা করছি এবং অবশ্যই উত্তর কোরিয়ার সঙ্গেও আলোচনা হবে। এখন আমরা পুরো বিষয়টির প্রক্রিয়ার মধ্যে আছি। কি হতে যাচ্ছে অথবা কি হতে পারে এমন সম্ভাবনা নিয়ে এখন আলোচনা না করাই ভালো।’

দক্ষিণ কোরিয়ায় মোতায়েনকৃত সেনাদের ব্যয় সংক্রান্ত চুক্তি শেষ হবে চলতি বছরের শেষে। বছরে কোরীয় উপদ্বীপে যুক্তরাষ্ট্রের সেনাবাহিনীর পেছনে ৮০০ মিলিয়ন ডলারের বেশি ব্যয় হয়। এতদিন পর্যন্ত মোতায়েনকৃত সেনাদের মোট ব্যয়ের অর্ধেক দিত দক্ষিণ কোরিয়া। কিন্তু ট্রাম্প প্রশাসন দাবি করছে এই ব্যয়ের পুরো অংশই দক্ষিণ কোরিয়াকে দিতে হবে। এ নিয়ে ওয়াশিংটন এবং সিউলের মধ্যে কয়েক দফা বৈঠকও হয়েছে। তবে পেন্টাগন ও যুক্তরাষ্ট্রের অন্যান্য এজেন্সি মনে করে, সেনা সংখ্যা কমানোর ফলে দক্ষিণ কোরিয়ায় যুক্তরাষ্ট্রের উপস্থিতিকে দুর্বল করবে এবং জাপানের জন্য শঙ্কার কারণ হয়ে দাঁড়াবে। বিশ্লেষকদের মতে, কিম জং উনের সঙ্গে আসন্ন সম্মেলনে দক্ষিণ কোরিয়া থেকে সেনা সংখ্যা কমানোর সিদ্ধান্ত হতে পারে ট্রাম্পের পক্ষ থেকে উত্তর কোরিয়াকে দেওয়া উপহার।

জর্জটাউন বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ভিক্টর ডি, চা’র মতে দক্ষিণ কোরিয়া থেকে সেনা প্রত্যাহারের ফলে ট্রাম্পের বহুমুখী লাভ হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। এর ফলে যুক্তরাষ্ট্রের অর্থ বাঁচবে এবং কিম জং উনের সঙ্গে আলোচনায় এগিয়ে থাকবেন ট্রাম্প এমনটিও মনে করেন তিনি। যদিও গত সপ্তাহেই দক্ষিণ কোরিয়া সরকার জানিয়েছে যে, তাদের ভূখণ্ডে এখনো যুক্তরাষ্ট্রের সেনা উপস্থিতির দরকার আছে। তবে একই সময় মুন জায়ে ইনের উপদেষ্টা মুন চুয়াং ইন বলেন, ‘দুই কোরিয়ার মধ্যে শান্তিচুক্তি হলে যুক্তরাষ্ট্রের সেনাবাহিনীর কি হবে? তাদের চলমান উপস্থিতি বিচার করা কষ্টসাধ্য হয়ে যাবে।’

দক্ষিণ কোরিয়া থেকে যুক্তরাষ্ট্রের সেনা উপস্থিতি কমানোর দাবি ছিল উত্তর কোরিয়ার। কিন্তু গত সপ্তাহে দুই কোরিয়ার মধ্যকার সফল বৈঠকের আগেই ওই অবস্থান থেকে সরে আসে উত্তর কোরিয়া। কিম জং উনের এই অবস্থানকে কোরীয় উপদ্বীপবিষয়ক বিশ্লেষকরা কৌশলগত অবস্থান হিসেবে দেখছেন। যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামার আমলেও একবার দক্ষিণ কোরিয়ায় মোতায়েনকৃত সৈন্য সংখ্যা কমানোর সম্ভাবনা তৈরি হয়েছিল।

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads