• বৃহস্পতিবার, ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪২৮

বিদেশ

অস্ত্র আইনে মিত্রদের খেপালেন ট্রাম্প

  • ডেস্ক রিপোর্ট
  • প্রকাশিত ০৭ মে ২০১৮

এনআরএ কনভেনশনে দেওয়া প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের বক্তব্য ঘিরে অসন্তোষ সৃষ্টি হয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের দীর্ঘদিনের মিত্র ফ্রান্স এবং যুক্তরাজ্যের মধ্যে। গত শুক্রবার ডালাসে অনুষ্ঠিত এক কনভেনশনে বন্দুক নিয়ন্ত্রণের ফলে প্যারিসে ২০১৫ সালে সন্ত্রাসী হামলা এবং লন্ডনে সম্প্রতি ছুরি হামলার ঘটনা ঘটেছে- এমন কথা ট্রাম্প বলেছেন। খবর সিএনএন।

প্যারিসের প্রসঙ্গে ট্রাম্প হাতের আঙুলকে বন্দুকের মতো করে বলেন, ‘তারা সময় নিয়ে এবং একজন একজন করে গুলি করেছে- বুম, এখানে আস, বুম, এখানে আস, বুম।’ এমন বক্তব্যের প্রতিক্রিয়ায় ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ভবন এলিজি প্রাসাদ এক বিবৃতিতে জানায়, ‘সমাজে বন্দুকের অবাধ প্রবাহ সন্ত্রাসী হামলার বিরুদ্ধে ঢাল হতে পারে না। এমন ধরনের সন্ত্রাসী হামলা পরিকল্পনাকে এই প্রবাহ উসকে দিতে পারে।’ এ ছাড়াও দেশটির সাবেক প্রেসিডেন্ট ফ্রাঁসোয়া ওলাদ টুইটারে বলেন, ‘ফ্রান্স এবং এর মূল্যবোধ সম্পর্কে ট্রাম্প কী চিন্তা করেন তার লজ্জাজনক উক্তি এবং অশ্লীল অঙ্গভঙ্গিই তা প্রমাণ করে। অবশ্য তার এমন অসম্মানজনক এবং মাত্রাতিরিক্ত বক্তব্য দুই দেশের সম্পর্কে কোনো প্রভাব ফেলবে না।’

২০১৫ সালের ১৩ নভেম্বর প্যারিসে এক সিরিজ সন্ত্রাসী হামলায় কমপক্ষে ১৩০ জন নিহত ও শতাধিক আহত হয়। হামলায় সন্ত্রাসীরা স্বয়ংক্রিয় রাইফেল এবং বোমা ব্যবহার করেছিল।

এ ছাড়াও ট্রাম্প লন্ডনের সাম্প্রতিক ছুরি হামলা প্রসঙ্গেও মন্তব্য করেন। একটি নামহীন হাসপাতালের উদাহরণ দিয়ে তিনি বলেন, ‘তারা বন্দুক ব্যবহার করে না। তাদের ছুরি আছে এবং হাসপাতালের মেঝে রক্তে ভরে গেছে। তারা একে সেনাবাহিনীর যুদ্ধকালীন হাসপাতালের চিত্রের সঙ্গে তুলনা করেন। লন্ডনবাসী এতে অভ্যস্ত হয়ে গেছে।’ অবশ্য ব্রিটিশ কর্তৃপক্ষ এমন মন্তব্যের জবাবে ফ্রান্সের মতো কোনো প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেনি। কিন্তু দেশটির সাবেক মন্ত্রী চার্লি ফ্যালকনার গত শনিবারের টুইটবার্তায় বলেন, ‘যুক্তরাজ্যের তুলনায় যুক্তরাষ্ট্রে হত্যার হার ৫ গুণ বেশি। পৃথিবীতে একজন ব্যক্তিও (যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ছাড়া) পাওয়া যাবে না যিনি মনে করেন, বন্দুকের সহজপ্রাপ্তির মাধ্যমে হত্যার হার কমাবে।’

হোয়াইট হাউজ সূত্রে জানা যায়, শনিবার ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী থেরেসা মের সঙ্গে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের ফোনালাপ হয়েছে। এই ফোনালাপে তাদের মধ্যে চীনা বাণিজ্য, উত্তর কোরিয়া, ইরান এবং ব্রিটেনে ট্রাম্পের আসন্ন সফর নিয়ে আলোচনা হয়। ট্রাম্পের এনআরএ’র উক্তি নিয়ে দুই নেতার মধ্যে কোনো আলোচনা হয়েছে কি না তা জানা যায়নি।

চলতি বছরের ১৪ ফেব্রুয়ারি যুক্তরাষ্ট্রের ফ্লোরিডার একটি স্কুলে বন্দুকধারীর গুলিতে ১৭ জন শিক্ষার্থী নিহত হয়। ওই ঘটনার পর গোটা যুক্তরাষ্ট্রজুড়ে বন্দুক নিয়ন্ত্রণ আইন কঠোর করার পক্ষে বিপুল সংখ্যক মানুষ বিক্ষোভ করে। দেশটির অধিকাংশ স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থীরা প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের বিরুদ্ধে রাস্তায় নেমে আসলেও সরকারের পক্ষ থেকে ইতিবাচক বক্তব্য আসেনি। উল্টো কেন যুক্তরাষ্ট্রের সমাজে অবাধ অস্ত্রের প্রবেশ দরকার তা প্রতিষ্ঠিত করার চেষ্টা হয়েছে। ট্রাম্পের সাম্প্রতিক বক্তব্য সেই চেষ্টারই অংশ বলে মনে করছেন অনেক বিশ্লেষক।

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads