• শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪২৮

মালয়েশিয়ার সাবেক প্রধানমন্ত্রী মাহাথির মোহাম্মদ

সংরক্ষিত ছবি

বিদেশ

মালয়েশিয়ার জাতীয় নির্বাচন আজ

ফিরে আসতে পারে মাহাথির যুগ!

  • ডেস্ক রিপোর্ট
  • প্রকাশিত ০৯ মে ২০১৮

মালয়েশিয়ায় আজ অনুষ্ঠিত হচ্ছে দেশটির ১৩তম জাতীয় সাধারণ নির্বাচন। দেশটির পাঁচ দশকের গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ার মধ্যে এবারের নির্বাচনকে সবচেয়ে বিতর্কিত এবং ‘উত্তপ্ত’ বলে অভিহিত করেছে দ্য ডিপ্লোম্যাট। ব্যাপক দুর্নীতির অভিযোগে অভিযুক্ত বর্তমান প্রধানমন্ত্রী নাজিব রাজাকের বিপরীতে এবার প্রার্থী হিসেবে দাঁড়িয়েছেন সাবেক প্রধানমন্ত্রী মাহাথির মোহাম্মদ।

ক্ষমতাসীন পার্টি থেকে বের হয়ে নিজের প্রতিষ্ঠিত প্রিবুমি বারসাতু নিয়ে বিরোধীদলীয় পাকাতান হারাপানের জোটভুক্ত হয়েছেন মাহাথির। ৯২ বছর বয়সী এই নেতা ইউনাইটেড মালয়াস ন্যাশনাল অরগানাইজেশনের (ইউএমএনও) হয়েই দীর্ঘ ২২ বছর মালয়েশিয়ার ক্ষমতায় ছিলেন। ২০০৩ সালে বেশ কয়েকটি অভিযোগের মুখে ক্ষমতা ছেড়ে দেন তিনি।

মাহাথির মোহাম্মদই সেই ব্যক্তি যিনি মালয়েশিয়ায় এক পার্টির শাসন কায়েম করেছিলেন। এরই ধারাবাহিকতায় ১৯৫৭ সালের পর থেকে ইউএমএনও পার্টি একবারও জাতীয় নির্বাচনে হারেনি। কিন্তু মাহাথিরই এখন তার প্রতিষ্ঠিত পার্টি ইমেজকে ভাঙতে চাইছেন বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা। বিরোধী দলকে শক্তিশালী করে নাগরিক স্বাধীনতাকে সামনে এনে রাজনীতিতে নতুন কিছুর সূচনা করতে চাইছেন তিনি।

সম্প্রতি টাইম ম্যাজাগিনকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, আমি ভেবেছিলাম অবসরে যাব। কিন্তু ক্ষমতা ছাড়ার পরেই পরবর্তী প্রধানমন্ত্রী লাইনচ্যুত হয়ে যান। ফলে আমি পার্টি ত্যাগ করি এবং তার বিরুদ্ধে প্রচারণা শুরু করি। ভেবেছিলাম বর্তমান প্রধানমন্ত্রী তার বাবার মতো ভালো হবেন। মানুষ এই প্রধানমন্ত্রীকে ভালোবাসত। যদিও সে সম্পূর্ণ ভিন্ন প্রকৃতির মানুষ। অর্থ দিয়ে সবকিছু করা যায় এটা তার বিশ্বাস। তার দুর্নীতির পর প্রতিনিধিরা আমাকে দেশের জন্য কিছু একটা করতে বলে। একপর্যায়ে আমি তার বিরুদ্ধে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিই।

বর্তমান প্রধানমন্ত্রী কত টাকার দুর্নীতি করেছেন তা মালয়েশিয়ার সাধারণ জনগণ জানে না বা বুঝতেও চায় না। কিন্তু এই সরকারের আমলে সবকিছুতে মূল্যবৃদ্ধির কারণে তাদের জীবনযাত্রায় প্রভাব পড়েছে। নতুন নতুন আয়কর যুক্ত হয়েছে। সাধারণ নাগরিকদের সন্তানরা এখন বৃত্তি পাওয়া দূরের কথা, চাকরিও পাচ্ছে না। দেশের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি ভালো হলেও রাষ্ট্রীয় তহবিলে অর্থসঙ্কট দেখা দিয়েছে। একের পর এক দুর্নীতির অভিযোগে সরকারি কর্মকর্তারা অভিযুক্ত হচ্ছেন।

তাই এবারের নির্বাচনে দুর্নীতি এবং অর্থ চুরির বিষয়টি গুরুত্বপূর্ণ হয়ে দাঁড়াবে অভিমত বিশ্লেষকদের। অভিযোগ আছে রাষ্ট্রীয় তহবিল থেকে অর্ধশত মিলিয়ন ডলারের বেশি পরিমাণ অর্থ নাজিব রাজাকের ব্যক্তিগত ব্যাংক অ্যাকাউন্টে স্থানান্তরিত হয়েছে। আর বিরোধী জোট নির্বাচনী প্রচারণার ক্ষেত্রে এই ইস্যুগুলোকেই সামনে এনেছে। পাশাপাশি মাহাথির মোহাম্মদ আগামী ২০২০ সালের মধ্যে মালয়েশিয়াকে উন্নত দেশ হিসেবে গড়ার ঘোষণা দিয়েছেন। যদিও মাহাথিরের বিরুদ্ধেও বেশকিছু অভিযোগ ইতোমধ্যে তোলা হয়েছে। সেই অভিযোগ সত্ত্বেও সম্প্রতি এক জরিপে দেখা যায়, মাহাথিরের পাকাতান হারাপান জোট ৪৩ দশমিক ৭ শতাংশ পপুলার ভোট পেয়ে নির্বাচনে জয় লাভ করবে। অন্যদিকে ধারণা করা হচ্ছে নাজিব রাজাকের জোট বারিসান নাসিওনাল পেতে পারে ৪০ দশমিক ৩ শতাংশ পপুলার ভোট।

বৈশ্বিক রাজনীতিতে মালয়েশিয়ার ভোট বেশ গুরুত্ব বহন করছে। রাজাকের আমলে দেশটির পররাষ্ট্রনীতি অধিকাংশ ক্ষেত্রেই সফল হয়েছে। আসিয়ানে নিজেদের শক্তিশালী অবস্থান ঘোষণা করতে পেরেছে মালয়েশিয়া। এ ছাড়া মিয়ানমার থেকে পালিয়ে আসা রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দিয়েও রাজাক সরকার আন্তর্জাতিক সুনাম কুড়িয়েছে। এরপরই আছে চীনের সঙ্গে বাণিজ্যিক চুক্তি ও সম্পর্ক বিস্তার। এবারের নির্বাচনে যদি রাজাকের দল ক্ষমতায় না আসতে পারে তাহলে মালয়েশিয়ার ভবিষ্যৎ পররাষ্ট্রনীতি কোন দিকে যাবে তা নিয়ে সংশয় রয়েছে বিশ্লেষকদের।

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads