• শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪২৮
ইউরোপে সত্যিকারের বন্ধুর খোঁজে ট্রাম্প

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প

সংরক্ষিত ছবি

বিদেশ

ইউরোপে সত্যিকারের বন্ধুর খোঁজে ট্রাম্প

  • ডেস্ক রিপোর্ট
  • প্রকাশিত ০৬ জুন ২০১৮

পশ্চিমা মিত্রদের মধ্যে সত্যিকারের বন্ধু খুঁজছেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। এমন একজন বন্ধু যার সঙ্গে এই কঠিন সময়ে পরামর্শ থেকে শুরু করে খোলাখুলি আলোচনা করতে পারবেন তিনি। এক্ষেত্রে ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাখোঁ যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্টের অনেকটা কাছাকাছি ছিলেন বলে মনে করছেন অনেক রাজনীতিক বিশ্লেষক। ইরানের সঙ্গে পরমাণু চুক্তি সংক্রান্ত সমস্যা, শরণার্থী এবং জলবায়ু সমস্যা, সিঙ্গাপুরে উত্তর কোরিয়ার সঙ্গে বৈঠক সংক্রান্ত সবকিছুই ট্রাম্পকে বন্ধুহীন অবস্থায় করতে হচ্ছে। এমন অবস্থায় ইউরোপিয়ান নেতাদের মধ্যে জার্মান চ্যান্সেলর অ্যাঙ্গেলা মেরকেল হতে পারতেন ট্রাম্পের যোগ্য বন্ধু।

সম্প্রতি ট্রাম্প এবং ম্যাখোঁর মধ্যকার ফোনালাপে খুব একটা সন্তোষজনক আলাপ হয়েছে তা বলা যাবে না। সিএনএনের মতে, যুক্তরাষ্ট্রের মিত্রদের মধ্যে ম্যাখোঁ খোলাখুলি ট্রাম্পের সমালোচনা করার পরেও কীভাবে ট্রাম্প তার সঙ্গে সম্পর্ক রাখছেন তা অনেকটাই অবাক করার বিষয়। তবে দুঃখজনক বিষয়, ট্রাম্প এখনো গোটা পরিস্থিতি বুঝতে ব্যর্থ হয়েছেন। ম্যাখোঁ এবং মেরকেলের সঙ্গে ট্রাম্পের একটা শীতল সম্পর্ক রয়েছে। যদিও সম্প্রতি ট্রাম্প এবং ম্যাখোঁকে একে অপরের গালে চুমু দিতে দেখা গেছে।

এদিকে গত রোববার ম্যাখোঁর দীর্ঘ প্রতীক্ষিত প্রকল্পের প্রতি সমর্থন দেন মেরকেল। এই সমর্থনের ফলে ইউরোপীয় দেশগুলোর সেনা সদস্যদের নিয়ে একটি যৌথবাহিনী গঠিত হবে। এই বাহিনী বিশ্বের যেকোনো প্রান্তে অভিযান পরিচালনা করতে পারে। ইউরোপের বর্তমান সামরিক জোটে ট্রাম্পের মতো অবিশ্বস্ত মিত্রের প্রতি আর ভরসা করতে পারছেন না তারা।

কিন্তু ট্রাম্পের জন্য সবচেয়ে অস্বস্তিকর বিষয় হলো মেরকেলের সাম্প্রতিক বিবৃতি এবং ম্যাখোঁর ফোনকল। নতুন এই সামরিক জোটের মধ্য দিয়ে মেরকেল ব্রিটেনকে ইউরোপের প্রতিরক্ষা ব্যবস্থায় যুক্ত রাখতে চাইছেন। রোববারের বিবৃতিতে মেরকেল স্পষ্টতই ট্রান্স আটলান্টিক চুক্তি, শরণার্থী, অর্থায়ন এবং প্রতিরক্ষা ও নিরাপত্তা নিয়ে খোলাখুলি কথা বলেছেন। জার্মান চ্যান্সেলর এমন ইউরোপীয় অর্থনৈতিক ব্যবস্থার কথা উল্লেখ করেছেন, যে ব্যবস্থায় ইউরোপের গরিব রাষ্ট্রগুলোকে সহায়তা করা যায়। শুধু তাই নয়, ইউরোপে ঠিক কত সংখ্যক মানুষ অভিবাসন প্রত্যাশায় নথি জমা দিয়েছে তা নিরূপণ করতে সীমান্তবাহিনী এবং ইউরোপিয়ান অভিবাসন সংস্থাকে নির্দেশ দিয়েছেন তিনি।

মেরকেলের এমন বিবৃতির পরেই মূলত ম্যাখোঁর সঙ্গে ফোনালাপ হয় ট্রাম্পের। হোয়াইট হাউজ থেকে ওই ফোনালাপ সম্পর্কে বলা হয়, ‘দুই নেতা লিবিয়ার শরণার্থী সমস্যা সমাধান নিয়ে আলোচনা করেছেন। প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প ইউরোপের সঙ্গে পুনরায় বাণিজ্যিক ভারসাম্য বজায় রাখার প্রয়োজনীয়তা নিয়েও কথা বলেন।’ যেদিন এই দুই নেতার মধ্যে ফোনালাপ হয় ওই দিনই যুক্তরাষ্ট্র ইউরোপের স্টিল এবং অ্যালুমিনিয়াম রফতানির ওপর বাড়তি শুল্ক আরোপের সিদ্ধান্ত ঘোষণা করে। ম্যাখোঁ অবশ্য এই সিদ্ধান্তকে ‘শুধু অবৈধই নয়, বিভিন্ন দিক দিয়ে এটা একটা ভুল সিদ্ধান্ত’ বলেন।

জি-৭-এর বৈঠকের এবারের উদ্যোক্তা দেশ কানাডা। সম্মেলনে ট্রাম্পের উপস্থিতিতেই অন্য নেতারা যুক্তরাষ্ট্রের শুল্ক সংক্রান্ত সিদ্ধান্তের বিরোধিতা করেন। যদিও গত রোববার এনবিসি চ্যানেলকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো ট্রাম্পের সিদ্ধান্তকে অপমানজনক বলে আখ্যা দিয়েছিলেন। বিশ্লেষকদের মতে, জি-৭ যেকোনো মুহূর্তে জি-৬ হয়ে যেতে পারে। আর এমনটা হলে যুক্তরাষ্ট্রের জন্য হবে বিশাল কূটনৈতিক ও রাজনৈতিক ধাক্কা। সকল মিত্রকে হারিয়ে ট্রাম্প হয়ে যেতে পারেন পুরোপুরি একা।

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads