• শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪২৯
ট্রাম্পের জিরো টলারেন্স নীতির  প্রতিবাদে উত্তাল যুক্তরাষ্ট্র

হোয়াইট হাউজের সামনে লাফায়েত স্কয়ার পার্কে ১০ হাজারের বেশি মানুষ জড়ো হয়

ছবি : ইন্টারনেট

বিদেশ

ট্রাম্পের জিরো টলারেন্স নীতির প্রতিবাদে উত্তাল যুক্তরাষ্ট্র

অভিবাসন ইস্যু

  • ডেস্ক রিপোর্ট
  • প্রকাশিত ০২ জুলাই ২০১৮

অভিবাসী ইস্যুতে প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের জিরো টলারেন্স নীতির প্রতিবাদে বিক্ষোভে উত্তাল হয়ে উঠেছে যুক্তরাষ্ট্র। গত শনিবার দেশটির ৫০টিরও বেশি শহরে বিক্ষোভে ফেটে পড়ে কয়েক লাখ মানুষ। তারা প্রেসিডেন্ট অভিবাসন নীতির কড়া সমালোচনা করার পাশাপাশি আটক অভিবাসী শিশুদের পরিবারের কাছে ফিরিয়ে দেওয়ারও দাবি জানায়। খবর সিএনএন ও বিবিসি। 

এদিন হোয়াইট হাউজের সামনে লাফায়েত স্কয়ার পার্কে ১০ হাজারের বেশি মানুষ জড়ো হয়। সেখানে ছিল ক্ষোভ ও বেদনার পরিবেশ। এখান থেকে ক্যাপিটল হিলের দিকে মিছিল এগিয়ে যায়। বোস্টন, শিকাগো, লস অ্যাঞ্জেলেস, নিউইয়র্ক ও পোর্টল্যান্ডে রাস্তায় নেমে লোকজন বিক্ষোভ করে। ওয়াশিংটনে অ্যালিসিয়া কিজ ও লিন-ম্যানুয়েল মিরান্ডার এবং লস অ্যাঞ্জেলেসে জন লিজেন্ডের মতো সেলিব্রেটিরা বিক্ষোভে হাজির হয়।

বিক্ষোভকারীরা জিরো টলারেন্স নীতির কঠোর সমালোচনা ছাড়াও প্রেসিডেন্টের পদত্যাগ দাবি করে। এতে শিশুদের উপস্থিতি ছিল লক্ষণীয়। এক আন্দোলনকারী জানায়, আমি যুক্তরাষ্ট্রে বসবাস করছি, এটা কোনোভাবেই বিশ্বাস করতে পারছি না। আমাদের দেশে কখনো এ ধরনের নীতির বাস্তবায়ন হতে পারে না। আমার বিশ্বাস আটক সব শিশু দ্রুত পরিবারের কাছে ফিরতে পারবে।

সেবাস্টিয়া মেডিনা-টায়াক নামের এক বিক্ষোভকারী বলে, আমরা সীমান্ত বা দেয়ালে বিশ্বাস করি না। আমরা একটা বিষয়ই বুঝি, সেটা হলো পরিবারগুলোর একত্রে থাকা উচিত। পরিবার  থেকে বিচ্ছিন্ন হওয়া এক শিশুর কান্না লাউড স্পিকারে বাজায় তারা। এক ব্রাজিলীয় মা ছেলেকে বিচ্ছিন্ন করার কথা তুলে ধরেন। তিনি বলেন, ছেলের কাছ থেকে ৯ মাস বিচ্ছিন্ন আছি। কিন্তু এমনটা তো হওয়ার কথা ছিল না।

ওয়াশিংটনে মিছিলে অংশ নেওয়া ৫৯ বছরের এক স্কুলশিক্ষক বলেন, এটা খুব সূক্ষ্ম বর্ণবাদ। ভালো মানুষেরা যদি চুপ করে থাকে তাহলে খারাপের জয় হয়। অভিবাসন ইস্যুতে সরকারের নীতির বিরুদ্ধে এ মিছিল করার মানে আমরা কিছু একটা অন্তত করছি। আরেক বিক্ষোভকারী বলেন, দায়িত্ববোধ থেকেই আমরা একত্রিত হয়েছি। যুক্তরাষ্ট্রে যা হচ্ছে, তা কোনোভাবেই মেনে নেওয়া যায় না। আমি একা এ সমস্যা সমাধান করতে পারব না। সবাইকে এর বিরুদ্ধে সরব হতে হবে।

মানবাধিকারকর্মী শার্পটন বলেন, প্রেসিডেন্টের উদ্দেশে পরিষ্কার বার্তা দিতে চাই, আমরা সবাই মিলে দেশকে গড়ে তুলব। অভিবাসীদের রক্ষা করা আমাদের দায়িত্ব। মেক্সিকান বংশোদ্ভূত আইনজীবী রিতা মন্টয়ার (৩৬) জন্ম ক্যালিফোর্নিয়ায়। দুই ও চার বছরের দুই ছেলেকে নিয়ে তিনি প্রতিবাদ জানাতে হাজির হন। তিনি বলেন, আমরা অভিবাসীদের সন্তান। এই দেশ আমাদের জন্য যা করেছে তা আমরা অনেক আগেই শোধ করেছি। এখন এই দেশের উচিত আমাদের সামান্য শ্রদ্ধা জানানো।

তীব্র গরম উপেক্ষা করে বিক্ষোভে অংশ নেওয়া লোকজন ‘লজ্জা! লজ্জা!’ বলে স্লোগান দেন। অনেক মোটর বহরের পাশে প্ল্যাকার্ড হাতে দাঁড়িয়েছিলেন। এসব প্ল্যাকার্ডে অভিবাসন নীতির সমালোচনা লেখা ছিল। একটিতে ছিল, রাজনৈতিক আশ্রয়প্রার্থীরা অপরাধী নয়। অনেকে অভিবাসন ইস্যুতে নিজের অবস্থানের পক্ষে টুইটারে যুক্তি তুলে ধরেন। তাদের মতে, অবৈধভাবে এদেশে আসা লোকদের অবশ্যই দ্রুত তাদের দেশে ফেরত পাঠানো উচিত। কিন্তু বছরের পর বছর ধরে আইনি জটিলতায় যাওয়ার কোনো অর্থ হয় না।

গত মাসের শুরুর দিকে ট্রাম্প সরকার মেক্সিকো সীমান্ত দিয়ে অবৈধভাবে প্রবেশকারীদের গ্রেফতারের নির্দেশ দেয়। অভিযান শুরু হলে আটক পরিবারগুলোর কাছ থেকে শিশুদের বিচ্ছিন্ন করা হয়। গত সপ্তাহে প্রকাশিত সরকারি তথ্য অনুসারে, ২ হাজারেরও বেশি শিশু পরিবার থেকে বিচ্ছিন্ন রয়েছে। এ নিয়ে যুক্তরাষ্ট্র ও বিদেশে ব্যাপক নিন্দা ও প্রতিবাদ শুরু হয়। পরে ট্রাম্প এক নির্বাহী আদশে শিশুদের বিচ্ছিন্ন করা থেকে সরে আসার নির্দেশ দেন। এরই ধারাবাহিকতায় গত শুক্রবার প্রশাসনের কর্মকর্তারা আদালতকে জানান, অবৈধভাবে সীমান্ত দিয়ে প্রবেশকারীদের গ্রেফতার করা বন্ধ হবে না। মা-বাবার সঙ্গে সন্তানদেরও আটক রাখা হবে। গত সপ্তাহে প্রকাশিত সরকারি তথ্য অনুসারে, এখনো পরিবার থেকে বিচ্ছিন্ন রয়েছে প্রায় ২ হাজার শিশু।

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads