• শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪২৮
সিরিয়া পুনর্গঠনে ওয়াশিংটনের সহায়তা চায় মস্কো

ছবি : ইন্টারনেট

বিদেশ

সিরিয়া পুনর্গঠনে ওয়াশিংটনের সহায়তা চায় মস্কো

  • ডেস্ক রিপোর্ট
  • প্রকাশিত ০৫ আগস্ট ২০১৮

যুদ্ধবিধ্বস্ত সিরিয়ার পুনর্গঠন ও শরণার্থীদের প্রত্যাবাসনে ওয়াশিংটনের সহায়তা চেয়ে মস্কো প্রস্তাব দিয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রের এক সরকারি নথিতে এমনটি বলা হয়েছে বলে বিবিসিতে প্রকাশিত প্রতিবেদনে দাবি করা হয়েছে। খুবই গোপনীয় এক যোগাযোগ চ্যানেলের মাধ্যমে যুক্তরাষ্ট্রের শীর্ষ জেনারেলের সঙ্গে রাশিয়া যোগাযোগ করেছে বলে এতে বলা হয়।

খবরে বলা হয়, স্নায়ুযুদ্ধকালীন শত্রুশিবিরে থাকা দেশটিকে নিয়েই সিরিয়ার অবকাঠামো পুনর্নির্মাণে একযোগে কাজ করার পরিকল্পনার কথা জানায় মস্কো। গত ১৯ জুলাই রুশ সামরিক বাহিনীর জেনারেল স্টাফ ভেলেরি গেরাসিমভ যুক্তরাষ্ট্রের জয়েন্ট চিফ অব স্টাফের চেয়ারম্যান মেরিন জেনারেল জোসেফ ডানফোর্ডকে লেখা এক চিঠিতে এ প্রস্তাব দেন। তবে এ বিষয়ে শীতল প্রতিক্রিয়া দেখায় ওয়াশিংটন। সিরিয়ায় সাত বছর ধরে চলা গৃহযুদ্ধের রাজনৈতিক সঙ্কট নিরসন হতে পারে এমন কাজে সমর্থন দিতে আগ্রহী যুক্তরাষ্ট্র। সেক্ষেত্রে জাতিসংঘের পর্যবেক্ষণে কোনো সাধারণ নির্বাচন হলে সে ধরনের পদক্ষেপেই কেবল দেশটি সহায়তা দেবে বলে নথিতে  উল্লেখ করা হয়েছে।

ওই প্রস্তাবের সূত্রেই সিরিয়ার পুনর্গঠনে মস্কোর পরিকল্পনার বিশদ ইঙ্গিত পাওয়া যাচ্ছে। বছরের পর বছর ধরে গৃহযুদ্ধে বিপর্যস্ত সিরিয়ায় যুদ্ধের মোড় ঘুরিয়ে দেয় প্রেসিডেন্ট বাশার আল আসাদ রাশিয়া ও ইরানের সাহায্য নিয়ে। দেশ দুটির সহায়তায় চলতি বছর সরকারি বাহিনী একের পর এক এলাকায় অভিযান চালিয়ে বিরোধীদের পরাজিত করে সেসব অঞ্চল পুনরায় নিয়ন্ত্রণ নেয়। যুদ্ধ শেষ হওয়ায় এখন দেশটির দরকার অবকাঠামোগত উন্নয়ন। রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, তাদের এ ধরনের পদক্ষেপ বাশারের ক্ষমতাকেই সংহত করবে।

প্রস্তাবে বলা হয়েছে সিরিয়া পুনর্গঠনের মাধ্যমে শরণার্থীদের ফিরিয়ে নিতে শাসকদের যন্ত্রপাতি, জ্বালানি ও তহবিলের অভাব রয়েছে। নথিতে সিরিয়ার সরকারের নিয়ন্ত্রিত এলাকারও বিস্তারিত বর্ণনা রয়েছে। উল্লেখ্য, ২০১১ সালে যুক্তরাষ্ট্রের গ্রহণ করা এক নীতিতে বলা হয়েছিল সিরিয়ার প্রেসিডেন্টকে অবশ্যই ক্ষমতা থেকে সরতে হবে। এখন দেশটি সে নীতি থেকে সরে এসেছে।

তবে রুশ যোগাযোগের বিষয়ে কোনো মন্তব্য করতে অস্বীকার করেছে ডানফোর্ডের কার্যালয়। তাৎক্ষণিকভাবে ক্রেমলিন কিংবা রাশিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়েরও কোনো মন্তব্য পাওয়া যায়নি। নথিতে রুশ পরিকল্পনার বিষয়ে বলা হয়েছে, যুক্তরাষ্ট্র তখনই শরণার্থী প্রত্যাবাসনে সমর্থন দেবে যখন তারা নিরাপদ, স্বেচ্ছায় ও সম্মানের সঙ্গে ফিরতে পারবে। জাতিসংঘের হিসাবে যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশটি পুনর্গঠনে প্রয়োজন অন্তত ২৫ হাজার কোটি টাকা।

নথিতে পুতিনকে উদ্ধৃত করে বলা হয়েছে, সিরিয়া ইস্যুতে সামরিক যোগাযোগ দুই দেশের সহযোগিতার উদাহরণ। প্রস্তাবে সিরিয়ার শরণার্থীদের ফেরানোর পরিকল্পনায় জর্ডানকেও যুক্ত করার কথা বলা হয়েছে। জর্ডানে সাড়ে ছয় লাখেরও বেশি সিরীয় শরণার্থী রয়েছে। চিঠিতে যুক্তরাষ্ট্র ও রাশিয়া মিলে সিরিয়ার অবকাঠামো পুনর্গঠন কাজে অর্থ জোগাতে একটি যৌথ গ্রুপ তৈরির প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে। প্রসঙ্গত, ২০১১ সালে সিরিয়ায় সরকারবিরোধী আন্দোলন শুরু হয়। এটি পরবর্তী সময়ে গৃহযুদ্ধে রূপ নেয়। এতে পাঁচ লাখেরও বেশি মানুষ প্রাণ হারিয়েছে। উদ্বাস্তু হয়েছে ১ কোটি ২০ লাখ মানুষ। এর মধ্যে ৬০ লাখেরও বেশি নারী-পুরুষ ও শিশুর আশ্রয় নিয়েছে প্রতিবেশী দেশগুলোতে।

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads