• শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪২৯
সৌদি কনসাল জেনারেলের বাসায় অ্যাসিড-রাসায়নিক

নিহত জামাল খাশোগি

সংগৃহীত ছবি

বিদেশ

সৌদি কনসাল জেনারেলের বাসায় অ্যাসিড-রাসায়নিক

  • ডেস্ক রিপোর্ট
  • প্রকাশিত ১০ নভেম্বর ২০১৮

ইস্তান্বুলে সৌদি কনস্যুলেটে সাংবাদিক জামাল খাশোগি হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় ফের সামনে এলো সৌদি কনসাল জেনারেলের হাত থাকার বিষয়টি। তুর্কি অ্যাটর্নি জেনারেল দফতরের একটি সূত্র উল্লেখ করে আলজাজিরা জানিয়েছে, তাদের তদন্তকারীরা কনসাল জেনারেলের বাসায় হাইড্রোফ্লুওরিক অ্যাসিড এবং অন্যান্য রাসায়নিক শনাক্ত করা হয়েছে।

সাংবাদিক জামাল খাশোগিকে হত্যার পর তার লাশ পুড়িয়ে ভস্মীভূত করার জন্য রাসায়নিক ব্যবহার করা হয়েছিল বলে এর আগে গণমাধ্যমে খবর প্রকাশ হয়েছে। এরপর সৌদি কনসাল জেনারেলের বাসায় রাসায়নিক দ্রব্য সন্ধানের খবর প্রকাশ করা হলো। কনসাল জেনারেলের বাসায় যে রাসায়নিকের সন্ধান পাওয়া গেছে, তা কনসাল জেনারেল মোহাম্মদ আল-ওতাইবির কক্ষেই ছিল। তুর্কি তদন্তকারীরা তার কক্ষের ভেতর এগুলো খুঁজে পায়।

তুরস্ক থেকে আলজাজিরার প্রতিবেদক অ্যান্ডু সিমনস বলেন, খাশোগি হত্যার দুই সপ্তাহ পরও সৗদি কনসাল জেনারেলের বাসায় তল্লাশি চালায় তুরস্কের তদন্তকারী দল। তখনই তারা এসব রাসায়নিকের সন্ধান পেয়েছিল। একটি সূত্রের বরাত দিয়ে সিমনস বলেন, ওই দুই সপ্তাহের মধ্যে জামাল খাশোগির দেহ ভস্মীভূত করার জন্য রাসায়নিক ব্যবহার করা হয়েছিল।

এদিকে তুর্কি পররাষ্ট্রমন্ত্রী মেভলুত কাভুসোগলু বলেছেন, আঙ্কারার হাতে খাশোগি হত্যাকাণ্ড সম্পর্কিত আরো তথ্য রয়েছে। তদন্ত শেষে এসব প্রকাশ করা হবে। তবে তার মরদেহের কী হয়েছিল তা খুঁজে বের করার দায়িত্ব সৌদি আরবের। তিনি বলেন, সরকারের নির্দেশ ছাড়া নিজ দেশের একজন নাগরিককে হত্যা করতে সৌদি আরব থেকে ১৫ জন তুরস্ক যাবে, এমনটা সম্ভব নয়। এর পেছনে দেশটির রাজপরিবার জড়িত বলে তিনি মন্তব্য করেন।

এদিকে তুরস্কের একজন সিনিয়র কর্মকর্তার বরাত দিয়ে বিবিসি জানিয়েছে, খাশোগিকে হত্যার পর সেখানে দুজন বিশেষজ্ঞ পাঠিয়েছিল সৌদি আরব। এদের একজন টক্সিকোলজিস্ট বা বিষতত্ত্বববিদ ও অন্যজন রাসায়নিক বিশেষজ্ঞ।

কর্মকর্তাদের বরাত দিয়ে তুরস্কের ইংরেজি দৈনিক ডেইলি সাবাহ জানিয়েছে, খুনের প্রমাণ লোপাটে পাঠানো দুই ব্যক্তি হচ্ছেন আহমেদ আবদুল আজিজ আলজানোবি এবং খালেদ ইয়াহিয়া আল জাহরান। তারা যথাক্রমে রাসায়নিক বিশেষজ্ঞ এবং বিষতত্ত্ববিদ। ১২ থেকে ১৭ অক্টোবর পর্যন্ত প্রতিদিন তারা কনস্যুলেট ভবন পরিদর্শন করেন।

গত ২ অক্টোবর ইস্তাম্বুলের সৌদি কনস্যুলেট ভবনে প্রবেশের পর নিখোঁজ হন সৌদি অনুসন্ধানী সাংবাদিক জামাল খাশোগি। কনস্যুলেট ভবনে তার হত্যাকাণ্ড সংঘটিত হওয়ার কথা স্বীকার করলেও এর সঙ্গে সৌদি যুবরাজ মুহাম্মদ বিন সালমান কিংবা অন্য কোনো ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তার সংশ্লিষ্টতার অভিযোগ নাকচ করে আসছে দেশটি। তবে সৌদি আরবের এমন দাবি মানছে না তুরস্কসহ আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের বড় অংশ। ইউরোপীয় দেশগুলো এ ইস্যুতে রিয়াদের বিরুদ্ধে সোচ্চার হয়। দেশটির ওপর অস্ত্র নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে জার্মানি। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পও চাপের মুখে পড়েন তার সৌদি সখ্য নিয়ে। দেশের ভেতরে কেবল বিরোধী দল ডেমোক্র্যাট শিবির নয়, নিজ দল রিপাবলিকান পার্টির অভ্যন্তরেও সমালোচিত হওয়ার একপর্যায়ে তিনি এ নিয়ে ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া জানাতে বাধ্য হন। অথচ খাশোগি নিহত হওয়ার এক মাস পেরিয়ে গেলেও এখন পর্যন্ত তার মরদেহের হদিস মেলেনি।

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads