হত্যাকাণ্ডের শিকার সৌদি সাংবাদিক জামাল খাশোগির স্মরণে গত রোববার এক শোকসভা অনুষ্ঠিত হয় ইস্তাম্বুলে। এতে খাশোগির বাগদত্তা হেতিস চেঙ্গিস ও বন্ধু-সুহূদসহ অন্তত ২০০ জন উপস্থিত ছিলেন। শোকসভায় সবাই খাশোগির হত্যাকারীদের বিচার দাবি করেছেন। এদিকে খাশোগির খুনিদের জবাবদিহিতার আওতায় আনা হবে বলে জানিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। রোববার সৌদি যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমানের সঙ্গে ফোনালাপে এ কথা জানান যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী মাইক পম্পেও। খবর বিবিসি, আলজাজিরা ও সিএনএন।
টার্কিস-আরব মিডিয়া অ্যাসোসিয়েশনের প্রধান তুরান কিসলাকি বলেন, খাশোগি হত্যাকারীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দিতে হবে যাতে এমন বর্বর ঘটনার পুনরাবৃত্তি না হয়। আরব বসন্তে গুরুত্বপূর্ণ অবদানের জন্য ২০১১ সালে শান্তিতে নোবেল জয়ী ইয়েমেনি মানবাধিকার কর্মী তাওয়াক্কল কারমান বলেন, এই হত্যাকাণ্ড আইএসের বর্বরতার কথা মনে করিয়ে দেয়। আন্তর্জাতিক চাপের মুখে সৌদি আরব এই হত্যাকাণ্ডের বিষয়টি বিভিন্ন সময় বিভিন্নভাবে ব্যাখ্যা করেছে। প্রথমে তারা খাশোগির নিখোঁজের বিষয়ে কিছু জানে না বলে দাবি করে। পরে বিভিন্ন আলামত ও তথ্য-প্রমাণের কারণে দেশটি স্বীকার করতে বাধ্য হয়, কনস্যুলেটের ভেতরেই খাশোগি হত্যাকাণ্ডের শিকার হন।
এদিকে যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র হিদার ন্যুয়ের্ট ফোনালাপের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত সবাইকে জবাবদিহিতার আওতায় নিয়ে আসবে বলে জোর দিয়ে বলেছে পম্পেও। সৌদি আরবকেও একই ব্যবস্থা নেওয়ার আহ্বান জানান তিনি। এর আগে সৌদি আরব, যুক্তরাষ্ট্র, ব্রিটেন, জার্মানি ও ফ্রান্সের কাছে খাশোগি হত্যাকাণ্ডের অডিও রেকর্ডিং সরবরাহ করেছে তুরস্ক।
গত ২ অক্টোবর ইস্তাম্বুলে সৌদি কনস্যুলেট ভবনে প্রবেশের পর নিখোঁজ হন খাশোগি। কনস্যুলেট ভবনে তার হত্যাকাণ্ড সংঘটিত হওয়ার কথা স্বীকার করলেও এর সঙ্গে সৌদি যুবরাজ মুহাম্মদ বিন সালমান কিংবা অন্য কোনো ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তার সংশ্লিষ্টতার অভিযোগ নাকচ করে আসছে দেশটি। যদিও সৌদি আরবের এমন দাবি মানতে নারাজ তুরস্কসহ আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের বড় অংশ। ইউরোপীয় দেশগুলো এ ইস্যুতে রিয়াদের বিরুদ্ধে সোচ্চার হয়। আন্তর্জাতিক ও অভ্যন্তরীণ চাপের মুখে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পও এই নিয়ে ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া জানান। সর্বশেষ হত্যাকারীদের জবাবদিহিতার আওতায় আনার ঘোষণা দিল যুক্তরাষ্ট্র।