• শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪২৯
ব্রেক্সিট নিয়ে টালমাটাল সপ্তাহ পার থেরেসার

ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী থেরেসা মে

সংগৃহীত ছবি

বিদেশ

ব্রেক্সিট নিয়ে টালমাটাল সপ্তাহ পার থেরেসার

  • ডেস্ক রিপোর্ট
  • প্রকাশিত ১৮ নভেম্বর ২০১৮

টানা কয়েক মাস ধরে আলোচনা চলার পর ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ) থেকে যুক্তরাজ্যের বিচ্ছেদ (ব্রেক্সিট) বিষয়ে খসড়া চুক্তিতে উভয় পক্ষের সম্মতির পর এক সপ্তাহেই ব্রিটেনে রজনীতিতে ঝড় বয়ে গেছে রীতিমতো। একের পর এক মন্ত্রীদের পদত্যাগ, মে’র নেতৃত্বে এমপিদের অনাস্থা প্রস্তাবের চিঠি ও শেষ পর্যন্ত চুক্তিতে অবিচল থাকার বিষয়ে প্রধানমন্ত্রীর ঘোষণার পর দেশটির রাজনীতিতে দেখা দিয়েছে এক অস্থির অবস্থা। এ বিষয়ে সিএনএন ও আলজাজিরার বিশ্লেষণ তুলে ধরা হলো।

যে খসড়া নিয়ে একের পর এক ব্রিটিশমন্ত্রী পদত্যাগ করছেন, তাতে বলা হয়েছে- ২০১৯ সালের ২৯ মার্চ বিচ্ছেদ কার্যকর হবে। এরপর অন্তর্বর্তীকালীন ব্যবস্থা হিসেবে আরো ২১ মাস বর্তমান সম্পর্ক বজায় থাকবে। উভয় পক্ষ ভবিষ্যৎ বাণিজ্য এবং অন্যান্য আদান-প্রদানের সম্পর্ক নির্ধারণে ব্যর্থ হলে অন্তর্বর্তী ব্যবস্থার মেয়াদ আরো বাড়বে। ফলে প্রকৃত বিচ্ছেদ কবে ঘটবে, তার কোনো উল্লেখ নেই। অন্যদিকে আয়ারল্যান্ড সীমান্ত নিয়ে উপযুক্ত সমাধান না হলে অন্তর্বর্তীকালীন সময়ের পরও নর্দান আয়ারল্যান্ড ইইউ আইনের অধীনে থাকবে। তখন যুক্তরাজ্যের বাকি অংশকেও ইইউর কিছু নিয়মনীতি মেনে চলতে হবে।

তবে পদত্যাগকারীরা ইইউ থেকে ব্রিটেনের সম্পূর্ণ বিচ্ছেদের পক্ষে, যাতে ইউরোপ থেকে অবাধ অভিবাসন এবং ব্রিটেনের ওপর ব্রাসেলসের কর্তৃত্ব বন্ধ হয়। এদের বলা হয় ‘হার্ড ব্রেক্সিট গ্রুপ’। তবে অন্যপক্ষ, যাদের ‘সফট ব্রেক্সিট গ্রুপ’ বলা হয়- এরা সম্পূর্ণ বিচ্ছিন্নতার বিরোধী, তারা চান ইউরোপিয়ান ইউনিয়নে থেকে ব্রিটেন যে সুবিধাগুলো পায় সেগুলো অব্যাহত রাখতে। যাতে তাদের ভাষায়, ব্রিটেনে কর্মসংস্থান এবং ইইউ-ব্রিটেন ব্যবসা-বাণিজ্য ক্ষতিগ্রস্ত না হয়।

গত বুধবার ইইউ ও ব্রিটিশ নেতাদের সম্মতিতে পাস হওয়া খসড়া চুক্তি কার্যকরের জন্য সংসদের অনুমোদন প্রয়োজন। ২৫ নভেম্বর ইইউর বিশেষ সম্মেলনে পাস হওয়ার পর খসড়া চুক্তি চূড়ান্ত হওয়ার কথা। তারপর ব্রিটিশ পার্লামেন্ট ও ইইউর সদস্য বাকি ২৭ দেশের পার্লামেন্টের অনুমোদন সাপেক্ষে চুক্তিটি কার্যকর হবে। ডিসেম্বরের শুরুতে চুক্তিটি অনুমোদনের জন্য পার্লামেন্টে তোলা হতে পারে। তবে বিরোধী দল লেবার পার্টি, স্কটিশ ন্যাশনালিস্ট পার্টি এবং সরকারের অংশীদার ডিইউপি এ চুক্তিতে সমর্থন দেবে না বলে জানিয়ে দিয়েছে। এ ছাড়া ক্ষমতাসীন দলের ব্রেক্সিটপন্থি ৫১ এমপি এই চুক্তির বিপক্ষে অবস্থান নিয়েছেন। এর ফলে এই চুক্তি পাস হবে না বলেই ধারণা। সে ক্ষেত্রে বিচ্ছেদ কার্যকরের সময়সীমা পিছিয়ে দেওয়ার পাশাপাশি আবার সমঝোতার প্রয়োজন হতে পারে। এর বিপরীত কিছু ঘটলে আবার সাধারণ নির্বাচন এবং আবারো গণভোট হতে পারে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা।

এ অবস্থায় ক্ষমতাসীন কনজারভেটিভ দলেই থেরেসা এতটাই কোণঠাসা হয়ে পড়েছেন যে, আস্থা ভোটের মধ্য দিয়ে তাকে যেতে হতে পারে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। তবে এমন অবস্থাতেও ব্রেক্সিটের খসড়া চুক্তি থেকে সরে আসার বিষয়ে নমনীয় হননি ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী। নেতৃত্ব নিয়ে চরম অনিশ্চয়তার মধ্যেই গত শুক্রবার সকালে ব্রিটিশ রেডিও স্টেশন এলবিসিতে দেশের মানুষের বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর দেন। এ সময় তিনি খসড়ার পক্ষে অবস্থান নিয়ে বলেন, এই চুক্তি যুক্তরাজ্যের জন্য ইতিবাচক। তবে আলোচনার মধ্য দিয়ে পথ বের করার সুযোগ তাদের হাতে রয়েছে বলেও তিনি মনে করেন। এর আগে গত বৃহস্পতিবার বিকালে এক সংবাদ সম্মেলনে থেরেসা মে জানান, এর শেষ না দেখে হাল ছাড়বেন না তিনি।

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads