• মঙ্গলবার, ২৩ এপ্রিল ২০২৪, ১০ বৈশাখ ১৪২৯
হামলাকারী কে কেন হামলা?

নিউজিল্যান্ডের ক্রাইস্টচার্চ শহরে অবস্থি আল নূর মসজিদ যেখানে গতাক‍াল হামলাকারী নারকীয় ধংসযজ্ঞ চালায়

ছবি : সংগৃহীত

বিদেশ

ক্রাইস্টচার্চ ট্রাজিডি

হামলাকারী কে কেন হামলা?

  • অনলাইন ডেস্ক
  • প্রকাশিত ১৬ মার্চ ২০১৯

কানে হেডফোনে বাজছে গান। মাথায় গো প্রো ক্যামেরা। তাতেই ধরা পড়েছে গতকাল নিউজিল্যান্ডের ক্রাইস্টচার্চ শহরের আল নূর মসজিদের নারকীয়তার দৃশ্য। অনলাইনে ছড়িয়ে পড়া একটি ভিডিওতে দেখা গেছে, গাড়ির পেছনে রাখা স্বয়ংক্রিয় শটগান ও রাইফেল। এর মধ্যে দুটি অস্ত্র হাতে নেয় হামলাকারী। সেটা নিয়েই হেঁটে হেঁটে প্রধান ফটক দিয়ে মসজিদ প্রাঙ্গণে  ঢোকে। এ সময় মসজিদের ভেতরে প্রবেশ গেটের সামনে দাঁড়িয়েছিলেন একজন। প্রথমে তাকে গুলি করে হত্যা করা হয়। গেটের সামনেই পড়ে যায় লাশ। এরপর ভেতর ডুকে নির্বিচারে গুলি চালাতে থাকে হামলাকারী। গুলিতে মানুষের লাশ পড়তে থাকে। বাঁচার জন্য আত্মচিৎকার করতে থাকে অনেকে। মারা যাওয়ার আগে গোঙানির আওয়াজ শোনা যায়। গুলি শেষ হয়ে গেলে আবারো গুলি লোড করে হামলাকারী। ঘুরে ঘুরে লাশের ওপরও গুলি চালাতে থাকে। গাড়ি নিয়ে রাস্তায় উঠে সেখানেও নির্বিচারে গুলি চালায়। শুক্রবার জুমার নামাজ আদায়রত মুসল্লিদের ওপর ওই হামলায় এখন পর্যন্ত ৪৯ জন মারা যাওয়ার খবর পাওয়া গেছে।

গুলি করার সময় সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে লাইভে ছিল হামলাকারী। ১৭ মিনিট ধরে ওই হামলার লাইভ ভিডিও প্রচারিত হয়। তার অস্ত্রগুলোর ওপরে সাদা রঙে কিছু লেখাও ছিল।

কিন্তু প্রশ্ন উঠছে নির্বিচারে গুলি চালিয়ে এভাবে মানুষ হত্যাকারী ব্যক্তিটি আসলে কে? কেনই বা  সে এমনটি করল?

দ্য টেলিগ্রাফের খবরে বলা হয়, হামলাকারী নিজেকে ব্রেনটন ট্যারেন্ট বলে পরিচয় দিয়েছে।  সে অস্ট্রেলিয়ার নাগরিক। ২৮ বছর বয়সি একজন শ্বেতাঙ্গ। অস্ট্রেলিয়ার প্রধানমন্ত্রী স্কট মরিসনের বরাত দিয়ে বার্তা সংস্থা এএফপি জানায়, হামলাকারী অস্ট্রেলিয়ায় জন্ম নেওয়া নাগরিক।  সে কট্টর ডানপন্থি।

এক্সপ্রেস নামে নিউজিল্যান্ডের একটি গণমাধ্যমে বলা হয়, ওই হামলাকারী অস্ট্রেলিয়া থেকে এসেছে। দুই বছর ধরে সে এ হামলার পরিকল্পনা করছে। হামলাকারী জানিয়েছে, ইউরোপের দেশগুলোতে বিদেশি হামলাকারীদের বিরুদ্ধে প্রতিশোধপরায়ণ হয়ে এ হামলার পরিকল্পনা করে সে।

হামলার আগে টুইটারে দীর্ঘ একটি ইশতেহার আপলোড করে ওই হামলাকারী। সেখানে সে এই হামলাকে সন্ত্রাসী হামলা বলে দাবি করে। এ ছাড়া অভিবাসনের বিরুদ্ধে অবস্থানের কথা জানায়। তাই নিজেকে ডোনাল্ড ট্রাম্পের সমর্থক বলে উল্লেখ করে।

অভিবাসীবিদ্বেষী এ হামলাকারী তার ইশতেহারে বলেছে, হামলা করে সে অভিবাসীদের দেখাতে চায় যে, আমাদের ভূমি কখনো তাদের ভূমি হবে না। যতক্ষণ শ্বেতাঙ্গরা জীবিত থাকবে।

সে আরো লিখেছে, সে মুসলমান এবং ধর্মত্যাগীদের ঘৃণা করে। ধর্মত্যাগকারীদের সে রক্তের সঙ্গে প্রতারণাকারী হিসেবে উল্লেখ করে।

নিজের লেখা ওই ইশতেহারে ব্রেনটন জানায়, সে নিম্নবিত্ত শ্রমজীবী পরিবারে জন্মগ্রহণ করে। নিজের পরিবারের লোকজনের ভবিষ্যৎ নিশ্চিতের জন্য পদক্ষেপ গ্রহণের সিদ্ধান্ত নিয়েছিল। তাই ইউরোপের মাটিতে সরাসরি অভিবাসীদের সংখ্যা কমাতেই  সে এ হামলা চালিয়েছে। একই সঙ্গে ইসলামপন্থি জঙ্গিদের প্রতি ক্ষোভ প্রকাশ করেছে।

হামলাকারী বলে, আমি ২০১১ সালে নরওয়ের ওসলোতে ৭৭ জনকে হত্যাকারী অ্যান্ডারর্স ব্রেইভিকসহ অন্যান্য বন্দুক হামলাকারীদের কাছ থেকে অনুপ্রাণিত হয়েছি। এছাড়া ডায়লান রুফসহ আরো অনেকের লেখা আমি পড়েছি। তবে নাইট জাস্টিসিয়ার ব্রেইভিকের কাছ থেকেই হামলার উৎসাহ পেয়েছি।

এ হামলার ঘটনায় সে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের উগ্র সমর্থক ক্যানডিস ওউনসের কাছ থেকে অনুপ্রাণিত হওয়ার কথাও জানিয়েছে।

এদিকে পুলিশের দাবি, তারা হামলাকারীকে আটক করতে পেরেছে। তার বিরুদ্ধে হত্যার অভিযোগ আনা হয়েছে। তাকে আজ শনিবার আদালতে উপস্থিত করা হবে।

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads